স্বপন চক্রবর্তী, বঙ্গ-নিউজ: করোনাভাইরাসে মৃত্যু ছাড়াল আড়াই লাখ; আক্রান্ত ও মৃত্যু বেড়েই চলছে । চিকৎসক,নার্স,ব্যাংকার, পুলিশ বাহিনীসহ অনেক সেবাদানকারী সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। কর্মহীন,খাদ্যহীন মানুষ বের আসছে। ফলে করোনার ঝুকি বাড়ছে। নতুন করোনাভাইরাসে আট দিনে আরও ৫০ হাজার মানুষ বিশ্ব থেকে হারিয়ে গেল; এর আগের ৫০ হাজারের মৃত্যুতে লেগেছিল সাত দিন।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সোমবার রাতে হালনাগাদ করা তথ্য বলছে, বিশ্বে কোভিড-১৯ মহামারীতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার ১৩৪ জন।
এই মৃত্যুর এক-চতুর্থাংশই ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭ হাজার ছাড়িয়েছে। এটা লক্ষ ছাড়াবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
চীনে প্রাদুর্ভাবের ৯০ দিন পর গত ১০ এপ্রিল কোভিড-১৯ মহামারীতে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা লক্ষ ছুঁয়েছিল।
তার আট দিন পর ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু এই সংখ্যাকে দেড় লাখ ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। তার পরের ৫০ হাজারের মৃত্যু ঘটতে সময় লেগেছিল সাত দিন।
ইউরোপে পরিস্থিতির উন্নতির মধ্যে মৃতের সংখ্যা দুই লাখ থেকে আড়াই লাখে যেতে আগের চেয়ে একদিন বেশি সময় লাগল।
সোমবার নাগাদ বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৫ লাখ ৭১ হাজার। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১১ লাখ ৪৪ হাজার জন।
মৃত্যুর মতো আক্রান্তের সংখ্যায়ও বিশ্বে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র; মোট কোভিড-১৯ রোগীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশই ওই দেশটির নাগরিক।
বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১ লাখ ৭২ হাজার; আর মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৭ হাজার।
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বিপর্যয়কর অবস্থা নিউ ইয়র্কে; শুধু এই শহরেই মৃতের সংখ্যা ১৯ হাজারের বেশি। নিউ ইয়র্কে রোববার মৃত্যু ঘটেছে ২২৬ জনের, যা আগের দিনের চেয়ে ৫৪ জন কম। আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির হারও কমে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তদের মধ্যে ৫ দশমিক ৮ শতাংশেরই মৃত্যু ঘটেছে; যে হার বিপর্যস্ত অন্য দেশগুলোর তুলনায় কম।
যে আড়াই লাখের মৃত্যু ঘটিয়েছে করোনাভাইরাস, তার অর্ধেকের বেশি মানুষ ইউরোপের। আর আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যু এই মহাদেশের দেশেই বেশি।
বেলজিয়ামে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি; সেখানে মোট আক্রান্তের ১৫ দশমিক ৭ শতাংশের মৃত্যু ঘটেছে।
তবে দেশটি এই সময়ে কোভিড-১৯ রোগের লক্ষণ নিয়ে মৃতদেরও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
বেলজিয়ামে মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার জন, তার মধ্যে মারা গেছে ৭ হাজার ৮৪৪ জন।
মৃতের সংখ্যায় ইউরোপে শীর্ষে রয়েছে ইতালি; দেশটিতে ২৯ হাজার জনের বেশি মারা গেছে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ১২ হাজার।
মৃতের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালির পরেই রয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটিতে এখন অবধি প্রায় ২৯ হাজার জন মারা গেছে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৯১ হাজার।
আক্রান্তের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরেই স্পেনের স্থান হলেও দেশটিতে মৃত যুক্তরাজ্যের চেয়ে কম। স্পেনে ২ লাখ ১৭ হাজার আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছে ২৫ হাজার।
ফ্রান্সে মারা গেছে প্রায় ২৫ হাজার, দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৮ হাজার।
করোনাভাইরাস মহামারীকে পাত্তা না দেওয়া প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো দেশ ব্রাজিলে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে।
মৃতের সংখ্যায় বিশ্বে সপ্তম স্থানে এখন লাতিন আমেরিকার দেশটি; আক্রান্তের সংখ্যায় দেশটির অবস্থান নবম। ব্রাজিলে ১ লাখ ২ হাজার আক্রান্তের মধ্যে ৭ হাজার ২০০ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
ব্রাজিলের পর নেদারল্যান্ডস, জার্মানি ও ইরানে ৫ হাজারের বেশি মৃত্যু ঘটেছে। চীনে মৃতের সংখ্যা এখনও ৪ হাজার ৬০০ জনের মধ্যে আটকে আছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ভারতে। দেশটিতে আক্রান্ত ৪৬ হাজারের মধ্যে দেড় হাজারের মৃত্যু ঘটেছে।
পাকিস্তানে ২১ হাজার আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু ঘটেছে ৪৭৬ জনের। বাংলাদেশে ১০ হাজার আক্রান্তের মধ্যে ১৮২ জন মারা গেছে।
আক্রান্ত ও মৃতের এই তালিকা শুধু যাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি বলে মনে করছেন গবেষকরা।
বাংলাদেশ সময়: ৯:৩৯:২১ ৪৯৩ বার পঠিত # #করোনা ভাইরাস #মহামারি আকারে করোনা ভাইরাস #সারা বিশ্বে করোনা