স্বপন চক্রবর্তী,বঙ্গ-নিউজ:বাংলা নববর্ষ ১৪২৭ উপলক্ষে প্রধান মন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেন, নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়ে যে পেশার মানুষ সবচেয়ে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে, তাদের বিশেষ সম্মানী ও বীমার জন্য ৮৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই ঘোষণা দিয়ে চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের এই সঙ্কটে দৃঢ় মনোবল নিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন।
বৈশ্বিক মহামারী রূপ নেওয়ার পর বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর নিজেদের সুরক্ষা নিয়ে চিকিৎসকদেরও ভাবিত করেছিল। এর মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে রোগীরা চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগও তোলেন।
এরপর চিকিৎসাকর্মীদের সুরক্ষামূলক পোশাক সরবরাহের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসকদের কড়া ভাষায় সতর্কও করেছিলেন।
তবে রোববারের ভাষণে তিনি চিকিৎসাকর্মীদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, “চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীগণ সম্পদের সীমাবদ্ধতা এবং মৃত্যুঝুঁকি উপেক্ষা করে একেবারে সামনের কাতারে থেকে করোনাভাইরাস-আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
“আপনাদের পেশাটাই এ রকম চ্যালেঞ্জের। এই ক্রান্তিকালে মনোবল হারাবেন না। গোটা দেশবাসী আপনাদের পাশে রয়েছে। আমি দেশবাসীর পক্ষ থেকে আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।”
যারা কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, সেই সব স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ সম্মানী দেওয়ার পরিকল্পনা জানান শেখ হাসিনা।
“তিনি বলেন, “ইতোমধ্যেই তাদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছি। তাদের বিশেষ সম্মানী দেওয়া হবে। এজন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।”
সুরক্ষা সরঞ্জামের কোনো ঘাটতি নেই বলে চিকিৎসকদের আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নিজেকে সুরক্ষিত রেখে স্বাস্থ্যকর্মীগণ সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাবেন, এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা।
তিনি আরও বলেন “একইসঙ্গে সাধারণ রোগীরা যাতে কোনভাবেই চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হন, সেদিকে নজর রাখার জন্য আমি প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি।”
মহামারী প্রতিরোধে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা,আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবি সদস্য এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারীর জন্য বীমার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
“দায়িত্ব পালনকালে যদি কেউ আক্রান্ত হন, তাহলে পদমর্যদা অনুযায়ী প্রত্যেকের জন্য থাকছে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবীমা এবং মৃত্যুর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ৫ গুণ বৃদ্ধি পাবে। স্বাস্থ্যবীমা ও জীবনবীমা বাবদ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৭৫০ কোটি টাকা।”
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নিয়োজিত পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য,সরকারি কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী, রোগী আনা-নেওয়ার কাজে এবং মৃত ব্যক্তির দাফন ও সৎকারের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মীসহ জরুরি সেবা কাজে যারা নিয়োজিত রয়েছেন, তাদেরও ধন্যবাদ জানান সরকার প্রধান।
বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৩:২৬ ৬১০ বার পঠিত #ঝুঁকিভাতা #নববর্ষ #প্রধান মন্ত্রী #বিশেষ সম্মানী