পবিত্র সরকার, সিলেট প্রতিনিধি বঙ্গ-নিউজঃ করোনাভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধের জনযুদ্ধে ‘ভালোবাসা-বন্ধুতায়’ সিলেটের সংস্কৃতিকর্মীরা।
শুরুটা ১৭ মার্চ। প্রস্তুতি, পরিকল্পনা আর সকলের সহযোগিতায় সিলেটের সংস্কৃতিকর্মীরা রাজপথে নেমে আসে ২২ মার্চ। শুরু করেছিলো পথচারীদের সাবান-পানি দিয়ে হাতধুয়ার ব্যবস্থা, নিম্ন অায়ের মানুষ ও তাঁদের পরিবারের জন্য মাস্ক, সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং গাড়ি, বাড়িসহ নিজে ও অন্যকে পরিস্কার রাখার জীবাণুনাশক ঔষধ, স্প্রে ইত্যাদি বিতরণ, যানবাহন জীবানুমুক্ত করা, গাড়ি-বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামুলক লিফলেট বিতরণ, মাইকিং ও স্টিকার সাঁটানো ইত্যাদি দিয়ে। লক্ষ্য ছিলো, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, সড়কে খাবার, সবজি ও ফল বিক্রেতা এবং তাদের পরিবার, ভ্যান, রিক্সা, অটোরিক্সাচালক, জরুরী সেবায় নিয়োজিত যানবাহন ও তার সাথে যুক্ত লোকবল, দায়িত্বরত পুলিশ এবং সাংবাদিকবৃন্দ।
দ্বিতীয় পর্যায়ের মানুষের ঘরে বসে চিকিৎসা সেবার ব্যাবস্থা করে। বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা ব্যাবস্থা চালু করা হয়।অালাদা অালাদা দুইটা প্যানেল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁদের নাম ও মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়। অনেকে তাঁদের কাছ থেকে সেবা গ্রহণও করেছেন। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। অারো চিকিৎসক যুক্ত হবে, বলে যানা যায়।
বাউলশিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের মধ্যে থেকে কয়েকজনকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। চাল, ডাল, তেল, ময়দা, পিঁয়াজ, লবন, অালু ও সাবান মিলিয়ে ৮ পদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস দেয়া হয়, যার সর্বমোট ওজন ২০ কেজি। বিষয়টি অতি সংবদনশীল হওয়ায় কারো নাম উল্লেখ্য করা হয়নি। খুবই গোপনে খাদ্য সামগ্রী তাঁদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়।
তৃতীয় ধাপে করোনাভাইরাস বিস্তাররোধে মানবদেহে ভিটামিন ও পুষ্টিমান নিশ্চিত করায় সহযোগিতা ও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে, সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের হাতে ২০০ পিস লাউ, ২০০ পিস কপি, ২০০ কেজি বেগুণ ও ৪০০ পিস লেবু তুলে দেওয়া হয়। এটিও একটি চলমান প্রক্রিয়া। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রতিবারের মতো নতুন নতুন কর্মসূচিও গ্রহণ করা হবে।
চতুর্থ পর্যায়ে কাজ শুরু করছে, মধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে খাদ্য পৌঁছে দেওয়া। যারা বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ও যারা লোকলজ্জার ভয়ে কারোর কাছে কিছু বলতে পারছে না,তাদের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সিলেটের সংস্কৃতি কর্মীরা, আজ( ১২ এপ্রিল) রবিবার সরেজমিনে দেখা যায় সিলেট মদন মহোন কলেজে,সংস্কৃতি কর্মীরা খাদ্য প্যাকেট জাতকরণ কাজে ব্যাস্ত। দেখা যায়, চাল,ডাল, আলু, পেয়াজ ও তৈল।
বিশিষ্ট নাট্যকার ও নাট্য নির্দেশক হুমায়ুন কবির জুয়েল বলেন
মধ্যবিত্ত ও নিম্ন অায়ের মানুষের ঘরে ঘরে খাবার, স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার যে কাজ, তার প্রস্তুতিও পুরোদমে চলছে। এক্ষেত্রেও যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের কৃতজ্ঞ চিত্ত স্মরণ করছি।
অামরা সকলে অাশাকরি, বাংলাদেশ অচিরেই করোনাভাইরাস মুক্ত হবে। কিন্তু, বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অাতংকিত হই। সঙ্গত কারণেই সবাইকে নিয়ে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে এখন প্রয়োজন স্বেচ্ছাশ্রম। তাই অামরা স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠনে মনোযোগ দিয়েছি। অনেকেই যোগাযোগ করেছেন, করছেন। সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে বেশ কয়েকজনকে চুড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয়েছে। অারো অনেকেই যুক্ত হবেন। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।
সবাই ভালো থাকবেন। নিরাপদ থাকবেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০:০০:২৭ ৮৬৪ বার পঠিত # #করোনাভাইরাস #সিলেট