থ্রি ব্যান রেডু -

Home Page » সাহিত্য » থ্রি ব্যান রেডু -
মঙ্গলবার, ১০ মার্চ ২০২০



------শখে গুতায়! বনমালী রেডু বাজায়!

‘ভাত নাই খাইতো, পাটি আনে হুইতো।’ নিজের গাইডের ট্যাকা দিয়া ব্যাডারী কিন্যিয়া পরের রেডু বাজাইয়া ছায়াছবির গায়ান হুনতে ভাব তার উৎলায়!! একটা না, দুইডা না! তিন-তিন’ডা ব্যাডারী লাগে রেডু বাজাইতে! থ্রি-ব্যান রেডু। ঘাসের মতো ব্যাডারী খায়! লাগাতার বাজাইলে বিয়ানে ব্যাডারী ভরলে হাঞ্জাবালাই শেষ হয়।

কুনুমতে চের-চের কইরা খাওলা-রাইত পার হইলেও ছায়াছবি গায়ানের নিশিতি অধিবেশন হুনতে গিয়া ব্যাডারী-ব্যাডারী বাইরা-বাইরি কইরা রেডু’তে কান গালাইয়া শখ মিডাইতে অয়। শেষ-মেশ ঠিকমতো যখন হুনা যায় না তখন বনমালী সাউন’ বাড়াইতে গিয়া রেডু’তে থাপ্পর মারে। রেডু’র মালিক করমালী তখন বনমালীরে কুদ্যান দিয়া কয়- এই থাপ্র্যাছ কেরে? রেডু’র কি দোষ! তর ব্যাডারীই ত নকল? বনমালী আবারও ব্যাডারী কিনতে যায়। শখে তারে গুতায়। আর করমালী হাসতে হাসতে কয়- ‘মনরে মন সখকর, পইসা নাই তে কর্জ্জ কর।’

বনমালী আর করমালী ভাটি ময়ালে এক উডানে শিয়ান হওয়া বাল্যবন্ধু। এখন তারা একই গাঙে একই নাউয়ের জাল্যুয়া। বাস্যিয়া এ্যমন্তা হগল সময়েই জাল লইয়া কাউছালি। মাছ মারে আর গাঁয়ে গাঁয়ে ঘুইরা চাউলে-খুদে বেচে। তাতেই কোনমতে চলে সংসার।

বনমালীর মা নিয়া সংসার আর করমালীর বউ নিয়া সংসার। করমালীর নতুন সংসারে খরচা-পাতি বেশি। তাই বিয়ার যৌতুকে পাওয়া রেডুর ব্যাডারী কিনতে পারে না। বনমালীর শখে ব্যাডারী কিনে আর এই সুযোগে করমালীর বউ ব্যাডারী বানিজ্য করে। করমালীর বউ তিনখান নয়া ব্যাডারীর মাঝে দুইখান পুরান চালাইয়া দেয়। বনমালী টের পায় না। দিন-রাইত করমালীর লগে গাঙে জালবায়, গায়ান হুনে আর ব্যাডারী কিনে। আয়রুজি যা হয়। ব্যাডারী আর মা’য়ের তলে খরচ করে। বনমালীর এক শখ, ছায়াছবির গায়ান হুনা। সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, এন্ড্রুকিশোর না চিনলেও গায়ইয়াদের গলার সুর হে রাগীণিতেই চিনে। কত গায়ানের কলি যে বনমালীর মগজে মননে কিলবিল করে তা রেডু বন্ধ করলেই বুঝা যায়। এক্কান গায়ান তার মুখ ছাড়ে না- ‘কারও আপন হইতে পারলে না অন্তর, আমার ভালোবাসার শূন্যভিটায় কেউ বাঁধলো না ঘর…।’ করমালীর অত শখ নাই। গানের চ্য এডব্যাডাইস তার ভালা লাগে। রেডুতে আলকাতরার বিজ্ঞাপন হুনলে করমালীর মনে পরে যায় নাউ হইর কইরা তারতেল দেওয়ার কথা । আর বনমালী তখন রাগে রেডুর সেন্টার বদলায় ছায়াছবির গান হুনতে। এ নিয়া মাঝে মাঝে দুইজনে কাজ্যিয়াও হয়। রেডুতে খবর হুনলে বনমালীর রাগ উডে। তার এক কথা- মাছ বেচার খবর নাই এই খবর হুন্যিয়া লাভ কিতা? গান হুনলে ত শখ মিডে। রেডু করমালীর হইলেও নাউয়ের মাঝে মাৎবরী বনমালীর। আর বাড়িতে গেলে করমালীর বউয়ের।

চলবে…..

লেখক

সজল কান্তি সরকার  , লেখক ও গবেষক  ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩২:১৫   ১০০৫ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সাহিত্য’র আরও খবর


সাধক কবি রামপ্রসাদ সেন: স্বপন চক্রবর্তী
ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা “আমি তো গাঁয়ের মেয়ে ”
৫০ বছরের গৌরব নিয়ে জাবির বাংলা বিভাগ বিশাল ‘সুবর্ণ জয়ন্তী’ উৎসব আয়োজন করেছে
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা- ‘তোমার খোঁজে ‘
অতুলপ্রসাদ সেন: ৩য় (শেষ ) পর্ব-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন;পর্ব ২-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন-স্বপন চক্রবর্তী
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা ” যাবে দাদু ভাই ?”
বাদল দিনে- হাসান মিয়া
ইমাম শিকদারের কবিতা ‘ছোট্ট শিশু’

আর্কাইভ