বঙ্গ-নিউজঃঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা তারেকুজ্জামান রাজীবের মোহাম্মদপুরের বাসা ঘিরে রেখেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা। শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার চার নম্বর সড়কের ৪০৪ নম্বর বাড়িতে পরিচালিত অভিযানে রাজীব আটক হন। এরপর রাত ১১টার পর থেকে র্যাব সদস্যরা তার মোহাম্মদপুরের বাড়ির চারপাশে অবস্থান নেন।
র্যাব-২ এর সিও আশিক বিল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আটক কাউন্সিলর রাজীবের মোহাম্মদপুরে ১ নম্বর রোডের, ৩৩ নম্বর বাসাটি র্যাব সদস্যরা ঘিরে রেখেছেন। রাজীবের উপস্থিতিতে সেখানে অভিযান চালানো হবে।
এদিকে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম জানান, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ৪০৪ নম্বর বাড়ির সপ্তম তলা থেকে রাজীবকে আটক করা হয়। এটি তার বন্ধু মিশু হাসানের ভাড়া নেওয়া বাসা। ওই বাসার ভেতরে রাজীবকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদসহ সেখানে তল্লাশি চালানো হয়।
এরআগে, রাত সাড়ে ১০টায় র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, ‘চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার চার নম্বর সড়কের ৪০৪ নম্বর বাড়িটির সপ্তম তলায় অভিযান চালানো হয়।’
গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানীতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর থেকে গডফাদারসহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট, যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, যুবলীগ নেতা জি কে শামীমসহ অনেকের বাসা ও কার্যালয়ে তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ক্যাসিনোয় অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২০১ জনকে আর্থিক জরিমানাসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্যেই সিটি করপোরেশন এলাকার কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে দখল, চাঁদাবাজি করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কাউন্সিলরদের কেউ কেউ সরাসরি ক্যাসিনো কারবারের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। অভিযানের পরপরই অনেকেই পালিয়ে দেশ ছেড়ে গেছেন। মোহাম্মদপুরের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবও গত দুই সপ্তাহ ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। র্যাব সদর দফতর ও র্যাব-২ এর একটি যৌথ দল তাকে নজরদারি করে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, টং দোকানদার থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ, চন্দ্রিমা হাউজিং, সাত মসজিদ হাউজিং, ঢাকা উদ্যানসহ বিভিন্ন এলাকায় দখলবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে রাজীবের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে প্রবাসীদের বাসাসহ এলাকার অনেকের জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে। বর্তমানে মোহাম্মদপুর এলাকায় তার একাধিক বাড়ি, জমি ও একাধিক বিলাসবহুল গাড়ির মালিক তিনি। সাবেক একজন প্রতিমন্ত্রীর হাত ধরে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হওয়া রাজীব ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর পদে জয়লাভ করেন। এরপর থেকেই মূলত ভাগ্য আরও খুলে যায় তার।
র্যাব সূত্র জানায়, তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তাকে নিয়ে তার বাসা ও কার্যালয়ে অভিযান চালানো হবে। তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলাসহ অন্যান্য মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১:৩৮:০৩ ৬২৬ বার পঠিত # #কাউন্সিলর #যুবলীগ #রাজীব #র্যাব