স্বপন চক্রবর্তী,বঙ্গ-নিউজ: করোনা ভাইরাসের নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা এবং এর উপযুক্ত ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় এখন গোটা বিশ্ব। মানুষ বাঁচতে চায়, ডাক্তার,পুলিশ, নার্স, ব্যাংকার অন্যান্য সেবাদানকারীরাও বাঁচতে চায়। এমনই হতাশার মধ্যে সামান্য আশার আলো নিয়ে এলো ” মর্ডানা” । যুক্তরাষ্ট্রে মানুষের শরীরে পরীক্ষা করা প্রথম করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন নিরাপদ ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ প্রতিক্রিয়াকে (ইমিউন রেসপন্স) উদ্দীপীত করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ভ্যাকসিনের উৎপাদক মার্কিন বায়োটেক কোম্পানি মর্ডানা গতকাল সোমবার ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সম্পর্কে এ ইতিবাচক কথা জানিয়েছে। নিউ্ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
মার্চে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম ৮ জন স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে এ ভ্যাকসিন নিরাপদ কি না, তা পরীক্ষার জন্য ইনজেকশন পুশ করা হয়েছিল। তাঁদের শরীরে দুই ডোজ করে এ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল। প্রথম আটজন ব্যক্তির শরীরে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই ফলাফল পাওয়া গেছে।
মডার্না দাবি করেছে, ভ্যাকসিন পাওয়া স্বাস্থ্যকর স্বেচ্ছাসেবকেরা অ্যান্টিবডি তৈরি করেছিলেন, যা তারপরে ল্যাবে মানবকোষে পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং তা ভাইরাসটিকে প্রতিলিপি তৈরি করা থেকে আটকাতে সক্ষম হয়েছিল। কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরির জন্য ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরি ঠেকানোটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, যাঁরা ভাইরাসের সংক্রমণের পরে সুস্থ হয়েছেন, তাঁদের অ্যান্টিবডির সঙ্গে পরীক্ষায় পাওয়া নিষ্ক্রিয় অ্যান্টিবডির মাত্রাগুলোর মিল রয়েছে।
মডার্না বলেছে, শিগগিরই ৬০০ জনকে নিয়ে পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপ শুরু করতে যাচ্ছে তারা। এ পর্যায়ে ৬০০ জনের শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে ফল পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর জুলাই মাসে পরীক্ষার তৃতীয় ধাপ শুরু করা হবে। এ সময় হাজারো স্বাস্থ্যবান মানুষের ওপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে ফলাফল পর্যবেক্ষণ করা হবে।
মডার্নার প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা টাল জ্যাকস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) এ মাসের শুরুতেই এ ভ্যাকসিন দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষার অনুমেোদন দিয়েছে। যদি পরীক্ষা ভালো ফল আসে, তবে এ বছরের শেষ নাগাদ বা ২০২১ সালের শুরুতেই সর্বব্যাপী ব্যবহারের জন্য ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।
মডার্নার পরীক্ষায় কম, মাঝারি ও তীব্র তিন মাত্রার ভ্যাকসিন ডোজ পরীক্ষা করা হয়। প্রাথমিক ক্ষেত্রে কম ও মাঝারি মাত্রার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়। এই ডোজের একমাত্র বিরূপ প্রভাব ছিল রোগীর বাহুতে যেখানে শট দেওয়া হয়েছিল, সেখানে লালচে দাগ ফোটে এবংজায়গাটা কালশিটে হয়ে যায়। তবে যাদের তীব্র ডোজ দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের তিনজনের জ্বর, পেশিতে ব্যথা, মাথা ব্যথা দেখা দেয়। তবে একদিন বাদে এসব উপসর্গ চলে যায়।
টাল জ্যাকস বলেন, ভবিষ্যতে পরীক্ষার জন্য উচ্চমাত্রার ডোজ বাদ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিবেচনা করে এটি বাদ দেওয়া হচ্ছে না। কম ও মাঝারি মাত্রার ডোজে ভালো ফল দেখানোর ফলে উচ্চমাত্রার ডোজ প্রয়োজন হবে না। যত কম মাত্রার ডোজ কাজ করবে ততো ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারবে মর্ডানা।
ভ্যাকসিন পরীক্ষায় ইতিবাচক ফলাফলের খবর প্রকাশ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার মূল্য ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে।:
বাংলাদেশ সময়: ১১:৫৪:৩২ ৭২৩ বার পঠিত # #করোনা ভাইরাস #ভ্যাকসিন #মহামারি আকারে করোনা ভাইরাস #সারা বিশ্বে করোনা