মহাকবি মধুসূদনের প্রতি বিদ্যাসাগরের ভালবাসা-মোজাফফর বাবু

Home Page » সাহিত্য » মহাকবি মধুসূদনের প্রতি বিদ্যাসাগরের ভালবাসা-মোজাফফর বাবু
মঙ্গলবার, ১০ মার্চ ২০২০



ফাইল ছবি

সমাজে মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা,ভ্রাতৃত্ববোধ আন্তরিকতা, অথবা অন্যের সেবা অনুপস্থিত।অনেক আগের ঘটনা।উনবিংশ শতাব্দীতে মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসার একটি ঘটনা বর্ণনা করছি ।
সমাজসংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যার জন্ম ১৮২০ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে।তিনি প্রথমে সংস্কৃতে পরে ইংরেজীতে শিক্ষা গ্রহন করেন।মাত্র ১৯ বছর বয়সে ল’পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করায় তাকে বিদ্যাসাগর উপাধিতে ভুষিত করা হয়।পরবর্তীতে জনগণ এই মহাপন্ডিতকে দয়ার সাগর বলেও অভিহিত করেন।তার জীবনের একটি বাস্তব ঘটনা তুলে ধরা হলো।
বহুগুনের অধিকারী চতুর্দশপদী কবিতার জনক মাইকেল মধুসুদন দত্ত।১৮২৪ সালের ২৫শে জানুয়ারী সম্ভ্রান্ত কায়স্থ পরিবারে রাজ নারায়ন দত্তের ঘরে তিনি জন্ম গ্রহন করেন।জন্মের পরই তিনি আভিজাত্য ঐশ্বর্য দেখেছেন।তিনি বহু সাহিত্যের সৃষ্টি করছেন।তার মধ্যে অন্যতম “মেঘনাদ বধ”,”তিলোত্তমাসম্ভব”, “চতুর্দশপদী কবিতা”,”কৃষ্ণকুমারী”,”শর্মিষ্ঠা”।পাশ্চাত্য জীবন এবং ইংরেজী সাহিত্যে উদ্বুদ্ধ হউএ তিনি ১৮৪২ সালে খ্রিস্টধর্ম গ্রহন করেন ,নামের শেষে ‘মাইকেল’ উপাধি যোগ হয় ।যার ফলে পরিবার থেকে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়।তিনি ইংল্যান্ডে আইন পরতে যান,কিন্তু আবহাওয়া ও বর্ণবাদীতার কারনে সেখানে থাকতে পারেননি।পরে সেখান থেকে তিনি ফ্রান্সে যান।সেখানে গিয়ে তাও বিলাসীতাময় জীবন যাপনের জন্য তিনি অর্থকষ্টে ভোগেন।তার জীবনে আঁধার ঘনিয়ে আসে।এমনকি তাঁর স্ত্রী অর্থকষ্টে মারা যান।

বিদেশের মাটিতে ভারতবর্ষের একজন বাঙ্গালী কবি পরিবারের সাথে অর্থাভাবে অনাহারে আছেন এ খবর শুনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে উদ্বিগ্ন করে তোলেন।একজন কবি যার সাথে তাঁর কোনো জানাশোনা নেই,পরিচয় বা কোনো যোগাযোগ নেই , তাঁর এই দুরবস্থা , তাঁকে ভাবিয়ে তোলে ও পীড়া দেয়।তিনি খোজখবর নিলেন,মানি অর্ডার করে টাকা পাঠিয়ে দিলেন।একমাত্র ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কারণেই , মাইকেল মধুসুদন দত্ত আইন পাশ করে দেশে ফিরে আসতে সক্ষম হন।

বর্তমান সমাজে আমাদের নিজেদের ভাই-বোন বিপদে পড়লেও খিড়কি দরজা বন্ধ করে রাখি,যাতে কেউ টাকা না চায়।আবাএ কেউ কেউ কিছু টাকা দিয়ে বড়াই করে।অথচ মাইকেল মধুসুদন দত্ত টাকা পেয়ে বলেছিলেন,” কে এই বিদ্যাসাগর ? যাকে আমি চিনিনা,,জানিনা, কখনো সাক্ষাত হয়নি ।কে এই মহামানব যিনি আমাকে দুর্দিনে টাকা পাঠালেন।তিনি তো মানব জাতির গর্ব।“

বর্তমান সমাজে আন্তরিকতা,ভালোবাসার বড়ই অভাব।বন্ধুর পাশে ভালো সময়ে না থাকলে ও,তার দুঃখ ও বিপদে এগিয়ে যাওয়া আমাদের অবশ্যই কর্তব্য।

মোজাফফর বাবু

বাংলাদেশ সময়: ২০:৪৪:২৯   ৯৯৩ বার পঠিত   #  #




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সাহিত্য’র আরও খবর


সাধক কবি রামপ্রসাদ সেন: স্বপন চক্রবর্তী
ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা “আমি তো গাঁয়ের মেয়ে ”
৫০ বছরের গৌরব নিয়ে জাবির বাংলা বিভাগ বিশাল ‘সুবর্ণ জয়ন্তী’ উৎসব আয়োজন করেছে
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা- ‘তোমার খোঁজে ‘
অতুলপ্রসাদ সেন: ৩য় (শেষ ) পর্ব-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন;পর্ব ২-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন-স্বপন চক্রবর্তী
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা ” যাবে দাদু ভাই ?”
বাদল দিনে- হাসান মিয়া
ইমাম শিকদারের কবিতা ‘ছোট্ট শিশু’

আর্কাইভ