হাসুস’র ২য় সাহিত্য প্রতিযোগিতা’র সেরা ১০ কবিতা ও ছড়া

Home Page » সাহিত্য » হাসুস’র ২য় সাহিত্য প্রতিযোগিতা’র সেরা ১০ কবিতা ও ছড়া
শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯



 

 

 

 

ভাল লাগা

       এস ডি সুব্রত

 

প্রতিদিন অল্প অল্প করে

শাদা জোছনার মতো ধবধবে ভালবাসা

তুলে রাখি বুকের ঘরে অলিন্দজোড়ায়

সীমাহীন উচ্ছ্বলতায় প্রাণের আকুলতায়

বিমুগ্ধ হই তোমার আশ্চর্য মমতা সুধায় ,

যতই দিন যায় তোমাতে হারাই

বিষাদ যন্ত্রণা যত উগরে দেই

ইচ্ছে করে ডুব সাঁতার দেই ত্রিমোহনায়

ভাসিয়ে দেই লখিন্দরের ভালবাসার ভেলা,

জীবনের মরাগাংএ এনেছ জোয়ার

পড়ন্ত বেলায় গোধূলির গান

তোমার কত কাজ স্বামী সংসার

দিনভর অফিস ,পড়ার টেবিলে বাচ্চারা

সেলাই মেশিন আরও টুকিটাকি

বাংলার অনন্য নারী স্নিগ্ধতার প্রতিমূর্তি

অথচ আমি তোমাকে শুধু যে জ্বালাই ,

কখনো রেগে যাও তুমি

তবুও কন্ঠে মায়াবী সুর

অগ্রাহ্য  করনা তবুও

অনন্য মায়ায় বেঁধে রাখো,

তোমাকে কিছু বলব বলে

প্রতিদিন অপেক্ষায় থাকি

 বলতে যেয়েও থমকে যাই

বলা হয়ে উঠেনা তবুও

শুধু জানি এ এক অন্যরকম ভালোলাগা।

 

 

 

অজানায় জানার বিশ্ব……..

     

      তাহমিদা হক মারজানা  


 উড়তে দাও, উড়াল দেব

        অজানায় পাড়ি জমাব। 

স্বপ্ন রঙিন পথে নীলাদ্রে মহালয় গড়ব

দুর্গম গতিতে দুর্বার দুর্জয় আনব। 

তবু ও ভূলে যেন আমায় কখনো বাধঁতে যেও না।

 ছুটতে দাও  !!!  ছুটন্তে বহুদূর অতিক্রম করব 

অজানার জানায় বিশ্ব দেখব 

জ্ঞানের সমুদ্রে মহাপ্রলয় ঘটাব 

তীর উপচে পড়া ঢেউয়ে জ্ঞানের মহাশ্বর জানতে চেষ্টা করব । 

অদম্য সাহসে পথ চলতেই থাকব। 

তবু ও থেমে যাব না ! 

    মনোল্লাসের অজান্তেই যে তীর বেধেঁছে বাসা আমারো মনোগহিনের প্রতিটি নিশ্বাসের ক্ষণে ক্ষণে  লগনের অতিক্রম করে প্রহরের শেষ সীমার্থে । 

তাই বলব আজ তোমাদের

“নবীন-প্রবীণ “    

সকল বাধাঁ জীর্ণ জোয়ার অতিক্রম করে ধর্ম-বর্ণ -গোত্র নির্বিশেষে ছুটতে দাও অজান্তে

উড়তে দাও অসীমে।    

 

 

 

বদলে গেছে বাংলার সেই রূপ

 

মোঃ সোহাগ নূর

 

         বদলে গেছে বাংলার সেই রূপ,

   যে রূপ বাংলার মানুষকে মুগ্ধ করতো,

              যে রূপ অানন্দ দিতো।

 

     হারিয়ে গেছে পল্লি মায়ের সেই সুর,

   যে সুর সন্তানের কাছে লাগতো মধুর।

 

      হারিয়ে গেছে কতো সতো প্রবাদ,

       নেই আর বাংলার আসল সাধ।

 

         এখন আর কারও মুখে নেই,

            পল্লীর সেই পল্লীগীতি,

     বদলে গেছে বাংলার পুরোনো রীতি।

 

           সেই সাথে হারিয়ে গেছে

            হৃদয় জুরানো রূপকথা,

     যে গুলো ছিলো সবার অন্তরেই গাঁথা।

 

      এই বাংলায় আর শুনা যায়না

    পল্লী মায়ের সেই ঘুমপারানির গান,

     সেই সবই ছিল এই বাংলার প্রাণ।

 

 

 

 

 

আমার স্বপন

——–মুহাম্মদ ইমদাদ হোসেন

//

আমার সোনার ময়না পাখি

দেখলে তাদের জুড়ায় আঁখি

জুড়ায় মনওপ্রাণ,

তারা আমার হিরা -মতি

প্রাণের চেয়ে প্রিয় অতি

আল্লাহ পাকের দান।

 

তাদের নিয়ে আমার স্বপন

বুকের মাঝে আছে বপন

আলেম হাফেজ হবে,

ইচ্ছা প্রকাশ খোদার তরে

খোদা যদি পূরণ করে

ইচ্ছা সার্থক তবে।

 

ওগো মহান অন্তর্যামী

তোমার কাছে যা চাই আমি

কবুল করে নিও,

আমি অধম পিতা যাদের

সফল জীবন দিও তাদের

করো তোমার প্রিয়।

 

 

 

বরাদ্দ!!

