বঙ্গনিউজ ডটকমঃ
দেশের পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মহাজোট-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থীদের শোচনীয় পরাজয় আগামী সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের আগাম বিদায়ঘণ্টা বাজিয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। বিশেষত, গাজীপুরকে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় ‘দুর্জয় ঘাঁটি’ বিবেচনা করা হতো; তাদের মেয়র পদপ্রার্থীর ‘ক্লিন ইমেজ’ও ছিল। তা সত্ত্বেও লক্ষাধিক ভোটে তাঁর পরাজয় জানান দিয়ে গেল, ভোটাররা তাঁকে নয়, প্রত্যাখ্যান করছে আওয়ামী লীগকে। বরিশাল ছাড়া বাকি চারটি সিটি করপোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের মার্জিন ৬০: ৪০। আগামী কয়েক মাসে হাওয়া উল্টে দিয়ে সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ।
ক্ষমতাসীনদের জনপ্রিয়তায় ধসের অন্যতম কারণ দুর্নীতি ও লুটপাট। আওয়ামী লীগের ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারের নাম ছিল ‘দিনবদলের সনদ’, যাতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছিল। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপগুলো প্রচণ্ড আলোড়ন সৃষ্টি করার পর এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে আওয়ামী লীগ সচেষ্ট থাকবে—জনমনে এ রকম প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছিল। প্রত্যাশা বেশি থাকায় এখন হতাশাও বেশি। ক্রমেই জনগণ বুঝতে পারছিল, সরকার হাসান মশহুদ চৌধূরীর নেতৃত্বাধীন গতিশীল দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) প্রায় অকার্যকর করে রেখেছে। গত সাড়ে চার বছরে ‘স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন’ আবারও বশংবদ অধুনালুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরোর রূপ ধারণ করেছে। দুদকের কার্যকর শাস্তি প্রদানের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাবিত আইনি সংশোধনী সাড়ে চার বছরেও সংসদে উত্থাপন করা হলো না। বিচারাধীন একটি দুর্নীতির মামলাও বিচার-প্রক্রিয়ার ধাপগুলো সফলভাবে অতিক্রম করতে পারেনি। একজন দুর্নীতিবাজও দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজা খাটেনি। দুদককে শুধু ‘নখ-দন্তহীন ব্যাঘ্র’ নয়, সার্কাসের পোষ মানা বাঘে রূপান্তরিত করার জন্য একদিন ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে শেখ হাসিনার সরকারকে। সারা বিশ্বের কাছে যখন সৈয়দ আবুল হোসেনের ‘দুর্নীতির ষড়যন্ত্র’ বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ বলে মনে হয়েছে, তখন শেখ হাসিনা তাঁকে ‘দেশপ্রেমিক’ অভিধায় অভিষিক্ত করেছেন। আর দ্বিতীয়বার পদ্মা সেতুর অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাংককে ডেকে আনা ছিল বড় ভুল; এর মাধ্যমে তাদের ব্ল্যাকমেল করার সুযোগ বেড়ে গিয়েছিল। তারপর যখন তদন্ত প্যানেলের কথামতো সৈয়দ আবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে রাজি হলো না দুদক বরং সরকার আগ বাড়িয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চলমান প্রকল্প অর্থায়ন-প্রক্রিয়া থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিল, তখন সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা শূন্যের কোঠায় নেমে গেল। জনমনে ধারণা জন্মেছে যে, একজন আবুল হোসেনকে রক্ষা করার জেদ করতে গিয়ে পুরো পদ্মা সেতু প্রকল্পটিকেই পদ্মা নদীতে ডুবিয়ে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা।
