বেশ কয়েকটি দিন গত হলো, রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পরে থাকা মেয়েটির পরিচয়টি উদ্ঘাটন সম্ভব হলো না। তাকে ওটি থেকে এনে স্বাভাবিক বেডে দেওয়া হয়েছে। অনিকের এখন দুবেলা গিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া একটা রুটিন ওয়ার্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিষ্কৃতি লাভও সম্ভব হচ্ছে না। ধীরে ধীরে তার মনে অনেক প্রশ্নের উদয় হচ্ছে। কিন্তু সোনিয়ার সেটা ক্রমান্বয়ে ধৈর্যের বাইরে চলে যাচ্ছৃে। অনিকের আগ্রহ ও অনুসূূচনা বেড়েই চলছে। কি করবে এখন। এটা কি আপদ বলবে নাকি বিপদ ? আপদ আর বিপদের মধ্যেও নাকি তফাৎ রয়েছে। কথিত আছে যে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিম চন্র চট্টোপধ্যায়কে তাঁর আইসিএস পরীক্ষা দেওয়ার সময় এক সাহেব নাকি মৌখিক সাক্ষাৎকার নিবার সময় এ দুটোর পার্থক্য কি জানতে চেয়ে প্রশ্নটি করেছিলেন। বঙ্কিম বাবু নাকি বুঝিয়ে বলেন যে, ধরুন আমরা নৌকা যোগে কোথাও রওয়ানা হলাম। কিন্তু মধ্য নদীতে প্রবল ঝড় উঠলো। অনেকে সাতারও জানিনা। এই মূহূর্তটাই হলো বিপদ। আর আপদ হলো কি করে যে বুঝাই, এই ধরুন আপনি একজন অবাংগালী সাহেব,আমি বাংলা সাহিত্যের একজন লেখক। এই পরিস্থিতিতে আপনাকে যে কি করে পার্থক্যটা বুঝাবো আপনাকে সেটাই আমার জন্য একটা আপদ।
আপদ বিপদ যাই হোক,এই রোগীকে বাঁচানোই এখন অনিকের একটা বিরাট দায়িত্ব হয়ে গিয়েছে।
সন্ধ্যার কিছু পর খুব আয়েশে একটু টিভি দেখবে অনিক। সোনিয়াকে একটু চা দিতে বলে রিমোট হাতে নিয়ে বসলো। এমন সময় একটি ফোন এসে তার মোবাইলে বেজে উঠলো। স্বাভাবিক ভাবেই অনিক হ্যালো বলতেই অপর প্রান্থ থেকে প্রশ্ন-
আপনি কি অনিক বলছেন ?
জ্বী বলছি।
মালা মানে ভর্তি হওয়া চিকৎসাধীন মেয়েটি তো আপনার খালাতো বোন।
না না না, মানে হ্যা হ্যা । আপনি জানলেন কি করে ?
আমাদের হাসপাতালের রেজিস্টারে তো তাই আছে। আপনি তার অভিভাক।
অনিক - শায়লা কি আছে? আমার রোগীটি সুস্থ আছে তো ? এক সাথে অনেক প্রশ্ন অনিকের । অপর প্রান্ত থেকে যা বলা হলো তাতে অনিকের শরীরে যেন একটা বিদ্যু প্রবাহ খেলে গেল। সে অনেকটা অস্থির হয়ে উঠেছে। তার স্ত্রী বিষ্ময়ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে জানতে চাইলো। চা লাগবে না সোনিয়া, বলে অনিক দৌড়ে গিয়ে বাইরে যাবার প্রস্থুতি নিতে নিতে বিরতিহীন ভাবে বলে যা বুঝাল , তা হলো,তার রোগীর অবস্থা হঠাৎ করে খুবই আশংকাজনক হয়ে পড়েছে। শায়লারও রাতে ডিউটি নেই, কালও নেই ,পরশু আটটায় আসবে।
হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের এর নিয়ম অনুসারে অনিক ভিজিটর্স ইউনিফর্ম সেট নিয়ে গিয়ে রোগীর শিয়রে রক্ষিত চেয়ারে বসে রইল। খুবই চিন্তিত এবং একটা অস্থিরতা । কথা বলাও নিষেধ। শুধু ডাক্তার শায়লার অনুরোধক্রমে সিস্টারগণ তাকে আইসিইউ তে এলাউ করেছে। রোগীর নাকি হঠাৎ করে পাল্স পাওয়া যাচ্ছে না,হার্টবিট কমে গিয়েছে। আরও নানান উপসর্গ। অত্যধিক রক্তক্ষরণ হওয়ায় এখন রক্ত দিতে হচ্ছে। স্যালাইন ও অক্সিজেন চলছে।
অনিক- সিস্টার রোগীর অবস্থা কেমন ?
