বঙ্গ-নিউজ: করোনা ভাইরাসের মহামারী আক্রমণ বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দিয়েছ। এমন দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য মানুষ ছিল সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ আক্রান্ত। স্বাভাবিক জীবন যাত্রা স্থিমিত। উপায় খুঁজছে সকলে। কিন্তু নির্ভরযোগ্য কোন ঔষধের সন্ধান এখনো মিলেনি। হয়তো বেশীদিন অপেক্ষা করতে হবেনা, যেদিন বিজ্ঞান মানুষের জন্য আশার বাণী শোনাবে। চিকিৎসা বিজ্ঞান তৈরী করবে প্রয়োজনীয় ঔষধ। ইতিমধ্যে লকডাউনে মানুষের জীবন ও জীবিকার অনেক পরিবর্তনও হয়ে গেছে। দুই মাসের লকডাউন শেষে বেঁচে থাকার কায়দা-কানুন নতুন করে শিখতে হচ্ছে মানুষকে, সবার মধ্যেই কাজ করছে এক ধরনের আতঙ্ক।
বিশ্বের অন্য সব দেশের মত বাংলাদেশের মানুষও এখন মহামারী শুরুর আগের সেই স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরতে চাইছে। কিন্তু সেই পথে তাদের সামনে গভীর অনিশ্চয়তা। এই যাত্রায় দুঃখ আছে, সঙ্গে আছে আশাও।
এই অনিশ্চিত যাত্রায় উৎরাতে হলে বাংলাদেশের মানুষকে কী করতে হবে? এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি বর্ধন জং রানার মত জানতে চাওয়া হয়।
তার ভাষায়, জীবন বাঁচানো এবং জীবিকা বাঁচানো- এই দুইয়ের মধ্যে সতর্ক ভারসাম্য রক্ষাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ।
রানা বলছেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে জয় পেতে হলে দায়িত্ব নিতে হবে সরকার থেকে জনগণ-সবাইকে। লকডাউনের বিধিনিষেধ যেহেতু উঠে গেছে, এখন ব্যক্তিগত, সামাজিক ও জাতীয় পর্যায়ে সংক্রমণ রোধে আরও জোর দিতে হবে।
বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এই দেশ বাংলাদেশে প্রতি চারজনে একজন এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে। নজিরবিহীন এই জনস্বাস্থ্য সঙ্কটে এই দরিদ্র মানুষগুলোকে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া বাংলাদেশে এই মহামারীর প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। ফলে করোনাভাইরাস আরও বহু মানুষকে দারিদ্র্যসীমার নিচে ঠেলে দেবে বলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বর্ধন জং রানা বলেন, অনেক বেশি মানুষকে এখন বাইরে বের হতে হচ্ছে। তাদের জীবিকা যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে শারীরিক দূরত্ব রাখার নিয়ম আর কার্যকর করা যাবে বলে মনে হয় না।
জীবন-জীবিকার এই সঙ্কটে ধনী দেশগুলো তাদের নাগরিকদের জন্য যে মাত্রায় সহায়তার ব্যবস্থা করতে পারছে, ততটা করার সুযোগ বাংলাদেশের নেই। আর এই বাস্তবতা ভাইরাসের সঙ্গে বসাবাসের এই নতুন জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলবে বলে মনে করেন রানা।
বাংলাদেশ সরকার ৩০ মের পর পুরোমাত্রায় আর লকডাউন না রাখলেও কিছুক্ষেত্রে বিধিনিষেধ এখনও বহাল রয়েছে। আর দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তারও বেড়ে চলেছে, শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ছাড়িয়ে গেছে ৫৫ হাজার।
মহামারীর অভিঘাত মোকাবেলায় সরকার আর্থিক প্রণোদনা আর সামাজিক নিরাপত্তায় যে তহবিল ঘোষণা করেছে, তার আকার ইতোমধ্যে এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। টাকার এই অংক বাংলাদেশের জিডিপির ৩ দশমিক ৭ শতাংশের মত।
ভাইরাসের ধাক্কা সামাল দিতে সরকারকে ১.৬৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিতে হচ্ছে, যার মধ্যে ৭৩২ মিলিয়ন ডলার আসবে আইএমএফের কাছ থেকে।
