বঙ্গ-নিউজঃ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির নিয়োগ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) দিলেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের দায়িত্ব মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর। তবে এ দুই শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানেই লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা হওয়ার পরও নিয়োগ কাজ ঝুলে আছে। কোনো কোনো মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও নেওয়া হচ্ছে না পরীক্ষা।
নিয়োগ বিধি এবং মামলা জটিলতার কারণেও অনেক শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এসব নিয়োগ বিধি সংশোধন ও মামলা নিষ্পত্তির প্রাথমিক কাজ শেষ করতেই কেটে যাচ্ছে বহু সময়। এদিকে ফি দিয়ে আবেদন করেও পরীক্ষা না দিয়েই চাকরির বয়স শেষ হচ্ছে অসংখ্য প্রার্থীর। ফলে তাদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ ও হতাশা।
তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগে আলাদা কমিশন গঠনে সরকারের বিভিন্ন ফোরামে ইতোমধ্যে আলোচনা হয়েছে। এসব পদে নিয়োগ পিএসসির অধীনে করা যায় কিনা তা নিয়ে গত কয়েক মাস জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পর্যালোচনা করলেও সে উদ্যোগ ভেস্তে গেছে। ফলে পুরোনো রীতিতেই চলছে এ নিয়োগ।
২০১৮ সালের ১১ জুলাই এক হাজার ১৬৬টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল খাদ্য অধিদপ্তর। এসব পদে প্রায় ১৪ লাখ চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেন। এ পরীক্ষার ফি বাবদ খাদ্য অধিদপ্তরের বিপুল অর্থ আয় হয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দেড় বছর পরও পরীক্ষার তারিখ সম্পর্কে কিছুই বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। একইভাবে সমাজসেবা অধিদপ্তর ২০১৮ সালের ৯ জুলাই ৪৬৩টি সমাজকর্মী (ইউনিয়ন) পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এক বছর পর ২০১৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর এসব পদে আবেদনকারী প্রায় আট লাখ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু পরীক্ষার কয়েকদিন আগে অনিয়মের আশঙ্কায় তা স্থগিত করে সমাজসেবা অধিদপ্তর। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ২০১৮ সালে ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৪১টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু পরীক্ষা কবে হবে তা অনিশ্চিত। ২০১৮ সালের ২৭ আগস্ট বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) বিজ্ঞপ্তি দেওয়া ১২টির মধ্যে ৯ ক্যাটাগরির সব পদে নিয়োগ হলেও বাকি তিনটির প্রায় ২৫টি পদে সব কাজ সম্পন্ন হলেও চলমান ভাইভা স্থগিত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া রেলপথ, ভূমি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত, শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে তীব্র জনবল সংকট থাকলেও নানা কারণে ঝুলে আছে হাজার হাজার প্রার্থীর নিয়োগ প্রক্রিয়া।
তবে পরীক্ষা না হলেও এসব প্রতিষ্ঠানে প্রতি আবেদনের জন্য বেকার চাকরিপ্রার্থীদের গুনতে হচ্ছে কমপক্ষে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা। অনেক প্রতিষ্ঠান চাকরির আবেদনের জন্য ফি নিচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। ১ জানুয়ারি প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডে ১৬ গ্রেডের চাকরির আবেদন ফি উল্লেখ করা হয়েছে ৬০০ টাকা। আবার ২ জানুয়ারি প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন ১৪ গ্রেডের চাকরির আবেদন ফি নির্ধারণ করেছে ৫৬০ টাকা। অথচ এই আবেদন ফি দিয়ে আবেদন করা বেকার প্রার্থীদের পক্ষে অসম্ভব। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বেশিরভাগ চাকরির পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন অনুষদ বা বিভাগ ও বুয়েটের মাধ্যমে নেওয়া হয়। এ জন্য ঢাবিকে প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য ৬০০ টাকা এবং বুয়েটকে এক হাজার টাকা দিতে হয়। পরীক্ষা গ্রহণে বিপুল পরিমাণ টাকা লেনদেন করায় অনিয়মেরও অভিযোগ রয়েছে। এদিকে সম্প্রতি পাবলিক বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়ার নিয়ম বাতিল করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে এ দুই শ্রেণির চাকরির পরীক্ষা কার্যক্রম আরও স্থবির হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী কেএম আনোয়ার হোসেন সমকালকে বলেন, আগেও এভাবে ফি নেওয়া হতো। আগের ধারাবাহিকতায় এবারও ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বিষয়টি নজরে আসায় পরে ফি কমানোর বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।
