বঙ্গনিউজ ডটকমঃ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভীর সঙ্গে জামায়াতের আলোচনা মাঝপথে থেমে গেছে। অতি সমপ্রতি একজন পশ্চিমা কূটনীতিকের বাসায় আলোচনা হয় প্রথম দফা। এতে জামায়াতের তিনজন, সরকার পক্ষে দু’জন প্রতিনিধি হাজির ছিলেন।
অবশ্য পশ্চিমা এই কূটনীতিক কোন আলোচনায় অংশ নেননি। তিনি শুধু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। বৈঠকে নানা বিষয় আলোচিত হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল সহিংসতা বন্ধ করা। ড. গওহর রিজভী বারবারই বলছিলেন আগে আপনারা সহিংসতা বন্ধ করুন। তারপর কোন বিষয়ে সমঝোতা হতে পারে। সমঝোতার ব্যাপারে ড. রিজভী যে ভীষণ উদগ্রীব বৈঠকে একাধিকবার তিনি উল্লেখ করেছেন নানা প্রসঙ্গ টেনে। জামায়াতের তিন নেতা বারবার বলেছেন, আমাদের দল নিষিদ্ধ নয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় অফিসে তালা। ৬৫টি সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়েও তালা ঝোলানো হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঢাকা মহানগরীর ১১ জন জেলা আমীরকে। ৩৫০০ নেতাকর্মী এখনও জেলে। প্রায় ৪৩ হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে নেয়া হয়েছিল। তা ছাড়া সামপ্রতিক আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরের ১২৬ জন নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছেন। সর্বমোট নিহত হয়েছেন ২৩১ জন। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ড. রিজভী সরাসরি কোন প্রতিশ্রুতি দেননি। বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করবেন। জামায়াত যদিও বলেছিল সহিংসতা তাদের কাম্য নয়। এমন পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিলে কিছু করার থাকে না। এসব বক্তব্যে ড. গওহর রিজভী ভেবেছিলেন, অধ্যাপক গোলাম আযমের রায়ের পর কোন সহিংসতা হবে না। এমন ধারণা শীর্ষ নেতৃত্বকে দিয়েছিলেন। কিন্তু রায়ের আগের দিন হরতাল ডেকে দেয় জামায়াত। এরপর লাগাতার পাঁচ দিন হরতাল আহ্বান করে। অধ্যাপক গোলাম আযমের ৯০ বছরের সাজা হওয়ার পর বুদ্ধিজীবী মহলে প্রতিক্রিয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। নানা কথা বাজারে চাউর হয়। আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির আদেশ হওয়ায় আবার ধূম্রজাল তৈরি হয়। ড. রিজভীর সঙ্গে ফের আলোচনার ব্যাপারে জামায়াত আগ্রহ হারায়। এসব কারণে অবস্থার পরিবর্তন হয়নি বরং নতুন করে সঙ্কট জমাট হয়েছে। জামায়াত নেতারা বিশ্বাস করেন অধ্যাপক গোলাম আযমের ব্যাপারে মুসলিম দুনিয়া বিশেষ করে ইসলামী সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) তরফে ভীষণ চাপ সৃষ্টি করা হয়। সেসব চাপ বা অনুরোধ সরকার উপেক্ষা করতে পারেনি। যাই হোক, উল্লিখিত দু’টি রায় জামায়াতের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। ড. গওহর রিজভী অবশ্য শুধু জামায়াত নয়, বিএনপির সঙ্গেও একাধিকবার আলোচনা করেছেন। কিন্তু ফলপ্রসূ কোন অগ্রগতি হয়নি। বিএনপির তিন শীর্ষ নেতার সঙ্গে বৈঠকের সময় স্থির হলেও শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম হাজির হননি। শেষ পর্যন্ত নাকি তাকে বারণ করা হয়। যেমনটা হয়েছে বিএনপির ইফতারে অংশ নেয়া নিয়ে। আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের অংশ নেয়ার কথা ছিল। শীর্ষ পর্যায় থেকে নাম চূড়ান্ত করা হয়। অজ্ঞাত এক কারণে সৈয়দ আশরাফ ইফতারমুখী হননি। সে নিয়ে নানা আলোচনা রাজনীতির ময়দানে। সরকার আসলে কি চায় তা এখনও স্থির করতে পারেনি। এ কারণে ঘন ঘন সিদ্ধান্ত বদল করছে ।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৪:০৮ ৩৯১ বার পঠিত