স্বপন চক্রবর্তী, বঙ্গ-নিউজ: গত ৩০ জানুয়ারি নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তি শনাক্তের পর এই পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ভারতে।
দেশটিতে শুক্রবার ৪৭৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া, যাদের নিয়ে রোগীর সংখ্যা পৌছেছে ২ হাজার ৫৪৭ জনে।
ভারতে রোগীর সংখ্যার এই উল্লম্ফনের জন্য দিল্লিতে তাবলিগ জামাতের এক সমাবেশকে দায়ী করা হচ্ছে।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই সমাবেশে থাকা তাবলিগ সদস্যদের ৬৪৭ জনের দেহে ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে। গত দুই দিনে মারা যাওয়া ১২ জনও ওই সমাবেশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।
সংক্রমণের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে এগিয়ে আছে পাকিস্তান। দেশটিতে মোট ২ হাজার ৬৩৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে।
পাকিস্তানের দৈনিক ডন জানিয়েছে, দেশটিতে এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে দুইশ জনের মতো। এর মধ্যে পাঞ্জাবে নতুন ৮৪ জন নতুন রোগী পাওয়া গেছে, যা নিয়ে প্রদেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে।
আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলেও কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে পাকিস্তানে মৃত্যু ভারতের চেয়ে এখনও কম। পাকিস্তানে এ পর্যন্ত ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে, অন্যদিকে ভারতে মৃতের সংখ্যা ৬২।
বাংলাদেশেও গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ জন নতুন রোগী নিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬১ জনে। এই পর্যন্ত মারা গেছে ৬ জন। ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বদলে দিয়েছে জুমার নামাজে গা ঘেঁষাঘেষি করে দাঁড়ানোর চিত্র; শুক্রবার কমলাপুর রেলওয়ে মসজিদে সবাইকে দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ পড়তে দেখা যায়। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বদলে দিয়েছে জুমার নামাজে গা ঘেঁষাঘেষি করে দাঁড়ানোর চিত্র; শুক্রবার কমলাপুর রেলওয়ে মসজিদে সবাইকে দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ পড়তে দেখা যায়। দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কায় ১৫৬ জন (মৃত ৪), নেপালে ৬ জন, ভুটানে ৫ জন, মালদ্বীপে ১৯ জন, মিয়ানমারে ২০ জন (১ জন মৃত) কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে।
জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাত নাগাদ বিশ্বে নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ৬৬ হাজার ৭০৬ জন। মৃতের সংখ্যা ছিল ৫৬ হাজার ৭৬৭ জন এবং এই পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ লাখ ২৩ হাজার ৬৯৭ জন।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর তা যখন ইউরোপকে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল, তখন গত ১১ মার্চ একে বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে আখ্যায়িত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ইউরোপকে বিপর্যস্ত করে এখন যুক্তরাষ্ট্র হয়ে উঠেছে এই মহামারীর কেন্দ্রস্থল। বৃহস্পতিবার এক দিনে দেশটিতে ১ হাজার ১৬৯ জন রোগীর মৃত্যু ঘটে, ২৪ ঘণ্টায় এত প্রাণহানি এর আগে কোনো দেশেই দেখা যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা এরই মধ্যে আড়াই লাখ ছাড়িয়েছে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬ হাজার ছাড়িয়েছে।
নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের অস্থায়ী হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে এক কোভিড-১৯ রোগীকে। ছবি: রয়টার্সনিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের অস্থায়ী হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে এক কোভিড-১৯ রোগীকে। মৃতের সংখ্যা এখনও সর্বোচ্চ ইতালিতে, দেশটিতে ১৪ হাজার ৬৮১ জন মারা গেছে করোনাভাইরাসে। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১৯ হাজার।
স্পেনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯৩৫; দেশটিতে মোট আক্রান্ত ১ লাখ ১৭ হাজার।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৮৮ জনের মৃত্যু ঘটায় ফ্রান্সে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫০৭ জন। দেশটিতে আক্রান্ত ৫ হাজার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার জন।
মৃতের সংখ্যায় ইউরোপের আরেক দেশ যুক্তরাজ্যও ছাড়িয়েছে উৎসভূমি চীনকে। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ৬০৫ জন হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৮ হাজার।
চীনের মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৩২২ জন হয়েছে। তারপরেই রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরান, সেখানে ৩ হাজার ২৯৪ জনের মৃত্যু ঘটিয়েছে করোনাভাইরাস।
বাংলাদেশ সময়: ১২:০৯:৩৬ ৭৬৭ বার পঠিত # #করোনা ভাইরাস #মহামারি আকারে করোনা ভাইরাস #সারা বিশ্বে করোনা