করোনা ভাইরাসঃ বাঙালির অসচেতনতা ও অন্ধবিশ্বাস-জেনারুল ইসলাম

Home Page » সাহিত্য » করোনা ভাইরাসঃ বাঙালির অসচেতনতা ও অন্ধবিশ্বাস-জেনারুল ইসলাম
মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল ২০২০



---

বিশ্ব যখন করোনা যুদ্ধে পরাস্ত বাংলাদেশে ঠিক তখনি করোনাকে সরকারের চক্রান্ত কিংবা পাপীদের উপর গজব বলে অপ্রচার চালাচ্ছে একদল নামধারী ভন্ড অতিশিক্ষিত।


পুরোবিশ্ব যেখানে কোয়ারেন্টাইন, হোমকোয়ারেন্টাইন, লকডাউন,ভেন্টিলেটর করছে বাঙালি সেখানে কোয়ারেন্টাইনের ব্যক্তিকে দেখতে শত মানুষে ভীড় করছে। একজন ব্যক্তি করোনা থেকে সুস্থ্য হয়ে ফিরে এসে মিলাদ মাহফিল করছে বিনিময়ে আরো পাঁচজন নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে।

বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলো যখন করোনার কাছে হার মেনে নিজেদের বাঁচাতে গৃহবন্দি,সঙ্গনিরোধ করছে আমরা তখন লক্ষাধিক মানুষ একত্রিত হয়ে ঘটা করে মৃত্যুকূপ তৈরী করছি।


যুগে যুগে মহামারী এসেছে। লক্ষ- কোটি মানুষের প্রাণহানিও হয়েছে। তাই বলে কি মহামারী থেকে বাঁচার উপায় নাই?


আমাদের দেশের পোশাক শিল্পগুলোও এখনো পুরোপুরি বন্ধ হয় নি,থেমে নেই রেলপথ (সিলেট-ঢাকা)। লকডাউনের মধ্যেও প্রশাসনের চোখের সামনে দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা,গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঘরে ফিরছ হাজার মানুষ। মানছে না সরকারী নির্দেশনা থাকছে না কোয়ারেন্টাইনে।

দিনের পর দিন দোকানগুলোতে হচ্ছে চায়ের আড্ডা। অলিতে গলিতে বইছে ঈদের আমেজ।


কিছু অতিশিক্ষিত ও গ্রামের সহজ সরল মানুষদেরকে করোনা সম্পর্কে সচেতন করতে গেলে গলায় ঝুলিয়ে দেয় নাস্তিকতার লকেট। শুনতে হয় করোনা কেবল বেঈমান,ইহুদি কিংবা নাস্তিকদের উপর আল্লাহর গজব। অথচ আমি দেখি  প্রতিনিয়তই কেবল মানুষ মরছে। আমি মানুষ দেখি।


ইতিহাস বলে বাঙালি বীরের জাতি । তাই তো সামান্য করোনার ভয়ে বাঙালি গৃহবন্দি কেনো থাকবে। কেউ কেউ তো বলছে তাঁরা করোনার চেয়েও শক্তিশালী। দিনশেষে আমাদের প্রত্যাশা করোনা হেরে যাক বাঙালির কাছে। যার জন্য চাই সচেতনা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা।


তবে বাঙালি বরাবরেই মতোই জাতির দুঃসময়ে অন্ধবিশ্বাসে নিজের ক্ষতি ডেকে আনে। পবিত্র ধর্মকে পুঁজি করে সহজ সরল ধর্মভীরু বাঙালীকে বিপদগামী করে একদল ধর্মব্যবসায়ী। মহামারীকে অস্বীকার করছে তাঁরা

অথচ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মহামারী অধ্যুষিত এলাকায় প্রবেশ করতে নিষেধ করেছেন,এবং বলেছেন যেনো মহামারীর এলাকা থেকে কেউ বের না হন।

মানবের দুঃসময়ে, মানুষ ও মানবিকতাকে বাঁচাতে আমরা সামান্য একটা বিষয় নিয়ে জমায়েত না হয়ে থাকতে পারছি না।

অথচ ইতিহাস বলে ১৮১৪ সালে প্লেগ রোগের কারণে ৮০০০ জন মানুষ মারা যাওয়ায় হজ্জ বাতিল করা হয়। এছাড়া (১৮৩৭-১৮৫৮) প্লেগ ও কলেরার কারণে তিনবারে ৭ বছর হজ্জ বাতিল ছিলো।


জাতির এই ক্রান্তিকালে আমাদের সবার উচিত নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হওয়া। নিজে ভালো থেকে অন্যকে ভালো রাখা।

যে করোনা ইতালী,স্পেন,কানাডা কিংবা চীনকে করুণা করে নি সে করোনা বাংলাদেশকে করুণা করবে এমন ভ্রান্তবিশ্বাসে বিভ্রান্ত না হয়ে মানুষ ও মানবিকতাকে বাঁচাতে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।


আমরা আবার বেড়িয়ে পড়বো ঘর ছেড়ে। উন্মুক্ত আকাশে উড়াবো রঙিন ঘুড়ি। হাত হাত রেখে চলবো অসীমের পানে।

পৃথিবী হোক জঞ্জালমু্ক্ত হোক মানুষের।


-লেখক

জেনারুল ইসলাম

কবি ও গল্পকার

বাংলাদেশ সময়: ১৩:২৭:৪৯   ৫৭২ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সাহিত্য’র আরও খবর


সাধক কবি রামপ্রসাদ সেন: স্বপন চক্রবর্তী
ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা “আমি তো গাঁয়ের মেয়ে ”
৫০ বছরের গৌরব নিয়ে জাবির বাংলা বিভাগ বিশাল ‘সুবর্ণ জয়ন্তী’ উৎসব আয়োজন করেছে
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা- ‘তোমার খোঁজে ‘
অতুলপ্রসাদ সেন: ৩য় (শেষ ) পর্ব-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন;পর্ব ২-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন-স্বপন চক্রবর্তী
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা ” যাবে দাদু ভাই ?”
বাদল দিনে- হাসান মিয়া
ইমাম শিকদারের কবিতা ‘ছোট্ট শিশু’

আর্কাইভ