বঙ্গ-নিউজঃ বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, বাংলাদেশের প্রায় সবগুলো প্রতিবেশী দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তের তথ্য পাওয়া গেছে। করোনা আক্রান্ত ভারত এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে এ দেশে মানুষের অবাধ যাতায়াত রয়েছে। এসব কারণে বাংলাদেশও করোনার আক্রমণ-প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া করোনা প্রতিরোধে এবং চিহ্নিতকরণে নেয়া পদক্ষেপও যথেষ্ট ও সন্তোষজনক নয়। এটি আশঙ্কাজনক।
বুধবার ঢাকার কেরানীগঞ্জে পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর বাংলাদেশে চীনা কোম্পানিগুলোর বড় প্রকল্পগুলোতে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে জানাতে জানাতে এ সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিরা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা বিমানবন্দরে তা যেভাবে যাচাই করা হচ্ছে সেটি অবৈজ্ঞানিক ও ত্রুটিপূর্ণ। শুধু চীন থেকে আসা ব্যক্তিদের স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। এটি বোকামি। সবাইকেই স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা উচিত। কেননা নতুন করে করোনা আক্রান্তদের ৯৫ শতাংশই চীনের বাইরের দেশগুলোর। ৬০টির মত দেশে এটি ছড়িয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে ঝুঁকি বা ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে এখন বড় সভা-সমাবেশ আয়োজন করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে এখনও কোনো চীনা নাগরিক করোনা আক্রান্ত হয়নি। চীনে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার আগে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পে সরকারিভাবে প্রায় এক হাজার ৭০০ চীনা কর্মী কাজ করতো। এখন কাজ করছে এক হাজার ৩৬৫ জন। অর্থাৎ ৩৩৫ জন চীনে গিয়ে আর ফিরতে পারছে না। এর বাইরে বেসরকারি পর্যায়েও বেশ কিছু নাগরিক ছুটিতে গিয়ে আর ফিরতে পারেনি।
লি জিমিং বলেন, বাংলাদেশে অবস্থান করা চীনা কর্মীদের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তা আর বাড়াচ্ছে না সরকার। এমনিতেই প্রকল্পগুলোতে চীনা কর্মী সংকট রয়েছে। তার উপর বাংলাদেশে থাকা কর্মীদেরও যদি ফেরত যেতে বাধ্য করা হয় তাহলে প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি আরও ধীর ও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে থাকা চীনা কর্মীদের ভিসার মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়ানোর অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি বলেন, করোনা ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে অন অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধে বাংলাদেশ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তা যৌক্তিক। এখন এটি পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে। কেননা চীন একদিকে আক্রান্ত এলাকাকে আলাদা করে রেখেছে অন্যদিকে এ রোগের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে বিজয়ের পথে। পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। পদ্মা সেতু ও পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে এরইমধ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে চলমান প্রকল্পগুলোর গতিশীলতা ঠিক রাখতে চীনের নাগরিকদের আসা প্রয়োজন।
সাংবাদিক সম্মেলনে আরও জানানো হয়, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে নিশ্চিতে পদ্ম সেতু ও রেল সংযোগ প্রকল্পগুলোতে কর্মকর্তাদের শারীরিক অবস্থার প্রতিদিনের রিপোর্টিং সিস্টেম খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে প্রকল্প অফিসগুলো প্রতিদিন দুইবার পরিষ্কার করা হয়। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বুড়িগঙ্গা নদীর কাছে একটি অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:০৪:০০ ৪৭৫ বার পঠিত