বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেছেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারের কাজ যখনই শুরু হয়েছে, তখনই বিএনপি নেত্রী অস্থির হয়ে গেছেন। আসলে তাদের বিচার তিনি চান না। তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় হতে শুরু করলে তিনি ষড়যন্ত্র শুরু করেন।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি এ অভিযোগ করেন। বিএনপি চেয়ারপারসনকে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ আ্খ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন চিকিত্সার জন্য। আমরা ভেবেছিলাম সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসবেন। কিন্তু তিনি মানসিক অসুস্থতা নিয়ে ফিরে এসেছেন। এসেই যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাওয়ার জন্য তরুণ প্রজন্মকে বিরোধী নেত্রী নাস্তিক বলছেন। একজন মুসলমান হয়ে আরেকজন মুসলমানকে নাস্তিক বলেন কিভাবে? তারা নাস্তিক না অন্য কিছু তাতো নির্ধারণ করবেন আল্লাহ।
বিরোধীদলীয় নেত্রী আল্লাহর ওপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, আমাদের ওয়াদা ছিল জনগণের ভোট পেলে বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধের বিচার করব। সেই বিচারই শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই বিচারের প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র শুরু করছেন বিরোধী দলীয় নেতা।
তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেতা বলেছেন আরও রক্ত ঝরবে। দুই দফায় দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা কীভাবে দেশের মানুষের রক্ত চান তা আমি বুঝতে পারি না।
খালেদা জিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, “যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য, জামায়াতে ইসলামীকে রক্ষার জন্য তিনি ও তাঁর স্বামী (জিয়াউর রহমান) অনেক রক্ত নিয়েছেন। রক্ত নেয়া ওনাদের চরিত্র।”
‘রক্ত নিয়ে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় যেতে চান’-মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির বিষয়ে সজাগ থাকবেন। এরা ধর্মের ওপর আঘাত করে। হিন্দুদের ওপর হামলা করছে।’
বিরোধীদলের হরতালের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করুন বিরোধী নেত্রী তা চান না। কারণ একবার তিনি মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন, কিন্তু পাস করেছিলেন উর্দু ও অংকে। তাই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চলাকালীন বারবার হরতাল দিয়ে বাধাগ্রস্ত করছেন।”
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে জনসভায় কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, আর কোন প্রাণ ঝরবে তা আমি চাই না। আরও রক্ত ঝরুক তা আমি চাই না। কোন মায়ের কোল খালি হবে তা আমি চাই না। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তার বক্তব্যে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের প্রতি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে যে কোন ব্যবস্থা নিতে আমরা বদ্ধপরিকর।
জনসভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ আজিজ, সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, সংসদ সদস্য ফজলে নুর তাপস, যুবলীগ সেক্রেটারি হারুনুর রশিদ, শ্রমিক লীগ সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী আশরাফুন্নেসা মোশাররফ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা আবু কাওসার, যুব মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার এবং ছাত্রলীগ সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন
বাংলাদেশ সময়: ৯:১৪:৪৫ ৬১০ বার পঠিত