মৃদুল দেবনাথ

 

বাঘের গলায় বিঁধলো হাড্ডি! বককে ডেকে কয়

আয়না আমার কাছে সোনা, করছিস কেনো ভয়?

 

আমি কি তোর পর রে বোকা? জন্মান্তরের আপন

তুই আর আমি একই বনে করি দিন-রাত যাপন।

 

তুই থাকিস ভাই গাছের ডালে, আমি থাকি নীচে

কেনো তবে এই ভেদাভেদ হিংসা-বিদ্বেষ মিছে?

 

আমরা প্রতিবেশী দু’জন নই তো কুজন কেহ

একই অন্তর, একই মন্তর, পার্থক্য দুই দেহ।

 

দে না খুলে আমার গলায় বিঁধে থাকা হাড়

বিলের যত চ্যালা-ঢ্যালা দেব পুরষ্কার।

 

বাঘের মিষ্টি কথায় গেল বকের মনটা গোলে

পুরষ্কারের উন্মাদনায় বাঘের হাড্ডি খোলে

 

বাঘ মহারাজ দারুন খুশি হয়ে হাড্ডি মুক্ত

বক বলে- কই? মাছ দিন হুজুর, আমি যে অভুক্ত!

 

পুরষ্কারটা দিননা এখন, কাজ তো আমার শেষ

হাসি দিয়ে ব্যঘ্র বলে- শুনালি তো বেশ!

 

আমার গলার ভিতরে তোর সরু মাথা ঢুকিয়ে

হাড্ডি তুলে আনলি যখন দিতে বিপদ চুকিয়ে।

 

তখন আমি খাইনি ঘিলু চিবিয়ে তোর মাথাটার

এটাই তো আজ আমার দেয়া সবচে বড় পুরস্কার।

 

যদি বাড়াবাড়ি করিস শোন রে অবাধ্য

তোর কপালে আছে মহা বিপদ বরাদ্দ!

 

ভাবিয়া করিও কাজ

                   এ,ডি দিলীপ

 

না ভাবিয়া করে কার্য, করিয়া যে ভাবে,

খুব বিপদে পড়ে পড়ে, তাহার শাস্তি পাবে।

 

বুঝার মতন সৃষ্টিকর্তা, জ্ঞান দিয়েছেন যাহা,

সময় মত ঠিক জায়গাতে, প্রয়োগ করো তাহা।

 

অনেক ক্ষতির হয় যে কারণ,ছোট্ট একটি ভুলে,

সারা জীবন পার হয়ে যায়, ভুলের ওই মাশুলে।

 

স্থান কাল পাত্র মেনে, সঠিক কাজ করো,

স্বপ্ন সিড়ি বেয়ে বেয়ে, আগামীর পথে চড়ো।

 

সত্য সুপথ মেনে যারা, সঠিক পথে চলে,

হবেই হবেই জয়’যে তাদের, ইতিহাস তাহা বলে।

 

সত্য ধরে রাখতে যদি, বিপদে কভু পড়,

সত্য পথে থেকেই তুমি, তার সমাধান কর।

 

কষ্টের মাঝে শান্তি পাবে, ন্যায়ের পথে থেকে,

ছড়ায় ছড়ায় মনের ভাষা, গেলাম আমি রেখে।

 

একটু ভাবো যদি নিজে, কার্য করার আগে,

ভাল মন্দের সঠিক বেঠিক, হিসেব তুমি পাবে।

 

 

 

স্বপ্ন

 

ফয়সাল আহম্মেদ

 

কৃষক বাবার ছোট্ট ছেলে, বড়ই হাসি খুশি,

 

ছেলে একদিন হবেই বড়, দেখবে দেশ বাসি।

 

লেখা-পড়ায় বড়ই ভাল, স্যার ম্যাডামে কয়,

 

তাই তো বাবা মনের সুখে, বুক ফুলিয়ে রয়।

 

মাথার ঘাম পায়ে আর রক্ত করে পানি,

 

হাড্ডীসার হইল বাবা, সংসার ঘানি টানি।

 

দুঃখের দিনের সুখের স্বপ্ন আর নয় দূরে বেশ,

 

ছেলে চাকরি পেলেই হবে দূঃখের দিনের শেষ।

 

অধিক সুখের আশায় ছেলে বিদেশ দিল পাড়ি,

 

মহানন্দে মিষ্টি বিলি, করল বাড়ি বাড়ি।

 