করোনাভাইরাস মহামারী সরকারকে যেমন একদিকে কঠিন আর রূঢ় বাস্তবতার সামনে দাঁড় করিয়েছে, তেমনি এখন নাগরিকদের জীবন ও জীবিকার সমন্বয়ের চেষ্টাও আরেকটি বড় সঙ্কট হয়ে সামনে এসেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা রানা বলছেন, এ কাজ সত্যিই খুব কঠিন। মানুষ ব্যক্তিগত সুরক্ষার নিয়ম কতটা মানছে এবং মানুষকে তা মানাতে সরকার কতটা কী করতে পারছে- তার ওপরই নির্ভর করছে সব।
তার মতে, স্থানীয় পর্যায়ে এবং সামাজিকভাবে মানুষ যাতে সতর্কতাগুলো মেনে চলতে পারে, সরকারকে সে ব্যবস্থা নিতেই হবে। কিন্তু ভাইরাসের বিস্তার সীমিত রাখতে ব্যক্তিগত সচেতনতাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
“আপনি, আমি, আমরা সবাই যদি নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার চেষ্টা করি, নিজেদের পাশাপাশি অন্যদের সুরক্ষায় যেসব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হচ্ছে, সেগুলো যদি মেনে চলি, তাহলে ভাইরাসের ছড়ানোর সুযোগ থাকবে না।”
রানা বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির দিকটিই আগে দেখে। কিন্তু মানুষের জীবিকার প্রয়োজনেই যে এখন বিধিনিষেধ তুলতে হচ্ছে, সেটাও তারা বোঝেন।
বাংলাদেশে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৮ মার্চ, প্রথম মৃত্যু হয়েছিল ১৮ মার্চ। আর এখন মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭০৯ জন। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে লকডাউনের দুই মাস সময় ।
রানা বলছেন, কিছু বিধিনিষেধ তোলা হলেও এখন একটি অন্তর্বর্তী সময়ের মধ্য দিয়ে সবাইকে যেতে হবে।
“এ থেকে আর্থসামাজিকভাবে আমাদের কতটা সুবিধা হবে আর সংক্রমণের ঝুঁকি কতটা বাড়বে- সেই ভারসাম্য আমাদে রক্ষা করতে হবে খুব সতর্কতার সঙ্গে।”
গত কয়েক দিনে রেকর্ড রোগী শনাক্তের কথ তুলে ধরে তিনি বলেন, শারীরিক দূরত্বের নিয়ম যদি না মান হয়, তাতে সংক্রমণ বাড়বেই।
বাংলাদেশের মত বিশ্বের সব দেশকেই যে সেই ভারসাম্য বজায় রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, সে কথাও তিনি বলেন।
“সঙ্কট যত দীর্ঘায়িত হবে, মানুষের জীবিকা তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই ভারসাম্য কীভাবে আসবে তা নিয়ে জাতিসংঘের সবগুলো সংস্থাই উদ্বিগ্ন।”
ডিব্লিউএইচও যেমন রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলার বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছে, তেমনি যথাসম্ভব নিরাপদে এবং টেকসইভাবে কী করে অর্থনীতির চাকা সচল করা যায়, সে বিষয়ে সরকারগুলোকে পরামর্শ দিচ্ছে আইএলওর মত সংস্থা।
রানা বলেন, “জীবন বাঁচাতে, সেই সঙ্গে মানুষের জীবিকা বাঁচাতে বিশ্বের সব সরকারকেই এই সহায়তাটুকু আমরা করার চেষ্টা করছি।”
প্রতিদিনের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে রানা সেই স্বাস্থবিধিগুলোই মেনে চলতে বলছেন, যা শুরু থেকে বলে আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সরকারের স্বাস্থ্যবিভাগ।
“যদি আপনার দোকানে যাওয়ার দরকার হয়, অবশ্যই মাস্ক পরে নিন, সেই সঙ্গে হাত জীবাণুমুক্ত রাখুন। অন্যের সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলুন, স্পর্শ এড়িয়ে চলুন। ভিড়ের জায়গায় যাবেন না, জনসমাগম হয়- সেরকম কোনো আয়োজনও করবেন না। যোগাযোগ আর বৈঠকের কাজটা যদি ইন্টারনেটে করা যায়, সেটাই করুন।
“বেঁচে থাকার জন্য এবং আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ডগুলো সচল করার জন্য জীবনযাপনের নতুন এক নিয়মের সঙ্গে আমাদের অভ্যস্ত হতে হবে, সেই সঙ্গে ঝুঁকি কমানোর দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।”
রানা বলছেন, এই স্বাস্থ্যবিধিগুলো কেন মেনে চলা জরুরি, তা বুঝতে হবে সবাইকে, যাতে জীবনযাপনের সেই নতুন নিয়মে অভ্যস্থ হওয়া সবার জন্য সহজ হয়।
“সবাই যদি তা মেনে চলে, আমার মনে হয়, আমরা সঠিক পথেই এগোতে পারব।”
