কাজী আবদুল্লাহ, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি বঙ্গ-নিউজঃ ১০১ একরের ক্যাম্পাস “নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।” বাংলাদেশের দক্ষিণে উপকূলীয় অঞ্চল নোয়াখালী জেলায় এটি অবস্থিত। ১৯৯৮ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের ১২টি জেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যার মধ্যে নোবিপ্রবি অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তীতে ২০০১ সালের ১৫ জুলাই ‘নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০১’ পাস হয়, ২০০৩ সালের ২৫ আগস্ট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে সেই আইন কার্যকর হয় এবং ২০০৫ সালের ২৪ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে এর নির্মাণ কাজ শুরু করেন।
২০০৬ সালের ২২ জুন দেশের ২৭তম পাবলিক এবং ৫ম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করেছিল নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।এই বিশ্ববিদ্যালয়কে উপকূলীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা (Coastal University) বলা হয়। প্রতি বছর (১৫ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করা হয়।
শুরুতে মাত্র ৪টি বিভাগ, ১৩ জন শিক্ষক, ১৮০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও মাত্র ১৪ বছরের ব্যবধানে নোবিপ্রবিতে বর্তমানে ৬টি ফ্যাকাল্টি, ২টি ইনস্টিটিউট ও ৩০টি বিভাগ চালু রয়েছে। সেশনজটমুক্ত পরিবেশে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার শিক্ষার্থীর পাঠদানে নিয়োজিত আছেন প্রায় ৩০০ জন শিক্ষক।
বর্তমানে ৪ লাখ ৩২ হাজার স্কয়ার ফিটের ২০ তলা বিল্ডিংবিশিষ্ট দেশের অন্যতম বৃহত্তম একাডেমিক ল্যাব ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে নোবিপ্রবিতে। নির্মাণকাজ চলছে সমৃদ্ধ মেডিকেল সেন্টার, মসজিদ ভবন এবং উপাসনালয়সহ আরও প্রয়োজনীয় নানান অবকাঠামোর। শেষ হয়েছে অন্যতম নান্দনিক বিশাল দুটি ছাত্রী হল তৈরির কাজ।
গবেষণাতেও সমৃদ্ধি অর্জনে লক্ষ্যে প্রক্রিয়াধীন পরিকল্পনায় আছে, ক্যাম্পাসের অদূরেই ৮৭৫ একর জায়গাজুড়ে বাংলাদেশের একমাত্র ‘আন্তর্জাতিক সমুদ্র ও সামুদ্রিক সম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট’ তৈরি।
১০১ একরের এই ক্যাম্পাসজুড়ে রয়েছে হাজারো গল্প। কেহ বন্ধুদের সাথে নিয়ে নীলদিঘির ঘাটে আড্ডা দিয়ে সময় পার করে অনেকে আবার ক্লাসের ফাঁকে শান্তিনীকেতনে বন্ধুদের সাথে নিয়ে চা চক্র আর গল্পে ব্যস্ত থাকে। কেহ আবার বই নিয়ে সময় পর করছে সেন্ট্রাল লাইবেরীতে। অনেকে আবার সেন্ট্রাল মাঠে ক্রিকেট,ফুটবল খেলা নিয়ে ব্যস্ত। কেহ আবার সময় পার করে টঙে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে। মহামারির দিনগুলোয় ক্যাম্পাস এখন আর শিক্ষার্থীদের এমন সরব গল্পে মুখরিত নয়। তিন মাস পেরিয়ে আসা ছুটি আর কত দিনে গড়াবে কেউ বলতে পারে না। তবু জাতির এই ক্রান্তিকালে নোবিপ্রবি পালন করছে গুরুত্বপূর্ণ এক ভূমিকা। গত মাসের শুরু থেকে দেশের দ্বিতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগে চলছে পিসিআর মেশিনের মাধ্যমে করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা। বিশ্ববিদ্যালয়টিরই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে প্রতিদিনই প্রায় ২৫০টি নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এমন করেই নানান সময়ে দেশের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছে এই বিদ্যাপীঠ। এই বিশ্ববিদ্যালয় উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের ভালবাসা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের (শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের) আন্তরিকতা বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষায় একটি অন্যতম বিদ্যাপীঠ হিসেবে ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:০৭:৪৭ ৬৪০ বার পঠিত #দিবস #নোবিপ্রবি #শিক্ষা