ভাংগায় আন্তঃজেলা ডাকাতের সদস্য সহ গ্রেফতার-২৩ মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য

Home Page » প্রথমপাতা » ভাংগায় আন্তঃজেলা ডাকাতের সদস্য সহ গ্রেফতার-২৩ মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২০



প্রতিকী ছবি

ব্যুরো চিফ, ফরিদপুরঃ
ফরিদপুরের ভাংগায় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য সহ ২৩ জন ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে ভাঙ্গা থানা পুলিশ। তাদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে ১১ জন। গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসে লোকচক্ষুর আড়ালে ঘটানো একাধিক ঘটনার চাঞ্চল্যকর তথ্যসমূহ। বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
জানাযায়, সম্প্রতি ভাঙ্গা উপজেলা ও আশপাশের এলাকাজুড়ে বেশ কয়েকটি চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এতে আহত, ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে করুনাবস্থার শিকার হোন ডাকাতদের কবলে পড়া ভুক্তভোগীরা। ডাকাতদের ভয়ে প্রথমে থানায় অভিযোগ না করলেও কাঙ্খিত বিচারের আশ্বাস পেয়ে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় থানায় কয়েকটি মামলা করা হয়। গত তিন জানুয়ারী গ্রেফতার করা হয় কালু মাতুব্বর (২৮) নামক এক ডাকাতকে।
পুলিশ সুত্রে, সর্বশেষ ২৯ ডিসেম্বর ভাঙ্গা উপজেলার ভদ্রকান্দা গ্রামের সুজন কাজীর বাড়ীতে ডাকাতি করার পরিকল্পনা হয় বাইশ রশি বাজারে হিরুর মুদি দোকানে। হিরুর কথামতে রাত প্রায় ১১টার সময় তিন ডাকাত বাইশ রশি থেকে রওনা দেয়। তারা প্রায় ১২টার সময় সুজন কাজীর বাড়ীর পেছনে মেহগনি বাগানে অবস্থান করে। কালা, নাজমুল, অহিদুল, বিপ্লব সহ ৬ জনের সংঘবদ্ধ একটি দলের পরিকল্পনায় ৪জন ডাকাত মুখোশ পড়ে প্রায় ১টার সময় রামদা, শাবল, লাঠি, ছ্যানদা সহকারে সুজন কাজীর বাড়ীর জানালার গ্রিল ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে। সেখানে প্রায় ঘন্টাব্যাপী ডাকাতি চালানোর পরে অস্ত্রেরমুখে জিম্মি করে সুজনের সহায়তায় তার বড় ভাই ওমর কাজীর ঘরে প্রবেশ করে। দুই ভাইয়ের ঘর থেকে কয়েকটি মুঠোফোন, নগদ টাকা, চেইন, আংটি, কম্বল লুটে নেয় সংঘবদ্ধ দলটি।
পুলিশ সুত্রে আরও জানাযায়, ভদ্রকান্দা গ্রামে ডাকাতির আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সুধিন সরকার মঙ্গলের বাড়ীতে ডাকাতি করার পরিকল্পনা হয় মাদারীপুর নতুন বাসষ্ট্যান্ডে একটি চায়ের দোকানে। দিবাগত রাত প্রায় সাড়ে ১২টার সময় ভাঙ্গা গোল চত্বরে আসাদ, সুকদেব, ওয়াইচ, হাসান ও আলম উপস্থিত হয়। ওয়াইচের কথামতে ডাকাতির জন্য তারা হাটতে হাটতে মঙ্গলের বাড়ীর দক্ষিণপাশে ফাঁকা জমিতে যায়। সেখানে মুরগী মোস্তফা, লায়েক এবং স¤্রাট অপেক্ষা করছিল। কিভাবে ডাকাতি করা হবে সে বিষয়ে পরামর্শ শেষে মুখোশ পড়ে সংঘবদ্ধ দলটি ২টা থেকে ৩টার মধ্যে মঙ্গলের বাড়ীতে অবস্থান নেয়। বাড়ীর পশ্চিম পার্শ্বের জানালার গ্রিল ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে প্রায় ঘন্টাব্যাপী ডাকাতি চালিয়ে স্বর্ণালংকার, টাকা লুট করে পূনরায় ফাঁকা জমিতে যায় সংঘবদ্ধ দলটি।
ডাকাতী কান্ডের ঘটনায় বেরিয়ে আসে আরেক নির্মম চাঞ্চল্যকর ঘটনা। রাতের আধাঁরে নিশাচর হিং¯্র প্রাণী যেমন হন্য হয়ে ওঠে শিকারের সন্ধানে। শিকার শেষে দিনের আলোয় নিমজ্জিত হয়ে যায় গভীর অরণ্যে। তেমনি ডাকাতেরা হায়েনার দলের মত দল বেধেঁ মেতে ওঠে হিং¯্র লিলায়। এমন একজন আলম বেপারী ওরফে গাল কাটা লিটন। লিটন একাধিক ডাকাতির সময়ে হায়েনার মত নারীদের ওপর থাবা মেরে ধর্ষণের পর হত্যা করে। এরপরে হুমকি দিয়ে ডাকাতের দল বিচ্ছিন্ন হয়ে যে যার মত করে গাঁ ঢাকা দেয়। ঘটনাটি মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানাধীন এলাকায়। এসব চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ডাকাতি আতঙ্ক জনমনে ছড়িয়ে পড়লে নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন।