শুধু পদ্মা সেতু নয়, গত সাড়ে চার বছরের বহু প্রকল্পেই দুর্নীতির অভিযোগ আছে। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, দলীয়করণ, আত্মীয়করণ, আঞ্চলিকতা—প্রতিটি ব্যাপারেই বিএনপি-জামায়াতের সরকারকে হারানোর জন্য যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে সরকার। রাজনৈতিক দুর্নীতির প্রসারে বেড়েছে আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতিও। কিন্তু এর বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ নেই। কেউ বিবেকের তাড়নায় সোচ্চার হলে তাঁদেরও চরিত্র হননের চেষ্টা করা হয়। বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান যখন বিবেকতাড়িত হয়ে কলাম লিখলেন, ‘দেশ আজ বাজিকরদের দখলে’, তখন ওই সাবধানবাণী আমলে না নিয়ে বরং তাঁর চরিত্র হননে মেতে উঠেছিলেন কয়েকজন ফরমায়েশি কলামিস্ট। এই আত্মঘাতী তৎপরতা আর কত দিন চালানো হবে? ভুল স্বীকার করার মানসিকতা কখন অর্জন করবেন নেত্রীরা? জনগণের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ এখন নৌকাকে ডুবিয়ে দিচ্ছে। একই সঙ্গে ডুবে যাচ্ছে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন।
সাম্প্রতিক নির্বাচনী বিপর্যয়ের জন্য ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক অপশক্তিগুলোর প্রবল শক্তিসঞ্চয়কেও দায়ী করছেন বিশ্লেষকেরা। আমি বিষয়টিকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করব। হেফাজতে ইসলামকে ‘বিড়াল থেকে বাঘ’ বানিয়েছে সরকারের কয়েকটি ভুল সিদ্ধান্ত। দেওবন্দি-ওহাবি ফেরকার সর্ববৃহৎ কওমি মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিত হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতে ইসলামের জন্ম হয়েছিল ২০১০ সালে, শিক্ষানীতি ঘোষণার পরপর। উদ্দেশ্য ছিল কওমি মাদ্রাসাগুলোকে নতুন এই শিক্ষানীতির আওতার বাইরে রাখতে সরকারকে বাধ্য করা। ওই প্রাথমিক দাবি মেনে নিয়ে সরকার আল্লামা শফীকে চেয়ারম্যান করে ‘বেফাক’ নামের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিল কওমি মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষাব্যবস্থার যুগোপযোগী সংস্কারের সুপারিশ প্রণয়নের উদ্দেশ্যে। দীর্ঘ তিন বছরে বেফাক কোনো সুপারিশ প্রণয়ন করেনি; বরং সরকারের নারীনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে কওমি মাদ্রাসাগুলো এবং হেফাজতে ইসলাম। শাহবাগের তরুণ প্রজন্মের গণজাগরণ মঞ্চের মধ্যে আমার দেশ পত্রিকার মাহমুদুর রহমান ‘নাস্তিক ব্লগার’ আবিষ্কারের পর বিএনপি-জামায়াতের প্রচারমাধ্যমগুলো মঞ্চের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে থাকে। হেফাজতে ইসলাম এ সুযোগে হুংকার দিয়ে জেগে উঠল ‘নাস্তিক ব্লগারদের’ ফাঁসির দাবিতে। ওই সময়ে গণজাগরণ মঞ্চ তাদের কার্যক্রম সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার কর্মসূচি নিয়ে চট্টগ্রামে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়। সঙ্গে সঙ্গে হেফাজতে ইসলাম গণজাগরণ মঞ্চকে চট্টগ্রামে আসতে দেবে না মর্মে ঘোষণা দেয়। সরকারের উচিত ছিল হেফাজতিদের ওই ঔদ্ধত্যপূর্ণ ঘোষণা মোকাবিলা করা। তা না করে সরকারি দলের পক্ষ থেকে ‘হুজুরের দরবারে’ দেনদরবার করে এবং চট্টগ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকারীরা গাড়িবহর নিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে রওনা হলে ওই গাড়িবহরকে আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষ ফেনীতে আটকে দেয়। আমি মনে করি, সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে গণজাগরণ মঞ্চের অগ্রযাত্রা থেমে যায় এবং হেফাজতে ইসলাম নামের সংগঠনটি আশকারা পেয়ে যায়।
