বঙ্গ-নিউজঃ ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের ভারত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী চন্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যাতায়াতের একমাত্র কাঁচা রাস্তাটি বর্ষা মৌসুমে বা একটু বৃষ্টিপাত হলেই বেহাল দশায় পরিণত হয়। হাঁটু পরিমাণ কাদা জমে পুরো সড়কে। অথচ চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়েও এ সড়ক দিয়েই প্রতিদিন ২শ’ জন সে এলাকার বাসিন্দাসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ও চার শিক্ষককে স্কুলে যাতায়াত করতে হয়। সড়ক খারাপ হওয়ায় স্কুলে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে গেছে। চন্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনজুর মোরশেদ বলেন, বিদ্যালয়টি জাবরহাট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত। বিদ্যালয় থেকে কমবেশি ৩০০ গজের মধ্যে ভারতীয় সীমান্ত। পীরগঞ্জ উপজেলার বৈরচুনা-গোগর পাকা সড়কের চন্দ্রা থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৮০০ মিটার। ওই ৮০০ মিটার সড়কটি কাঁচা এবং এটিই বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করার একমাত্র মাধ্যম। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে সড়কটি কাদায় ভরে যায়। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ এলাকার সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কাপড়চোপড় সামলে জুতা হাতে নিয়ে কোনমতে বাধ্য হয়েই স্কুলে যাওয়া-আসা করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের ৬১ শিক্ষার্থীর প্রায় সবার বাড়ি চন্দ্রা এলাকার পাকা সড়কের আশপাশে এবং শিক্ষকদের বাড়িও একই এলাকায়। এ সড়ক ছাড়া স্কুলে যাওয়ার কোন বিকল্প কোন পথ নেই। সড়কটি পাকা করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানানো হলেও কাজ হয়নি। সড়কটি খারাপ হওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমেছে অনেক। তাদের বাড়িতে গিয়ে ডেকে আনতে হয়। সহকারী শিক্ষক আফতারুল ইসলাম বলেন, পাকা সড়কের কাছে মোটরসাইকেল রেখে জুতা হাতে প্যান্টের নিচের অংশ হাঁটুতে গুঁজে কাদার সঙ্গে যুদ্ধ করে খুব কষ্টে এ সড়ক দিয়ে স্কুলে আসতে হয়। এখানে চাকরি করা খুবই কষ্টকর। বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুচিত্রা আক্তার, চতুর্থ শ্রেণীর রাকিবসহ বেশ কয়েকজন জানায়, জুতা হাতে নিয়ে কাদার মধ্য দিয়ে আসতে খুব কষ্ট হয়। বই-খাতা কাদায় পড়ে নষ্ট হয়। কাপড়চোপড়ে কাদা লাগে। স্কুলে আসতে মন চায় না। অভিভাবক ফাইদুল ইসলাম বলেন, এলাকায় স্কুল ছাড়াও পাঁচ শতাধিক পরিবার বসবাস করে। সড়কে কাদা হওয়ায় স্কুলের বাচ্চাসহ এলাকার সাধারণ মানুষের চলাচলে চরম অসুবিধা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খয়রুল আনাম চৌধুরী বলেন, সড়কটি স্কুলটির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা পাকা করার জন্য সরকারি দফতরে যোগাযোগ করা হয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদ ইবনে সুলতান বলেন, এ স্কুলে যাওয়া-আসার সড়কটি অত্যন্ত খারাপ। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এটির প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া দরকার। উপজেলা প্রকৌশলী ইসমাইল হোসেন বলেন, আমরা সড়কটি সরেজমিন দেখেছি। পাকা করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ ডব্লিউএম রায়হান শাহ বলেন, গ্রামকে শহরে রূপান্তর করার সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে পিছিয়ে পড়া এলাকার রাস্তাঘাট উন্নয়নে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। চন্দ্রা সরকারি স্কুলের রাস্তাটি খুব খারাপ অবস্থায় পরিণত হয়েছে। এটা দ্রুত পাকা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:০৯:৫০ ৪৫৩ বার পঠিত