সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের সুপার হিরো,জাতির জনকের জন্মশতবর্ষ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় উদযাপন হচ্ছে। চলছে নানা জল্পনা কল্পনা ও প্রস্তুতি। আগামী ১৭ মার্চ শেখ মুজিবের জন্মদিন উপলক্ষে শুরু হবে এই মহাযজ্ঞের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। আয়োজন শেষ মহান স্বাধীনতা দিবসের দিন।সারা বছরব্যাপী রয়েছে নানান পরিকল্পনা । মুজিব বর্ষকে আন্তর্জাতিক মানের আয়োজনে পৌঁছাবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংকলিত ভাষন থেকে জানা গেছে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন , ‘বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অন্যতম উন্নয়নশীল দেশ। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্ম শত বার্ষিকী আমরা উদযাপন করবো। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তি। আমরা ২০২০ থেকে ২০২১ সালকে ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। আমরা এই সময়টাকে এমন ভাবে কাজে লাগাতে চাই- বাংলাদেশ যেনো ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে ওঠে।’
সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে মুজিব বর্ষ উদ্যাপনের নানা পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে, বেশ একটা কর্মযজ্ঞ চলছে। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে তা যদি জীবনে কাজে লাগানো যায়, তা হবে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা ও স্মরণ করার শ্রেষ্ঠ উপায়। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এই স্বাধীন দেশে মানুষ যখন পেট ভরে খেতে পাবে, পাবে মর্যাদাপূর্ণ জীবন; তখনই শুধু এই লাখো শহীদের আত্মা তৃপ্তি পাবে।’
মুজিব বর্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি দেশটির অনেক মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন। দিল্লি, কলকাতা ও আগরতলাতেও পৃথক অনুষ্ঠান হবে। আর ঢাকায় অন্তত ৩৯ জন বিশ্ব নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। তাদের অনেকে ইতোমধ্যে আসার জন্য সম্মতি জানিয়েছেন।
বৈদেশিক সরকার, সুশীলসমাজ এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে বিদেশেও মুজিববর্ষ উদযাপন করা হবে।
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশের ক্রীড়াসংস্থা বিসিবি-বাফুফে হাতে নিয়েছে নানা কর্মসূচী। এরই অংশ হিসেবে থাকছে নানান চমক। এই চমক হিসেবে ঢাকায় আসবেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনা। এছাড়াও আসবে নামি-দামি অনেক খেলোয়াড়। অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বের নামি-দামি খেয়োয়াড় নিয়ে বিশেষ ক্রিকেট ম্যাচ।
সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনে ১০২ সদস্যের একটি জাতীয় কমিটি এবং ৬১ সদস্যের একটি বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটিতে বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা ছাড়াও স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা আছেন সদস্য হিসেবে।
আওয়ামী লীগের গত সরকারের দশজন মন্ত্রী, বর্তমান সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, ঢাকার দুই মেয়র, তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশ মহাপরিদর্শক, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, দুজন সাবেক গভর্নর, বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধি এবং বেশ কয়েকজন শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীকে রাখা হয়েছে এই কমিটিতে।
সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীকে এ কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনিই জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকায় থাকবেন।
কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিব এবং সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানরা ছাড়াও শিক্ষক, স্থপতি, কবি, লেখক, প্রকাশক, সাংবাদিক, গায়ক, অভিনেতা, ক্রীড়াবিদ ও সাংস্কৃতিক কর্মীকে এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনে প্রয়োজনীয় নীতি পরিকল্পনা ও কর্মসূচি অনুমোদনের পাশাপাশি বাস্তবায়ন কমিটিকে পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দেবে জাতীয় কমিটি।
আর বাস্তবায়ন কমিটি সার্বিক পরিকল্পনা ও বাজেট প্রণয়ন এবং জাতীয় কমিটির অনুমোদন নিয়ে তা বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকবে।
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেন শেখ মুজিবুর রহমান। কালক্রমে তার হাত ধরেই ১৯৭১ সালে বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ।
২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মের শত বছর পূর্ণ হবে।
বঙ্গবন্ধু কে নিয়ে বিশ্ববরেণ্য দার্শনিক ও কবিগণ অনেক উক্তি লিখেছেন
আমি হিমালয় দেখিনি কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব এবং সাহসিকতায় তিনিই হিমালয়।
– ফিদেল কাস্ত্রো
২।মুজিব হত্যার পর বাঙালীদের আর বিশ্বাস করা যায় না, যারা মুজিবকে হত্যা করেছে তারা যেকোন জঘন্য কাজ করতে পারে।
– উইলিবান্ট
৩। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডে বাঙলাদেশই শুধু এতিম হয় নি বিশ্ববাসী হারিয়েছে একজন মহান সন্তানকে।
– জেমসলামন্ড
৪। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হচ্ছেন সমাজতন্ত্র প্রতীষ্ঠার সংগ্রামের প্রথম শহীদ। তাই তিনি অমর।
– সাদ্দাম হোসেন..
সর্বশেষ বলা যায় বাঙালি জাতির ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা মানুষ শেখ মুজিব।যতদিন বাঙালি থাকবে ততদিন বেঁচে ধাকবেন তিনি বাঙালির অন্তরে।তিনি অমর।
গুলশান আরা রুবী
কবি ও প্রাবন্ধিক
বাংলাদেশ সময়: ২১:২০:২৪ ৮৮৩ বার পঠিত #গুলশানআরারুবী মুজিববর্ষ