ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন : কেমন ছিল ছাত্রসংগঠনগুলোর ভূমিকা - মোঃ ইয়াছিন আলী

Home Page » মুক্তমত » ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন : কেমন ছিল ছাত্রসংগঠনগুলোর ভূমিকা - মোঃ ইয়াছিন আলী
সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০২০



ফাইল ছবি
সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্ররাজনীতিতে কলঙ্ক লেপন করেছে কিছু ঘটনা। ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাদের দ্বারা একই সংগঠনের কর্মী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে ঘটনার শুরু হলেও পরবর্তীতে সিলেটের এমসি কলেজসহ বিভিন্ন ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ কর্মীদের নাম এসেছে। যদিও দীর্ঘ কয়েকবছর ধরেই সিলেটের এমসি কলেজে ছাত্রলীগের কোন কমিটি ছিলনা। তবে নির্যাতনকারী যেই হোক সবগুলো ঘটনার ক্ষেত্রে একটা বিষয় কাজ করেছে সেটা হলো পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা। আর এই পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা আগলে রেখেছে সব ছাত্রসংগঠনগুলো। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়া উঠা ছাত্র অধিকার পরিষদ সরকারের বিরোধিতার মেশিনে পরিণত হয়েছে। যার ফলে স্বভাবতই তাদের উপর ক্ষোভ ছিল সরকারের। কিন্তু ঢাবি শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনাকে সরকারের সাজানো বলে চালাতে গিয়ে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারেন তারা। আর একাজে সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব জড়িত; যা ছিল অত্যন্ত লজ্জাজনক। অন্যদিকে ছাত্রলীগ করোনার সময়ে মানবিক ও সামাজিক দায়িত্ব পালন করে সুনাম অর্জন করলেও কিছু নেতিবাচক ঘটনাও ঘটেছে। তবে এক্ষেত্রে ছাত্রলীগ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নিয়েছে এবং সকল অপরাধীর শাস্তির জন্য আন্দোলন করছে। ঠিক সেই মূহুর্তে নামে শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা বলা সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদ নিজের দলের অপরাধীদের বাঁচাতে আন্দোলন করেছে। অন্যদিকে দেশব্যাপী ধর্ষণের ঘটনায় একসময়ে দাপট দেখানো সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আন্দোলন সংগ্রামে সোচ্চার থাকলেও ঢাবি শিক্ষার্থী নির্যাতনের ব্যাপারে তারা নিরব থেকেছে; এখানে তাদের নীতি ছিল সরকারী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের দ্বারা নির্যাতনের শিকারের বিরুদ্ধেই তারা লড়বে, বাকীদের বিরুদ্ধে নয়। আর বাম ছাত্রসংগঠন গুলোও ছাত্রলীগ বিরোধিতার জন্যই শুধু এমসি কলেজসহ সরকারী দলের অপরাধীদের ঘটনা নিয়ে সোচ্চার ছিল; ঢাবি শিক্ষার্থী নির্যাতনের বিষয়ে ছিল নীরব দর্শক। এছাড়া অন্য ইসলামী ছাত্রসংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও নারী মুক্তির আন্দোলনে, নারীর অবাধ চলাচলের ক্ষেত্রে তাদের কর্মসূচি বাধা স্বরুপ ছিল। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ফাঁয়দা লুটতে চেষ্টা করেছে সরকার বিরোধি জোট; আর এর প্রধান ভূমিকায় ছিল ছাত্র অধিকার পরিষদ ও সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা হওয়ার অপেক্ষায় থাকা যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামাত-শিবির। আর ঠিক সেই মূহুর্তেই যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু তনয়া দেশরত্ন শেখ হাসিনা। ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের আইন প্রণয়নের মধ্যে দিয়ে যেমন তিনি অপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করেন; তেমনি ভাবে সমস্ত চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের বেঁড়াজাল ছিন্নবিচ্ছিন করে দেন। বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার মাধ্যমে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তির আইন প্রণয়নের ফলে রাজনৈতিক ভাবে লাভবান হয় আওয়ামী লীগ ও তাদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ। আর সমস্ত ধর্ষণের ঘটনাকে সরকারের উপর চাঁপাতে গিয়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সরকার বিরোধিতারা।

লেখক : মোঃ ইয়াছিন আলী
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪৬:৩৩   ৬১৯ বার পঠিত   #  #  #




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

মুক্তমত’র আরও খবর


পাণ্ডুলিপি প্রকাশনের বাইশটি বছর : সোনালি অভিযাত্রায় স্বর্ণালি পালক মোঃ আব্দুল মুনিম জাহেদী (ক্যারল)
দেশ ছাড়ছেন, তবু রাশিয়ানরা সেনাবাহিনীতে যোগ দিচ্ছে না ?
স্বামীজীর শিকাগো গমন - দুর্গম ও নাটকীয় এক অভিযাত্রা: শেষ পর্ব- স্বপন কুমার চক্রবর্তী
স্বামীজীর শিকাগো গমন - দুর্গম ও নাটকীয় এক অভিযাত্রা: পর্ব-২: স্বপন চক্রবর্তী
স্বামীজীর শিকাগো গমন - দুর্গম ও নাটকীয় এক অভিযাত্রা -স্বপন চক্রবর্তী
১৫ হাজার রুশ সেনার মৃত্যু: উইলিয়াম বার্নস
প্রধানমন্ত্রী পুত্র-কন্যা সহ সেতু পারি দিয়ে গোপালগঞ্জ গেলেন
ঐতিহাসিক ৬ দফা ছিল বাঙালির মুক্তির সনদ: প্রধানমন্ত্রী
শনিবার দেশে আনা হচ্ছে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর লাশ
জাতীয় কবি কাজী নজরুলের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী

আর্কাইভ