বঙ্গ-নিউজ ডটকম: জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় আগামীকাল বুধবার। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে দুই সদস্যের (এক সদস্য অনুপস্থিত) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ রায়ের এ তারিখ ধার্য করেন।এটি হবে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার ষষ্ঠ রায়।
এর আগে দুটি ট্রাইব্যুনাল পাঁচটি মামলার রায় দিয়েছেন। ট্রাইব্যুনাল-১ দিয়েছেন দুটি, বাকি তিনটির রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল-২। এর মধ্যে তিনটিই এখন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন।
চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার প্রথম রায় দেন ট্রাইব্যুনাল-২। সেদিন জামায়াতের সাবেক সদস্য (রুকন) পলাতক আবুল কালাম আযাদকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। ৫ ফেব্রুয়ারি একই ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। তৃতীয় রায় আসে ট্রাইব্যনাল-১ থেকে। ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এরপর ৯ মে চতুর্থ রায়ে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। গতকাল ১৫ জুলাই জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে করা একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন মুজাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ ফেরত দিয়ে সুবিন্যস্ত করে পুনর্দাখিলের আদেশ দিলে ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি তা পুনর্দাখিল করা হয়। এর ১০ দিন পর ২৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। ২৫ এপ্রিল এই মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে ট্রাইব্যুনাল-২-এ স্থানান্তর করা হয়। এই ট্রাইব্যুনালে নতুন করে অভিযোগের বিষয়ে শুনানি হয়।
পরে গত বছরের ২১ জুন ট্রাইব্যুনাল-২ তাঁর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ করে বন্দী রাখা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন ও এসব অপরাধে সহযোগিতা, প্ররোচনা, উসকানির সাতটি অভিযোগ গঠন করেন।
২০১২ সালের ১৯ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। মুজাহিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগে এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।
গত ৫ মে আসামিপক্ষের একজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের মাধ্যমে আসামিপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। ওই দিন ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ৭ মে দিন ধার্য করেন। রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয় ১৬ মে। আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শুরু করে ২২ মে। উভয় পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে গত ৫ জুন মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষাধীন রাখেন ট্রাইব্যুনাল-২।
বাংলাদেশ সময়: ১২:০১:৫৮ ৪৭৯ বার পঠিত