revious
বঙ্গ-নিউজ: এক বছর আগে সফল না হওয়ার পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুতে আগামী সপ্তাহেই নতুন একটি দিন ঠিক করেছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার।
তবে মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে আদিবাসী জনগোষ্ঠী ও নাগরিকত্বের স্বীকৃতির নিশ্চয়তা না পেলে রোহিঙ্গারা যেতে না চায়না বলে এই দফার চেষ্টা ফলপ্রসূ হবে কি না, তা এখনও অনিশ্চিত।
রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে মিয়ানমারকে চাপ দিয়ে এলেও বাংলাদেশ এটাও বলেছে, ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হবে না।
মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর ২০১৭ সালের অগাস্ট থেকে পরবর্তী সময়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তার আগে গত কয়েক দশকে এসেছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।
আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে প্রত্যাবাসন শুরুর প্রস্তুতিও নিয়েছিল বাংলাদেশ।
কিন্তু মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে রোহিঙ্গাদের মনে আস্থা না ফেরায় এবং তারা কেউ ফিরে যেতে রাজি না হওয়ায় সেই পরিকল্পনা ঝুলে যায়।
এরপর গত মাসে দুই দেশের প্রতিনিধি দলের বৈঠকে প্রত্যাবাসন চুক্তির অংশ হিসেবে যাচাই বাছাইয়ের জন্য মিয়ানমারের হাতে ২৫ হাজার রোহিঙ্গার নতুন একটি তালিকা দেয় বাংলাদেশ। প্তাহের মধ্যে বৃহস্পতিবার শরণার্থী প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর নতুন দিন ঠিক হওয়ার খবর দিল রয়টার্স।
তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তালিকা থেকে ৩ হাজার ৫৪০ জনকে নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের ছাড়পত্র মিলেছে। এখন এই রোহিঙ্গা রাজি হলেই তাদের ফেরত নেবে মিয়ানমার।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মিন্ট থু টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, “আমরা ৩ হাজার ৫৪০ জনকে আগামী ২২ অগাস্ট ফেরত নিতে রাজি।”
এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, এটা প্রত্যাবাসনের ছোট আকারের একটি পরিকল্পনা।
তবে রোহিঙ্গাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের ফেরত পাঠানো হবে না বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া যেন স্বেচ্ছায়, নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে হয় এবং তা যেন টেকসই হয়।”
এই প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের যুক্ত করা হয়নি বলে দাবি করেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউমেন রাইটসের কর্মী মোহাম্মদ ইলিয়াস।
তখন রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা সাফ বলে দেন, তারা আগে নিরাপত্তা ও নাগরিকত্বে নিশ্চয়তা চান।গত মাসে ঢাকায় কয়েকদফা বৈঠকের পর মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল কক্সবাজারে গিয়ে উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের ৩৫ জনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দুদফা বৈঠক করেন।
রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ তখন রয়টার্সকে বলেছিলে, “আমরা নাগরিকত্ব চাই, আমরা আমাদের মর্যাদা চাই। আমরা তাদের (মিয়ানমার) বিশ্বাস করি না, সেজন্য আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়ায় আমাদের নিরাপত্তা দিতে হবে।”
রোহিঙ্গারা যেন তাদের নিজভূম রাখাইন প্রদেশে নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে বাস করতে পারে, তা নিশ্চিতে মিয়ানমারকে তাগিদ দিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ফিরতে চান কি না, তা জানতে জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের অভ্যন্তরীণ একটি ই মেইলের সূত্র ধরে সংবাদ সংস্থাটি বলেছে, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের পরিস্থিতি কী, তা রোহিঙ্গাদের কাছে তুলে ধরবে জাতিসংঘ কর্মকর্তারা।
জাতিসংঘ কর্মকর্তারা বলে আসছেন, রাখাইনে পরিস্থিতি এখনও রোহিঙ্গাদের ফিরে আসার উপযোগী হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১১:২৪:২৯ ৫৫৭ বার পঠিত #ফেরত যাবে তিন হাজার রোিহঙ্গা #মিয়ামার বাংলােদেশ সমস্যা #রোহিঙ্গা সমস্যা