এই কিছুক্ষণ আগে ডাক্তারগণ এসে দেখে গেছেন। এখন কিছুই বলা যাচ্ছে না। আটচল্লিশ ঘন্টা পার না হলে বলা মুষ্কিল। রাত ক্রমে গভীর হচ্ছে। ঘুমে কিছুটা কাতর হলেও সে চেয়ারে আছে আর পলকহীনভাবে তাকিয়ে গুনছে প্রতিটি স্যালাইনের ড্রপ। টিপ টিপ টিপ টিপ। তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ৫০০ সিসি স্যালাইন শেষ হবার সংগে সংগে তা বন্ধ করতে হবে। অনিকও একজন ডাক্তার, তাই চাবি অফ করার কৌশলও তার জানা।দৃখবেন উল্টো দিকে রক্ত উঠে যাবে। নার্সেস ডিউটি রুমে গিয়ে অর্ধশোয়া অবস্থায় নার্স। তাকে ডাকলে সে এসে আর একটা স্যালাইন পুষ করে দিবে। সাথে যুক্ত আছে অক্সিজেন,ঝুলানো আছে ব্লাড বেগ। পাল্স এবং হার্ট বিটের ইনডিকেটর অনিয়মিত ভাবে ইন্ডিকেট করে চলেছে। শব্দ টিপ টিপ টিপ টিপ। এই আওয়াজের সাথে অনিকের হর্ট বিট যুক্ত হয়ে যেন সমস্বরে আওয়াজ দিয়ে চলছে। টিপ টিপ টিপ। ওয়ার্ডবয় বহু আগেই লাইট সব ব্ন্ধ করে দিয়ে গেছে। ডিম লাইটের আলোতে অনিক পলকহীন ভাবে রোগীর মুখাবয়ব দেখছে। কে সে। আচ্ছা ও যদি অনামিকা নাই হয়ে থাকে তবে কে ?
একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন অনিক, মাঝে মাঝে রোগীর শিয়রের কাছে খাটের কিনারায় মাথা এলিয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পরে। আবার জেগে উঠে। ভাবতে থাকে অবশ্যই সে মালাই হবে। তাহলে এখানে কেন ? ফটোটিইবা কিসের জন্য তার বেগে। দীর্ঘকাল এটা কেন বয়ে বেড়াচ্ছে ? ভাল বেসে ? নাকি আমাকে সারা শহর শুদ্ধ খোঁজে বেড়াচ্ছে ফটো ফেরত দিয়ে ভার মুক্ত হতে। আধোঘুমে আধো জাগরণে চিন্তা ও উৎকণ্ঠায় অনিক যেন নিজেই আজ রোগী।
ভাবনার সাগরে হাবুডুবু খেতে খেতে চোখ দুটো বুজতে চেষ্টা করে।
আচ্ছা এই যদি মালা হবে তাহলে এতো কালো কেন ? মালা গৌরবর্ণের ছিলনা সত্য। কিন্তু কালোতো ছিল না। বলা যায় উজ্জল শ্যামবর্ণ। তার মুখাবয়ব আবারও ভাল করে দেখে।