আসে টাকা তোলেন বাবা, সংসার চলে বেশ,

 

মনের ভেতর পাচ্ছে যেন, কষ্টের কোন রেশ।

 

দিন-মাস-বছর যায়, ছেলে আসে না তো বাড়ি,

 

বুকের পাঁজর যাচ্ছে ভেঙ্গে আজ,ছেলে শুন্য করি।

 

আত্মীয়-স্বজনের হক ভুলিয়া একলা সুখে মগ্ন,

 

এই ধরনের সুখের নেশার, ফল বড় জঘন্য।

 

ছোট্ট বেলার খেলার সাথীরা, আজও খোজে তোমায়,

 

আসা তো দূরের কথা তোমার, ফোনেও পাওনা সময়।

 

প্রতিবেশির উপকার গুলো, তুমি ভুলেছো ঠিকি,

 

তোমাকে নিয়ে গর্ব করে, আজও তারা দেখি।

 

যে শিক্ষকে শিক্ষা দিয়ে, বানালো তোমায় ডাক্তার,

 

বলতে পার তাদের জীবনে আসবে কোন উপকার?

 

যে দেশেতে জন্ম নিয়া;আলো বাতাস সব গিলিয়া; নিলা উচ্চ শিক্ষা,

 

বাসহীনতার কথা বলা, একলা ভোগের নেশায় চলা;এই কী তোমার দীক্ষা।

 

 

 

কৃষকের কান্না

              - জহিরুল ইসলাম

 

     কৃষক ফলায় ধান

     ধানে বাঁচায় প্রাণ

     বাড়ায় দেশের মান

     তারা বাঙালি কৃষাণ।

 

    কিন্তু, কৃষক-

    পায় না ধানের দাম

    ঋণের দায়ে মহাজন তার

    খুলছে গায়ের চাম।

 

   সরকার যে প্রাপ্য দামে

   করছে সরবরাহ

   দালাল ঢুকে সামাল করে

   দাম নাহি পায় কেহ।

 

   যে খরচে ফলায় ধান

   তার চেয়ে অনেক কমে

   বাজার হাটে বিক্রি করে

   চোখেতে জল জমে।

 

 

 

স্মৃতিপটে থাকবে তুমি

মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম 

——————————————-

প্রেমের সেতুবন্ধন তুমি চিরদিনের আশা

তোমায় নিয়ে ছিলো অামার

 বুকভরা ভালোবাসা।


 হৃদয় সিংহাসনে এখনো তোমায় শুধু দেখি

দিবসে রজনীতে তাই তোমার ছবিই অাঁকি।


চেয়েছিলাম দূর অজানায় হাতে রেখে হাত

প্রেমের যত দুঃখ বেদনা

ভাগ করে নেবো একসাথ।


সম্পর্কটা করেছো ম্লান

কথাগুলো জমাট বেঁধে হয়েছে 

পাহাড় সমান

অবহেলায় ভালোবাসার  দেওনি

কোনো স্থান।


তুমিহীনা অসহায় পথের 

পথিক  হলাম অামি,

ভালোবাসার স্মৃতিপটে

ছিলে,অাছো এবং থাকবে

শুধু তুমি।

 

 

 

:::::::::::::: জৈষ্ঠ্যের শেষ দিকে :::::::::::::::

———- নয়ন তালুকদার ———-

জৈষ্ঠ্যের শেষ দিকে গগনেতে কালো মেঘ,

বিল-ঝিল সব তল স্রোতের তো বেশ বেগ।

জনে জনে কৌশলে মাঠে ধরে মাছ,

নদী- নালা ভরপুর বর্ষার আভাস।

ছুটে সব কিশোরেরা হাতে নিয়ে জালি,

স্রোতে দেখো ভেসে বেড়ায় চাঁদার ছালি।

ডাঙ্গায় উঠে কৈ উজান বেয়ে,

হৈ চৈ শুরু হয় এসব নিয়ে।

এমন দিনে ভাই ঘরে থাকা দায়,

ত্বরা করি জাল আনো বোয়ালটা যায়।।

বাংলাদেশ সময়: ১২:১৭:৪৯   ৭৪২ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সাহিত্য’র আরও খবর


সাধক কবি রামপ্রসাদ সেন: স্বপন চক্রবর্তী
ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা “আমি তো গাঁয়ের মেয়ে ”
৫০ বছরের গৌরব নিয়ে জাবির বাংলা বিভাগ বিশাল ‘সুবর্ণ জয়ন্তী’ উৎসব আয়োজন করেছে
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা- ‘তোমার খোঁজে ‘
অতুলপ্রসাদ সেন: ৩য় (শেষ ) পর্ব-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন;পর্ব ২-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন-স্বপন চক্রবর্তী
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা ” যাবে দাদু ভাই ?”
বাদল দিনে- হাসান মিয়া
ইমাম শিকদারের কবিতা ‘ছোট্ট শিশু’

আর্কাইভ