রানা বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীর শুরু থেকেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘ এবং অন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো সব দেশকে প্রস্তুতি নিতে সহযোগিতা করে আসছে।
“ডব্লিউএইচও যখনই ঘোষণা দিল যে আন্তর্জাতিকভাবে জনস্বাস্থ্যের জন্য এটা একটা জরুরি পরিস্থিতি, তখন থেকেই আমরা সরকারগুলোকে পরিস্থিতি সামাল দিতে সহায়তা করে যাচ্ছি।”
এই সহায়তার মধ্যে পিপিই আর টেস্টিং কিট সরবরাহ, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ, পরীক্ষা আর চিকিৎসার সক্ষমতা বৃদ্ধি, স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি সামাজিকভাবে মানুষকে সম্পৃক্ত করার মত বিষয়গুলো রয়েছে, যাতে সবাই পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে পারেন, প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক পদক্ষেপটি নিতে পারেন।
এর বাইরেও আক্রান্ত রোগীকে কোয়ারেন্টিনে রাখা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং ভাইরাসের বিস্তার রোধে অনুসরণীয় নীতিমালা ঠিক করে দেওয়ার কাজগুলোতে ডব্লিউএইচও সহযোগিতা দিয়ে আসছে বলে জানান রানা।
তিনি বলেন, সব দেশ যাতে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা উপকরণগুলো সংগ্রহ করতে পারে, সেজন্য আন্তর্জাতিক একটি সরবরাহ ব্যবস্থাও তৈরি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
কেন্দ্রীয় এই ব্যবস্থায় বিশ্ব সংস্থাগুলো তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে নিচ্ছে এবং প্রতিটি দেশ তাদের চাহিদা অনুযায়ী সেখান থেকে সংগ্রহ করতে পারছে।
কোনো দেশ স্থানীয়ভাবে এসব সুরক্ষা সামগ্রী উৎপাদন করতে চাইলে তার মান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও ডব্লিউএইচও সহযোগিতা দিচ্ছে বলে জানান তিনি।
সংক্রমণ বৃদ্ধির যে ধারা এখন চলছে, তা বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে কি না- সেই প্রশ্নে রানা বলেন, সরকার ইতোমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু পদক্ষেপ সেজন্য নিয়েছে।
“মার্চের মাঝামাঝি এখানে মাত্র একটা ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা সম্ভব ছিল। এখন সেখানে সারা দেশে ৫২টি ল্যাবে দিনে দশ হাজারের মত পরীক্ষা হচ্ছে।”
“শুধু নতুন ল্যাব চালু করে নয়, লোকবল, যন্ত্রপাতি আর সক্ষমতা বাড়িয়ে পুরনো ল্যাবগুলোতে আরও বেশি পরীক্ষা কীভাবে করা যায়, সেই পরিকল্পনাও হচ্ছে।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোনো কোনো ল্যাবে মাত্র ১৮০ বা ২০০ নমুনা পরীক্ষা হয় প্রতিদিন। এই সংখ্যা বাড়িয়ে দ্বিগুণ বা তিনগুণ করার চেষ্টা হচ্ছে, কারণ অনেক ল্যাব দিনে ৮০০ পরীক্ষাও করতে পারে।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এর আওতা আরও অনেক বাড়ানো দরকার মন্তব্য করে ডব্লিউিএইচও প্রতিনিধি বলেন, “আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে, এটা আরও বাড়বে। আর আমরা খুব ধীরে গ্রাফটা নিচের দিকে নামানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
“কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংটা যেন আমরা যত দ্রুত সম্ভব করতে পারি, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। যাদের সংক্রমণ ধরা পড়ছে, তাদের আইসোলেশনটা যেন ঠিকঠাক হয়। সেই সঙ্গে টেস্টিং আর চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা আমাদের বাড়াতে হবে। এই চারটা বিষয়ে আমাদের জোর দিয়ে দিয়ে যেতে হবে।”
পুরো বিশ্ব এখন এই মহামারী নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে, যা রানার মতে একটি ভালো দিক।