একটি স্যালুলয়েডের ফিতার মধ্যে যেন ভেসে উঠছে সব। তবে অবছা ,অস্পষ্ট। যেন পুরানো দিনের ছবির একটি রিল। ধূলিধূসর,অস্পষ্ট,জায়গায় জায়গায় বিবর্ণ,। তাকেই আজ কল্পনার রামধনুকের রংগে রাঙিয়ে নিয়েছে।
মালার গালে ঠোঁটের অদূরে বাম দিকে একটা তিল ছিল। এটা দিয়েও নিশ্চিত হওয়া যেতো। কিন্তু মুখে অক্সিজেন এবং পূর্বের মাস্কটি থাকায় সম্ভব হচ্ছে না। তবে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে রোগীটি করোনা ভিক্টিম নয়,আঘাত জনিত ও অন্যান্য উপসর্গের কারনে। তার ডান হাতটা অত্যধিক ফোলা। বেন্ডেজ বাঁধা হয়েছে।
মালার সাথে স্কুল জীবনে বহু ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠে অনিকের। যদিও তখন ছেলে এবং মেয়ে একসাথে মেলামেশা বা কথোপকথন নিষেধ ছিল। মোবাই ফোনেরও প্রচলন ছিল না। অনিকের জন্মদিনে ঈদকার্ড দিতে মালার কোনদিন ভুল হয়নি। দিতে হতো বই বিণিময়ের আড়ালে । একবার একটা বইয়ে এক ঈদ কার্ড পাঠালো। নায়ক-নায়িকাদের ক্লোজআপ ছবি সম্বলিত। বইটি ছিল বোধহয় ফাল্গুণী মুখোপাধ্যায়ের চিতা বহ্নিমান টহ্নিমান হবে। দুটিই খুব আকর্ষণীয় ছিল। বইটি আজও আছে,কিন্তু কার্ডটি নেই । কারন সে কোন কালেই গুছানো ছিল না। আর এসব চিন্তাও তখন আসেনি। কার্ডটিতে বোধহয় লিখা ছিল ” মনের কথা কি মুখে সব বলা যায় “।
বৌ বৌ খেলাটা অনিকের কাছেে আসলেই একটা খেলা ছিল। এটি নেহায়েত কোন প্রেম বা বিয়ে জনিত নয়। সে জানতো যে তখনকার সময়ে এটা অপরাধ ছিল। এখনো তাই। রক্ষণশীল দুটি পরিবারই এটা মেনে নেবেনা।
বহু মেয়ে কেন যে অনিককে পছন্দ করতো,তা সেও জানেনা। অনেকে প্রতিহংসায় ঈর্ষাণ্বিত হতো।,আবার কেহ উপভোগও করতো। কেহ কেহ বলতো কি হে তুই কি কন্যা রাশির জাতক নাকি ?
