বঙ্গনিউজ ডটকমঃ একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের ১৪তম সাক্ষী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস সেলিম লতিফকে আসামিপক্ষের জেরা শেষ হয়েছে।আগামী বুধবার ২৪ জুলাই ১৫তম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।সোমবার সাক্ষী মো. আব্দুস সেলিম লতিফকে দ্বিতীয় ও শেষ দিনের মতো জেরা করেন নিজামীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম। রোববার এই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে জেরা শুরু করেছিলেন নিজামীর একজন জুনিয়র আইনজীবী। বুধবার নিজামীর বিরুদ্ধে ১৫তম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবিরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল।নিজামীর বিরুদ্ধে গত বছরের ২৬ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এ পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষের আরো ১৩ জন সাক্ষী তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে ৭ম সাক্ষী প্রদীপ কুমার দেবকে বৈরি ঘোষণা করে তাকে জেরা করেছেন প্রসিকিউশন।অন্য ১২ সাক্ষী হচ্ছেন, বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিজবাউর রহমান চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধকালে বিচ্ছু বাহিনীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা গেরিলা যোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল ওরফে বিচ্ছু জালাল, মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং কলেজের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী (নিরাপত্তারক্ষী) রোস্তম আলী মোল্লা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, মুক্তিযোদ্ধা নাজিব উদ্দিন খাত্তাব, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান, মো. আইনুল হক, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফিজিশিয়ান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. রথীন্দ্রনাথ কুণ্ডু ও শহীদ বুদ্ধিজীবী চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. আলিম চৌধুরীর স্ত্রী শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী।আসামিপক্ষ তাদের জেরা সম্পন্ন করেছেন।উল্লেখ্য, গত বছরের ২৮ মে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৬টি অভিযোগ এনে নিজামীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩(২)(এ), ৩(২)(সি), ৩(২)(জি), ৩(২)(এইচ), ৪(১), ৪(২) ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উস্কানি ও সহায়তা, পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ মোট ১৬টি ঘটনায় অভিযোগ আনা হয়েছে।ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগের মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে একই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়।২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। এতে তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, খুন, ধর্ষণ এবং অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।এ বিষয়ে ৩৩৬ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেন তদন্ত সংস্থা। আর আনুষঙ্গিক কাগজপত্রসহ প্রায় আড়াই থেকে ৩ হাজার পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট তৈরি করা হয়।গত বছরের ৯ জানুয়ারি নিজামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। এতে মোট ১৫টি অভিযোগ ছিল। অভিযোগ গঠনকালে বুদ্ধিজীবী হত্যা যোগ হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০:০৫:৪৩ ৪৭৩ বার পঠিত