বিএনপি, জামায়াত-শিবির এবং জাতীয় পার্টির সম্মিলিত শক্তি হেফাজতে ইসলামকে দিয়ে গত ৫ মে ঢাকা শহরে তাণ্ডব ঘটায়। হেফাজতে ইসলাম ও জামায়াত-শিবির একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এদের সম্মিলিত আর্থিক ও সাংগঠনিক শক্তি এখন ঐক্যবদ্ধভাবে মহাজোটকে পর্যুদস্ত করার জন্য মাঠে নেমেছে। পাঁচটি সিটি নির্বাচনেই হেফাজত ও জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা ঘরে ঘরে ধরনা দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালালেও ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে তার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হয়নি।
আমার মতে, নির্বাচনী বিপর্যয়ের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি জোগান দিয়েছে অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে পরিচালিত প্রচারণা ও কর্মকাণ্ড, যার মধ্যে ছিল গ্রামীণ ব্যাংককে ১৯ টুকরা করার পরিকল্পনা। আমরা যাঁরা বিষয়টি জানি, তাঁরা এই অপ্রয়োজনীয় ইস্যুটি থেকে সরকারপক্ষকে সরিয়ে আনতে প্রাণান্তকর প্রয়াস চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছি। দেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এই চরিত্রহনন প্রয়াসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং বিদেশেও সরকারের অবস্থান তেমন কারও কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। সারা বিশ্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সবচেয়ে বন্ধুহারা করেছে ড. ইউনূস উপাখ্যানটি।
কিন্তু নির্বাচনী বিপর্যয়ের পরও সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে বলে মনে হয় না। অবিলম্বে ইউনূস-ইস্যুকে আগামী নির্বাচনের প্রচার-অপপ্রচারের তালিকা থেকে সরিয়ে না দিলে মহাজোট বিপর্যয় এড়াতে পারবে না। শেখ হাসিনার একগুঁয়েমির কারণে মৌলবাদী শক্তির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা বিএনপি সহজেই একটা তোফা পেয়ে গেল বৈকি।
নির্বাচনী বিপর্যয়ের আরেকটি মারাত্মক উপাদান জুগিয়েছে ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সশস্ত্র মাস্তানি, টেন্ডারবাজি ও দখলবাজি। বিশ্বজিৎ হত্যার ভিডিওচিত্রটি যতবার মিডিয়ায় দেখানো হবে, ততবারই দর্শক আওয়ামী লীগকে ধিক্কার দেবে, যতবার সাভারের রানা প্লাজা ধসের অসহায় শিকারে পরিণত হওয়া মানুষগুলোর ছবি এবং তাঁদের আত্মীয়স্বজনের আহাজারি ও কান্না মিডিয়ায় দেখানো হবে, ততবারই দর্শকেরা যুবলীগের সোহেল রানার কুকীর্তিগুলো স্মরণ করে শিউরে উঠবে। চট্টগ্রামে রেলওয়ের টেন্ডার দখলের গোলাগুলির মধ্যে পড়ে কিশোরের প্রাণহানির স্মৃতিও তাড়াতাড়ি মুছে ফেলা তো যাবে না। এ ধরনের অসংখ্য তাণ্ডবের খবর আওয়ামী লীগকে তাড়া করে চলেছে।