তবে আজ কেন তার কল্পিত ছবি হৃদয়ে ভেসে উঠে অনিককে উদ্বেলিত করছে? বেদনাঘাতে জর্জরিত করছে ? মনের কোনে কি তাকে ভাল বেসে জায়গাও দিয়ে ছিল ? কতকিছু মনে আজ আঘাত করে যাচ্ছে। স্যালাইনের এবং হার্টের চাপ ও প্রসার দেখার যন্ত্রটির টিপ টিপ শব্দ যেন বিরাট হাতুরী দিয়ে অনিকের বুকে আঘাত করে যাচ্ছে। সৃষ্টি কর্তার কাছে আজ প্রার্থনা করছে। হে আল্লাহ গাফুরুর রাহীম,জীবনেতো তোমার কাছে কিছু চাইনি। আজ হাত তুলেছি তোমার দরবারে। অন্তত মালাকে ভাল করো, সুস্থ করো।
অনিকের শেষ ভরসাস্থল হলো গালের একটি তিল। শোনা যায় পারস্যেের কবি হাাফিজ নাকি প্রিয়ার কপোলের একটি তিলের জন্য বুখারা-সমরখন্দ দান করে ফেলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। পরে অবশ্য দেশের কর্ণধার তৈমুর লং এর ভর্তৎসনারও সম্মুখীণ হতে হয়। আবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সাধ করে বলে ছিলেন, “সাধ জাগে মনে পর জনমে তোমার কপোলে যেন তিল হই”। আজ অনিকের একান্ত কামনা মালা নামক রোগীর কপোলের তিলটা য়েন সে দেখতে পারে এবং তার মালা যেন সুস্থ হয়ে উঠে।
একদিন অনিকের এক পুরোণো বন্ধু এসে মালার প্রসঙ্গটি কথাচ্ছলে স্মরণ করিয়ে দেয়। তার সাথে কথা বলে জানতে পারে যে মালার একদা বিয়েও হয়ে ছিল। অল্প কিছুদিন পর সেটি ভেঙ্গে যায়। অতি বড় ঘরণী না পায় ঘর, আর অতি বড় রূপসীর না জোটে বর।
তার পিতা একসময়কার খুব নাম করা,অবস্থাপন্ন ও এলাকার একজন সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর ছেলেদের মধ্যে ভাই ভাই পৃথক হলে সে অবস্থা আর ছিল না। মাতৃ বিয়োগও হয়ে ছিল মালার বহু আগে। অনিকেরও তাই। মালা বড়ই রুপসী ছিল। তার মাথায় কুঁচকানো চুল যা কোমরের নীচ পর্যন্ত পরে। মোহাম্মদ রফির একটি গানের সাথে মালার হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়-”হেই তোমার নীল দোপাটি চোখ,শ্বেত দোপাটি হাসি,খোঁপাটিতে লাল দোপাটি দেখতে ভাল বাসি। দেখে তোমার হাওয়ায় উড়া চুল,মেঘ করেছে ভেবে করি অনেক সময় ভুল। তোমার রূপের বিভাবরি হায়গো কিবা মরি, না ডাকলে কি করে আর তোমার কাছে আসি। - অনিক প্রায় সময়ই গুনগুনিয়ে এটা গাইতো।
অনিক ছিল এতো বেশী শান্ত ও লাজুক যে অনেকে থাকে মতিষ্ক বিকৃত বা মানসিক রোগী বলে ভ্রম করতো। তাই যদি হয় তবে সে মেধার সহিত এতো গুলো ডিগ্রী অর্জন করে কি ভাবে। তারপর নামীদামী কোম্পানীতে এতো উচ্চ পদে আসীণ হয় কি ভাবে। তাকে মনোবিজ্ঞানিরা সুস্থ লোক ও তুখোড় বিচক্ষণ অভিধায় ভুষিত করেছেন। তারা বুঝাতে চেয়েছেন যে সে Introvert প্রকৃতির ।
অনিকের দায়বদ্ধতা আরও বেড়ে গেল আজ। তার বাবার বদলী জনিত কারনে কর্মস্থলে যাবার জন্য সব গোছগাছ করছেন। কিন্তু অনিকের সামনে ফাইনাল পরীক্ষা। চলে গেলে অনিকের কি হবে। অবশ্য ইঞ্জিনীয়ার মজিদ সাহেব কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলে হয়তো সময় মঞ্জর হতো। কিন্তু তিনি তা করতে রাজী নন। তার পিতার নিষ্ঠা আর কর্তব্য পরায়ণতার কথা পাঠক পূর্বেই জেনেছেন। তখন আলাপচ্ছলে জানতে পারলেন মালার পিতা রহমান সাহেব। ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে যাবার সুবাদে তিনি বললেন যে আপনার অনিক পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত আমার বাড়ীতে থাকবে।