“সব বড় এবং ধনী দেশকে এখন একই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে, একই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ফলে সবাই এখন উত্তরণের সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করছে।”
বিজ্ঞানীরা এখন যত দ্রুত সম্ভব এ ভাইরাসের টিকা এবং ওষুধ তৈরির চেষ্টা করছেন, যাতে কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা সহজ হয়।
রানা বলেন, অনেক দেশ এই কাজে যুক্ত হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় টিকা বা ওষুধের পরীক্ষা হচ্ছে, স্বাস্থ্য খাতের বাইরেও অনেকে এই চেষ্টায় যোগ দিয়েছে। ফলে একটি ভালো খবর পাওয়ার বিষয়ে তিনি আশাবাদী।
এসব গবেষণা আর পরীক্ষার মধ্যে কোন ওষুধটি সবচেয়ে বেশি কার্যকর হতে পারে, সবচেয়ে কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আর সবচেয়ে ভালো ফল দিতে পারে- সেদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নজর রাখছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া কয়েকটি দেশকে নিয়েও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ ধরনের পরীক্ষার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিয়েছে, যার একটি গ্রুপে বাংলাদেশও যোগ দেওয়ার কথা ভাবছে বলে জানান রানা।
তিনি বলেন, “আসলে এই মুহূর্তে একসঙ্গে অনেক কাজ হচ্ছে। আমি আশাবাদী, আমরা নিশ্চয় কিছু করতে পারব।
“আপনি যদি আগের বড় প্রাদুর্ভাবগুলোর কথা স্মরণ করেন, ইবোলার কথাই যদি বলি, একটা টিকা আমরা কিন্তু তৈরি করতে পেরেছি। তবে তার আগেই বিভিন্ন কৌশল আমরা বের করতে পেরেছি, যা দিয়ে রোগের প্রকোপ কমিয়ে আনা যায়। সে বিষয়েও কাজ হচ্ছে এবং আমি খুবই আশাবাদী, আমরা সফল হবই।”
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির গিলিয়াডের ওষুধ রেমডেসিভির এখন বাংলাদেশেও কয়েকটি কোম্পানি তৈরি করছে। কোভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে এ ধরনের ওষুধ ব্যবহার ডব্লিউএইচও অনুমোদন করে কি না তা জানতে চাওয়া হয়েছিল রানার কাছে।
উত্তরে তিনি বলেন, “মূল ভাবনার বিষয়টা হল- যদি এটা কাজ না করে তখন কী হবে। বাজারে অন্য যেসব ওষুধ আছে, সেসব নিয়ে বিস্তার গবেষণা হয়েছে। সেসব ওষুধ ট্রায়ালের মধ্যে দিয়ে গেছে, সে বিষয়ে অনেক নিবন্ধ লেখা হয়েছে, সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং জটিলতার বিষয়গুলোও তাতে এসেছে।
“কিন্তু এই ওষুধগুলোর ক্ষেত্রে তা হয়নি। ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখন বলছে, এসব ওষুধ নিয়মিত চিকিৎসায় ব্যবহার করা উচিৎ হবে না।”
এখনও যেহেতু এসব ওষুধ প্রয়োগের ফলাফল সম্পর্কে সব তথ্যপ্রমাণ হাতে নেই, আপাতত ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের’ বাইরে তা ব্যবহার না করারই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান রানা।
তিনি বলেন, এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হতে হবে খুব নিয়ন্ত্রিতভাবে, যাতে নির্দিষ্ট বলা যায়, কীভাবে ব্যবহার করলে কী রকম ফল এ ওষুধ দেবে।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঢাকা অফিসে যোগ দেওয়া রানা নিজেও একজন চিকিৎসক। তিনি নেপালের নাগরিক।
লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে তার পোস্ট ডক্টরেটের বিষয় ছিল ‘ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিন’। তার আগে সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে তিনি ‘পাবলিক হেলথ’ নিয়ে মাস্টার্স করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০:২০:০৯ ৭২১ বার পঠিত # #করোনা ভাইরাস #মহামারি আকারে করোনা ভাইরাস #সারা বিশ্বে করোনা