গত ৮ আগস্ট, শনিবার বাংলাদেশ ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয় অনলাইন ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রাম ‘বাংলাদেশ ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ ভলিন্টিয়ার পরিচিতি পর্ব ২০২০’। ২০১৭ সাল থেকেই বাংলাদেশ ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ তরুন প্রজন্মের সার্বিক আত্মউন্নয়ন, সামাজিক কার্যক্রম এর উদ্দেশ্যে ‘ভলিন্টিয়ার রিক্রুটমেন্ট’ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে৷ প্রতিবছর কিছু আত্মনিবেদিত প্রাণ তরুন এই সংগঠন যুক্ত হয়ে সংগঠনকে আরও সক্রিয় করে তুলছে। ২০২০ সালে করোনা মহামারীর পরিস্থিতিতেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। অনলাইন এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ কার্যক্রম সফলতার সঙ্গে সম্পূর্ণ করছে বাংলাদেশ ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ। তার ধারাবাহিকতাই আজ এই অনলাইন ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের মধ্যমণি ছিল নব-নবনিযুক্ত ভলিন্টিয়ারবৃন্দ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয় বাংলাদেশ ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ এর এক্সিউটিভ কমিটির সদস্যদের স্বাগত বক্তব্যর মাধ্যমে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বক্তব্য পেশ করেন ‘বি ওয়াই আই ‘-এর মডারেটর শেখ শামস মোরসালিন।তিনি তার বক্তব্যে,সংঘটনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে নবীণদেরকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
এরপর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাবের উবায়েদ তার বক্তব্যে, এই সংঘটন প্রতিষ্ঠার পটভূমি বর্ণনা করেন।বি ওয়াই আই কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজের বিবরণ তুলে ধরেন তিনি।যার মধ্যে ছিলো,”Be the change, Humanitarian Aid,Clean & Green School সহ আরো অনেক গুলো সফল প্রজেক্ট।
বক্তব্যের প্রারম্ভিকে সকল বক্তাই আজকে বেগম ফজিলাতুন্নেসার ৯০তম জন্ম বার্ষিকির কথা স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রফেসর ড.আবদুল মাকসুদুল কামাল, সাবেক উপ-উপাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি ব্যক্তিগত সমস্যার কারনে উপস্থিত থাকতে পারেন নি তবে সকলকে শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়েছেন। এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রফেসর ড.সাদিকা হালিম, ডীন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার বক্তব্যে বলেন সমাজ ঘটনে ও সমাজের উন্নয়নে তরূণদের ভুমিকা অনস্বীকার্য এবং বাংলাদেশ ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ এর তরুনদের নিয়ে কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়েছেন৷ সর্বশেষ, জাতির জনক শেখ মুজিব এর রহমানের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে সকলকে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে একজন সৎ, সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। আরেকজন বিশেষ অতিথি
প্রফেসর ড.দেলওয়ার হোসেন,আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার বক্তব্যে যুব সমাজের কার্যক্রম, সমাজে তাঁদের ভূমিকা এবংযু্ব সমাজ কিভাবে একটি দেশকে পরিবর্তন করতে তাঁদের যুগপোযোগী উদ্যোগের মাধ্যমে এই বিষয়গুলো তীক্ষ্ণভাবে তুলে ধরেছেন তার বক্তব্যে।
অনুষ্ঠানে আরও সম্মানীয় অতিথি উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে সিএম তোফায়েল সামি,সাবেক সভাপতি জালালাবাদ এসোসিয়েশন তাঁর বক্তব্যে করোনা পরবর্তী সময়ে কিভাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করতে পারে, সে সম্পর্কে দিক-নিদের্শনা প্রদান করেন। পর্যায়ক্রমে, প্রশ্নোত্তর পর্বে উপস্থিত ছিলেন লিডারশীপ ডেভেলপমেন্ট ও টিচ ফর বাংলাদেশ এর ব্যবস্থাপক আলমীর আহসান আসিফ।ভলিন্টিয়ারিং ছাত্রজীবনে কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ,কি কি প্রভাব ফেলে, এর প্রয়োজনীয়তা ইত্যাদি বিষয় সুস্পষ্ট ভাবে আলোচনা করেন। সবচেয়ে আকর্ষনীয় অংশ ছিল আহসান রনি স্যারের বক্তব্যে যিনি বাংলাদেশকে সবুজ করার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন এবং তিনি চান BYI এর ভলান্টিয়াররা এই কাজে এগিয়ে আসুক। মো.মামুন মিয়া, প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ‘ইউনাইটেড ন্যাশনস ইয়ুথ এন্ড স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ’ তার বক্তব্যে ভলিন্টিয়ারিং এর মাধ্যমে অর্জিত বাস্তব অভিজ্ঞতা পরবর্তী পেশাগত কিভাবে জীবনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে সেটি ব্যাখা করেন। এর সাথে একজন মেন্টর ঠিক করতে হবে যার দিক নির্দেশনাই পারবে BYI এর প্রজেক্টগুলোর সত্যিকারে রুপ দিতে। অতিথিদের মধ্য শেষ বক্তব্য রাখেন মো. রিয়াজুল করিম, প্রতিষ্ঠাতা ‘এডুকেশন পার্লামেন্ট’ । তিনি তার বক্তব্যে ভিশন, মিশন, গোল এবং বাংলাদেশ ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ এর মাধ্যমে ভলিন্টিয়াররা যুক্ত থেকে কিভাবে তাঁদের দক্ষতা উন্নয়ন করতে পারবে ইত্যাদি বিষয়ে দিক -নির্দেশনা প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের সার্বিক সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশে ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ এক্সিউটিভ কমিটির সদস্যগণ।
প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টার আলোচনা সমাপ্তি ঘটে সভাপতি জাবেদ উবায়েদের বক্তব্যের মাধ্যমে।
অনেকগুলো সঠিক দিক নির্দেশনা আর বাস্তবমুখী বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয় এত সুন্দর আয়োজন।যা ভলেন্টিয়ারদের জন্য পথচলার পাথেয় হয়ে থাকবে৷ বাংলাদেশ ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ এরকম ভবিষ্যতে ভলিন্টিয়ারদের জন্য এমন আরো অনলাইন সেশন আয়োজন করার আশা রাখে।
বাংলাদেশ সময়: ০:০৯:৪৪ ৬৪২ বার পঠিত