অনিক মালার ছোট ভাইবোনকে পড়ানোর সময় কারনে অকারনে অনিকের কাছে আসতো মালা । ঘনিষ্ঠতা আরও ঘনিভুত হয়। তখন অনিক দেখেছে মালাকে আরো কাছে থেকে। তার চুলের একটা গন্ধ প্রায় সময়ই কি যেন একটা সুগন্ধ ছড়াতো নাকে। অনিক সেই গন্ধ খোঁজে বেড়ায়। কোন ধরনের যেন একটা ফুলের গন্ধ। চামেলী বেলী বা রজনীগন্ধা। কিন্তু তা কোথাও পায় না আর অনিক। মনে পড়ে মালার খুব প্রিয় ছিল বকুল ফুলের মালা। একদিন অনিক কোথাও হাটতে গিয়ে সেই বকুল ফুলের মালা সামনে পেয়ে কিনে নিয়ে আসে। বাড়ি এসে ছোটদের পড়ানোর সময় একটু দুরে নিচে বসে রান্নার চাল পরিষ্কার করতে থাকা মালাকে লক্ষ্য করে গোপনে ছুড়ে দিয়ে ছিল। পিছন থেকে ছুড়ে দেওয়া মালাটি ঠিক একেবারে মালার গলায় গিয়ে পড়ে। অনিক ভেবে ছিল মালা হয়তো ক্ষেপে যাবে। কিন্তু উল্টোটি ঘটেছিল। মালা মালাটিকে টানা কয়ৃেক দিন পড়ে রেখে ছিল গলায়।
অনিকের যাবার পালা। তার বাবা মজিদ সাহেব এসেছেন। মালার বাবার সাথে কোলাকোলি করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। বাক্সপেটরা একটা ভ্যান গাড়ীতে উঠানো হলো। কিন্তু মালাকে বাড়ীর কোথাও পাওয়া গেলনা। অনিকের একান্ত ইচ্ছা ছিল বলতে,আসি ভালো থেকো।
ভ্যানের সামনের দিকে মজিদ সাহেব বসা। পিছনে অনিক। তার দৃষ্টিও পিছন পানে। সামান্য অগ্রসর হতেই জামরুল গাছটার নীচে দেখা গেল দাঁড়িয়ে আছে মালা। দেখেই বুঝতে কোন অসুবিধে হয় না যে সে নীরবে খুব কেঁদে ছিল। অনিক হাত তুলে বিদায় সম্ভাষণ জানাবে। এমন সময় মালা ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে অশ্রু সম্বরণে চেষ্ঠা করতেই আরো জোরে শব্দ করে কেঁদে ফেললো। মজিদ সাহের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছিল। অনিক লজ্জায় মাথা নত করলো,কিন্তু মুখটি লাল হয়ে গেল। ভ্যাটিকে যতক্ষণ দেখা গেল মালা সজল চোখে তাকিয়েই ছিল।
আজ এসব কথা মনে পড়ছিল অনিকের। আর ভাবছিল এই মালা তার সেই মালা তো । তার চুলের সেই গন্ধ নাই কেন। তবে কি দীর্ঘ দিনের কষ্ঠ আর বঞ্চনার জন্য। চূলের কুঁচকানো ভাব সামান্য থালেও গন্ধ একেবারে নেই। তৈল চিরুণী বিরহিত, উস্কোখুসকো। গায়ের বর্ণও নেই। তবুও অনিক তাকে দেখে নিশ্চিত হতে চায়।
এমন সময় বুঝি সিনেমার রিলটি ছিঁড়ে গেল। মালা নামক রোগীটি কোঁকানো দিয়ে শব্দ করে উঠলো। আ আ আ আমি কোথায় ? ? ?
শব্দটি জোরে জোরে বাতাসে প্রতিধ্বনিত হতে থাকলো।
কাঁচের জানালা ভেদ করে ষষ্ঠ তলায় সূর্যের আলো এসে ভিতরে প্রবেশ করলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৩৮:০৮ ৯৩৮ বার পঠিত #গল্প #ছোট গল্প #সাহিত্য বাংলা সাহিত্য