এসব অপকীর্তির নিচে শেখ হাসিনার সরকারের সুকৃতি ও সাফল্যগুলো চাপা পড়ে গেছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী ৪২ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমেই শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পালে হাওয়া লেগেছে। দেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জন করেছে। একটি যুগোপযোগী শিক্ষানীতির বাস্তবায়ন সফলভাবে এগিয়ে চলেছে। ১৯৮০-৮১ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ/ অনুদাননির্ভরতা ছিল জিডিপির ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ওই নির্ভরতা জিডিপির ১ শতাংশেরও নিচে নেমে এসেছে। দেশের ব্যালেন্স অব পেমেন্টসের চলতি হিসাবে গত অর্থবছর তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের দিন দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল মাত্র তিন হাজার ২৬৮ মেগাওয়াট, ২০ জুলাই ২০১৩ তারিখে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৬৭৫ মেগাওয়াটে। মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্যাপাসিটি এই সাড়ে চার বছরে চার হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট থেকে বেড়ে আট হাজার ৫৩৭ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। বর্তমান সরকারের বিদ্যুৎ-সম্পর্কিত কিছু ভুল সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও তাদের সাফল্যটা প্রণিধানযোগ্য। ২০০১-০৬ মেয়াদে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা মোটেও বাড়াতে পারেনি, যাকে ক্ষমার অযোগ্য ব্যর্থতা বলে মনে করি। জনগণের দারিদ্র্য উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে এবং গত সাড়ে চার বছরে দারিদ্র্য হ্রাসের গতি অনেকখানি ত্বরান্বিত হয়ে বর্তমানে তা ২৭ শতাংশেরও নিচে নেমে গেছে। ২০০৫ সালে ওই হার ছিল ৪০ শতাংশ। গত চারটি অর্থবছরেই জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের বেশি ছিল, অথচ সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে মন্দাবস্থা বিরাজ করছে। ওপরের পরিসংখ্যানগুলো সাক্ষ্য দিচ্ছে, স্বাধীন বাংলাদেশের ৪২ বছরের মধ্যে এখন দেশের অর্থনীতির অবস্থা স্বস্তিকর ও আশাব্যঞ্জক।
এ পর্যায়ে যে প্রশ্নটি যৌক্তিকভাবে ওঠা উচিত, তা হলো এত সব অর্থনৈতিক সাফল্য সত্ত্বেও মহাজোট সরকার জনগণ কর্তৃক এভাবে প্রত্যাখ্যানের মুখোমুখি হলো কেন? বিএনপি-জামায়াত জোটের ২০০১-০৬ মেয়াদের সরকার তো দুর্নীতি, দুঃশাসন ও জঙ্গিবাদ লালনকারী হিসেবে গণরোষের শিকার হয়ে ২০০৬ সালে ক্ষমতা ত্যাগ করেছিল এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে পর্যুদস্ত হয়েছিল। প্রশ্ন হলো, জনগণ কি ‘হাওয়া ভবনের’ অসহনীয় কর্মকাণ্ড ভুলে গেছে? জনগণ কি বাংলা ভাই-জেএমবির জঙ্গিবাদী খুনিদের তাণ্ডব ভুলে গেছে? নয়তো আবার কেন জঙ্গিবাদের মদদদাতাদেরই ক্ষমতায় আনতে চাইছে?
ওপরের প্রশ্নগুলোর সদুত্তর পাওয়া মুশকিল। আমার মতে, প্রধানমন্ত্রীর আক্রমণাত্মক কথাবার্তা, কথার সঙ্গে কাজের অমিল, অহেতুক ঝগড়াঝাঁটি ব্যক্তিগতভাবে তাঁকেই জনগণের কাছে অপ্রিয় ও অগ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। এ ধরনের সমালোচনা আওয়ামী লীগের অন্ধ সমর্থকেরা একেবারেই সহ্য করতে পারেন না জেনেও এই অপ্রিয় সত্যটি উচ্চারণ করছি এ কারণে যে, বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ ডুবলে আমরা সবাই আবার ডুবে যাব, বিএনপি-জামায়াতের কাছে আমরা সুশাসন আশা করি না।
দেশটা আবারও যাতে মৌলবাদী-জঙ্গিবাদীদের খপ্পরে না পড়ে, সে জন্য ক্ষমতাসীনদের ভুলগুলো সংশোধনের আশায় কঠিন সত্য কথাগুলো বলতেই হলো।
ড. মইনুল ইসলাম: অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি।
বাংলাদেশ সময়: ৫:০২:৩৮ ৪৭৯ বার পঠিত