অফিসার ইনচার্জ ভাঙ্গা থানা
থানার ওসি মোঃ শফিকুর রহমান জানায়, গত সেপ্টেম্বর ২০১৯ থেকে জানুয়ারী ২০২০ এর প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ডাকাতির ঘটনায়, শুরু হয় অভিযান। একাধিক কৌশল অবলম্বন করে পুলিশকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করে নজরদারী বাড়ানো হয়। কালুকে গ্রেফতারের পর তার দেয়া তথ্যমতে ডাকাতদের গ্রেফতারের জন্য একাধিক থানার বর্তমান এবং সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের সহযোগীতা নেয় ভাঙ্গা থানা পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তি ও কৌশল অবলম্বন করে চলমান অভিযানে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য সহ ২৩ জন ডাকাতকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় থানা পুলিশ। এর মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দেয় ১১ জন। তাদের দেয়া জবানবন্দিতে একে একে বেরিয়ে আসে দস্যুতা, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতী সহ নানান অপকর্মের দূর্ধর্ষ ঘটনা।
এক আতঙ্কের নাম ডাকাত। আর পুলিশকে হতে হবে ডাকাতদের আতঙ্ক। ডাকাত, অপরাধী ও তাদের গড ফাদারদের জড়ে-মূলে উৎপাটন করতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি বিশেষ নজরদারী বাড়ানোর দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সহ অত্র এলাকাবাসী।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) গাজী রবিউল ইসলাম
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) গাজী রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, চুরি-ডাকাতি, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত এলাকা গড়ার লক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশণা অনুযায়ী ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান স্যারের সর্বপ্রকার আন্তরিক সহযোগীতায় আমি ও আমার অফিসার ফোর্স সহ কাজ করে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, মুজিববর্ষের মধ্যে সর্বস্তরের জনগণকে সাথে নিয়ে অপরাধ দমনে একত্রে কাজ করে যাব। মাদক, গরুচোর, ডাকাত সহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হওয়া আসামীদের তথ্যও এ সময় তুলে ধরেন। অপরাধ দমনে পুলিশি অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:১৫:৫১   ২১৪৯ বার পঠিত   #  #  #  #




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রথমপাতা’র আরও খবর


সালাম, আমান, রিজভী, খোকন, শিমুল ও এ্যানিসহ গ্রেফতার শতাধিক
ভারতকে হারিয়ে টাইগারদের সিরিজ জয় নিশ্চিত
 নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ ,নিহত ১
বিয়েবর্হিভূত যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ: প্রতিবাদে বিক্ষােভ ইন্দোনেশিয়ায়
আড়াইহাজারে অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
কোয়ার্টারে ব্রাজিল ক্রোয়েশিয়া মুখোমুখি
ব্যাংকে টাকা নিয়ে গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তির লটারি ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর
২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে করোনা টিকার চতুর্থ ডোজ
সউদী আরব তৈরি করবে বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবন্দর

আর্কাইভ