সৌরভ বর্মন গৌতম জাককানইবি প্রতিনিধিঃ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া এবং একজনের পরীক্ষায় অন্য জন অংশগ্রহণের দায়ে তিন জনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নিকট সোপর্দ করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে একজন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নওশিন সায়েরা উদরিন যে ফারহানা তাজমিম কণার পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। নওশিন সায়েরা উদরিন ময়মনসিংহেরর আকোয়ার সাইফুল ইসলামের মেয়ে।মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. হিল্লোল বিশ্বাস নওশিন সায়েরা উদরিনকে নিয়ে আসেন। মো. হিল্লোল বিশ্বাস মাগুরার হারুনুর রশিদের ছেলে।২০১৮ সালে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জালিয়াতি এবং র্যাগিংয়ের দায়ে মো. হিল্লোল বিশ্বাস কে স্থায়িভাবে বহিষ্কার করা হয় । এ ছাড়া ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া এহসান আহমেদ তার পরীক্ষার রোল ছিল ১০৪৫৭।
নওশিন সায়েরা অদ্রি এবং মো. হিল্লোল বিশ্বাস প্রক্সি জালিয়াতি চক্রের সদস্য বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন । তারা সারা বাংলাদেশে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে টাকার মাধ্যমে প্রক্সি দিয়ে থাকেন ।
সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে জানা যায় , এই চক্রটি ,শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এইচ ইউনিটে ৮ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে ঐশর্য দেবনাথ এর হয়ে পরীক্ষা দিয়েছে । যার রোল H06661 ।
সি ইউনিটে জান্নাতুল ফেরদাউস মীম এর হয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে যার রোল C01487 বিল নাম্বার C02719 ।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে জান্নাতুল ফেরদাউস লিনার হয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে । মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় যার রোল ছিল 126802 , মেরিট স্কোর ২৬১.৭৫ পজিশন ৮৭৫৭ ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ইউনিটে মো সাজ্জাদ হোসেনের পরীক্ষা দিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে । যার রোল ছিল A21662 ।এছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর ৪ টি ইউনিটে কাজ করে এই চক্রটি
প্রাইমারি নিয়োগ পরীক্ষায় সুমাইয়া জান্নাত কাকুলির হয়ে অংশগ্রন করে যার রোল নং ১৮৬৫৭২০ ।
এছাড়াও এই চক্রটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় , বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় ,পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পটুয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সহ বাংলাদেশ ব্যাংক,রুপালী ব্যাংক ও অন্যান্য নিয়োগ পরিক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে স্বীকার করেছেন ।
চক্রের মুল হোতা কে এমন প্রশ্নের জবাবে হিল্লোল বলেন, সজীব, নাজমুল, মাহফুজুর হাসান রিয়ান এবং রনি এই চক্রটির সঙ্গে কাজ করে । যেখানে মাহফুজুর হাসান রিয়ান আজকের হোতা হিল্লোলের পরিচালক। মাহফুজুর হাসান রিয়ান টাংগাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী । তার বাসা ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর উপজেলায় । তার বর্তমান ঠিকানা একাডেমি রোড ময়মনসিংহ ।
সজীব মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী এবং নাজমুল ও রনির বিষয়ে তারা কোন তথ্য দিতে পারেনাই ।
হিল্লোলের এই কাজে সেলটার দেয় চক্রের অন্যতম সদস্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পাভেল ।
এ সময় আটকৃতদের সঙ্গে ২ টি মোবাইল ফোন, প্রায় ২৫ টি ইডিটকৃত ছবি ,কয়েকটি আইডি কার্ড,একাধিক সিমকার্ড,ডাচ বাংলা ব্যাংক এর একটি এটিএম কার্ড,ও মাদকসেবনের উপকরণ পাওয়া যায় ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর উজ্জ্বল কুমার প্রধান জানান, ‘বি’ ইউনিটের সকালের শিফট পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ আগেই ডিজিটাল ডিভাইস বহন করায় একজনকে এবং বিকালের শিফটে অন্য জনের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দায়ে পরীক্ষা দেওয়ায় মোট তিনজনকে আটক করা হয়। আটককৃত তিনজনকেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের নিকট সোপর্দ করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ত্রিশাল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরশাদ উদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:১৮:৪২ ৮২১ বার পঠিত # #আটক #জাককানইবিত #জালিয়াতি #পরীক্ষা