অথচ ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শূন্য পদ পূরণসংক্রান্ত এক সভায় সিদ্ধান্ত হয় মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণযোগ্য পদগুলোতে বিধি বা আইনগত জটিলতা না থাকলে ১৫ দিনের মধ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। বিভিন্ন ক্যাটাগরির সরাসরি নিয়োগযোগ্য শূন্য পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগে অপেক্ষমাণ ছাড়পত্রের প্রস্তাব সাত দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। এ ছাড়া আইনগত জটিলতা না থাকলে ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়ার সব কাজ শেষ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে জানাতে বলা হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার শূন্য পদের তথ্য এবং পদ পূরণের জন্য কর্মপরিকল্পনা চাওয়া হয়। ২০১৯ সালের ৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তৎকালীন মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান সংশ্নিষ্ট সব দপ্তরে এ-সংক্রান্ত চিঠি দেন।
স্থবিরতার নেপথ্যে : খাদ্য অধিদপ্তর ১৪ লাখ চাকরিপ্রার্থীর আবেদন পাওয়ার পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে পরীক্ষার ব্যয় ব্যবস্থাপনার জন্য অর্থ ছাড় ও বিধিগত বিষয়ে মতামত চায়। এরপর খাদ্য অধিদপ্তরকে নিয়োগ বিধি সংশোধন ও অর্থ ছাড়ের বিষয়ে পুনঃপ্রস্তাব পাঠানোর কথা বলা হয়। কিন্তু এখনও সেই পুনঃপ্রস্তাব দেওয়া হয়নি। আর সমাজসেবা অধিদপ্তর সমাজকর্মী (ইউনিয়ন) পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগকে। কিন্তু এ পদে প্রায় আট লাখ প্রার্থী আবেদন করায় এই পরীক্ষা নেওয়ার জনবল ফার্মাসি বিভাগের নেই বলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন ফার্মাসি অনুষদের ডিন। চিঠিতে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণে আশঙ্কা প্রকাশ করায় পরে এ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। ব্যানবেইসে নিয়োগ কার্যক্রমের মৌখিক পরীক্ষা চলার সময় নিয়োগ বিধির জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় জনপ্রশাসনের কাছে মতামত চেয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ ঝুলে থাকা এই পরীক্ষা কবে হবে, তা বলতে পারেননি। তিনি বলেন, ১৪ লাখ প্রার্থীর পরীক্ষা নেওয়া অনেক কঠিন কাজ। এজন্য কাজ চলছে, প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেই পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. সঞ্জীব সূত্রধর বলেন, হাইকোর্টের মামলার কারণে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত আছে। মামলার শুনানি চলছে। রায় হলে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিকে আবেদনের পর দীর্ঘদিনেও পরীক্ষা না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে এক প্রার্থী মো. নূরুল ফেসবুকে লিখেছেন, খাদ্য অধিদপ্তরের পরীক্ষা কি আর হবে না? কেউ নিশ্চিত জানলে বলেন। আনোয়ার হোসেন নামে অন্য একজন নূরুলের স্ট্যাটাসে কমেন্টস করেছেন, মনে হয় হবে না, এবারও আবেদনের টাকা জলে গেল। আরেক প্রার্থী পারভীন খন্দকার লিখেছেন, খাবার পেটের মধ্যে হজম হয়ে গেছে, আবার খিদে লাগলে তারপর মনে হয় খাবে। একইভাবে সমাজসেবার ইউনিয়ন সমাজকর্মী পরীক্ষার তারিখ জানতে ফেসবুকে স্টাট্যাস দিয়েছেন একাধিক প্রার্থী। এক প্রার্থী ইয়াছিন রিয়াদ লিখেছেন, আবেদন যারা করেছেন, তারা মরার পর ইউনিয়ন সমাজকর্মী পরীক্ষা হবে।
নতুন কমিশন গঠনের প্রস্তাব :দীর্ঘদিনের এ জটিলতা দূর করতে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে অস্থায়ী জনবল নিয়োগের কার্যক্রম চালু করে সরকার। এতেও সুফল না আসায় গত বছরের ২৪ অক্টোবর অর্থ বিভাগ এক পরিপত্র জারির মাধ্যমে এ কার্যক্রম বাতিল করে। এ ছাড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়- বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর ও সংস্থায় বেতন গ্রেড ১৩ থেকে ২০ (পূর্বের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি) পর্যন্ত পদে সরকারি কর্মচারী নিয়োগের জন্য পাবলিক বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাছাই কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না।
তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতি বন্ধ ও আবেদনের ফি কমানোর উদ্দেশ্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এ-সংক্রান্ত সারসংক্ষেপে বলেন, এ দুই শ্রেণির জনবল নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশনের অধীনে একটি পৃথক অনুবিভাগ বা কমিশন গঠন করা যেতে পারে। পিএসসি বছরভিত্তিক একটি সমন্বিত পরীক্ষা নিয়ে এদের নিয়োগের লক্ষ্যে পদভিত্তিক একটি পুল গঠন করতে পারে। মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এবং এর অধীনস্থ দপ্তর বা সংস্থা চাহিদা অনুযায়ী কর্মচারী নিয়োগের জন্য সুপারিশ করবে। বিষয়টিতে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন বলে সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পিএসসিকে চিঠি দেয় জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয়। এরপর এ বিষয়ে কাজও শুরু করে পিএসসি। ইতোমধ্যে প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন করে এ-সংক্রান্ত অনুবিভাগ গঠনে জনবলের চাহিদা, সংশ্নিষ্ট আইন ও বিধি সংশোধনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে চিঠি দিয়েছেন পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক।
এ বিষয়ে ড. মোহাম্মদ সাদিক সমকালকে বলেন, কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে পর্যালোচনা শেষে জনপ্রশাসনে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এখন জনপ্রশাসন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আলাদা জনবল নিয়োগ এবং সংশ্নিষ্ট আইন ও বিধি সংশোধন করলে পিএসসি কাজ করতে পারবে।
তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, পিএসসি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়। কিন্তু তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ পিএসসির মাধ্যমে আনা ঠিক হবে না। এতে পিএসসির মান অনেক নিচে নেবে যাবে। কাজের জটিলতাও বাড়বে। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ স্বচ্ছ করার জন্য বিকল্প পথ বের করা দরকার।
জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগে পিএসসিকে যুক্ত করলে দুর্নীতি কমবে, কিন্তু অনেক ধরনের জটিলতায় দীর্ঘসূত্রতা বাড়বে। পিএসসি একটি বিসিএস শেষ করতেই তিন থেকে সাড়ে তিন বছর সময় নিচ্ছে। এজন্য পিএসসি যথেষ্ট চাপের মধ্যেও রয়েছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আলাদা অনুবিভাগ হলেও কমিশন একটাই থাকছে, সিদ্ধান্তও এক জায়গা থেকে হবে। এ দুই শ্রেণিতে পদের নামও অনেক। নিয়োগের ধরন রয়েছে ওয়ার্ড ও অঞ্চল পর্যায়ে। শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পদমর্যাদা নিয়েও রয়েছে অনেক জটিলতা। এ ছাড়া তৃতীয় শ্রেণির পদে কোনো কোনো গ্রেড এখনও মীমাংসিত নয়। তাদের গ্রেড ও শিক্ষাগত যোগ্যতাও এক নয়। আর চতুর্থ শ্রেণির পদ কোনো ক্লারিক্যাল জব নয়। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকে অষ্টম বা দশম শ্রেণি পাস। পর্যবেক্ষকদের প্রশ্ন, পিএসসি এদের কী পরীক্ষা নেবে!
এর আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে পৃথক কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এ ছাড়া শূন্য পদ পূরণের কাজ ত্বরান্বিত করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। ইতিবাচকভাবে কাজ করলেও এটি শুরু করতে চার থেকে পাঁচ বছর লাগবে।
পৃথক কমিশন বা অনুবিভাগই সমাধান : বর্তমানে রাজস্ব খাতে অনুমোদিত পদের সংখ্যা প্রায় ১৮ লাখ। এর মধ্যে সাড়ে ১০ লাখই তৃতীয় শ্রেণির। অর্থাৎ, প্রতি ১০০ সরকারি কর্মচারীর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণিরই ৬১ জন। এর বাইরে প্রথম শ্রেণির ১২, দ্বিতীয় শ্রেণির ৯ ও চতুর্থ শ্রেণির ১৮ জন। ১৮ লাখ অনুমোদিত পদের মধ্যে প্রায় চার লাখই শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে আবার দুই লাখই তৃতীয় শ্রেণির পদ। তাই তৃতীয় শ্রেণির বিপুলসংখ্যক কর্মচারী নিয়োগে পৃথক কমিশন বা অনুবিভাগ থাকাই যুক্তিযুক্ত বলে মনে করছেন জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা।
পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে দুটি পিএসসি ছিল। পিএসসি-১-এ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারী এবং পিএসসি-২-এর মাধ্যমে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ হতো। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ ছিল মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর অধীনে। ১৯৭৮ সালে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে দুটি পিএসসি বিলুপ্ত করে বর্তমান পিএসসি গঠন করা হয়। ফলে আগের মতো নিয়োগ পদ্ধতি চালু করলে ভালোই হবে। তিনি বলেন, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ পিএসসির মাধ্যমে হলে নিয়োগকেন্দ্রিক দুর্নীতি অনেকটাই দূর হবে। আর নিয়োগ-সংক্রান্ত অন্য জটিলতাগুলো আগের মতোই জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয় সমাধান করবে। পিএসসি শুধু নিয়োগের কাজ করবে। এজন্য আলাদা কিছু জনবল নিয়োগ দিলেই হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২:১১:১০ ১১৭১ বার পঠিত # #চাকরি #জটিলতা #সরকারি