সাইফুল ইসলাম শাকিল, ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ- নদী মাতৃক বাংলাদেশে, কুমার নদী খননের নাম করে স্যালো মেশিন ব্যবহার করে বালু উত্তোলন করায় নদীর উভয় পাশের পাড়সহ বাড়ী ঘর ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে মঙ্গলবার সকালে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত (গণ স্বাক্ষরিত) অভিযোগ দায়ের করেছে এলাকাবাসী। জানাগেছে, কয়েকদিন ধরেই বালু ব্যবসায়ী মোঃ মোমিন কাজী (৫০) (অবৈধ ড্রেজার মেশিন ব্যবহারকারী) ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌরসভাধীন এলাকাজুড়ে সরকারীভাবে নদী খননের জন্য বৈধ ও উপযুক্ত মেশিন ব্যবহার না করে অবৈধভাবে অর্থ সংগ্রহ করে অবৈধ মেশিন ব্যবহার করায় হুমকির মুখে পড়েছে নদীর তীর সংলগ্ন বসবাসকারী এলাকাবাসীগণ। নদী খননের জন্য পানী উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক অনুমতি দেয়া হয়েছে নৌবাহিনীকে, বেঙ্গল গ্রুপ নৌবাহিনীর নিকট থেকে সাব-কন্ট্র্যাক্ট নিয়ে ছোট ঠিকাদারদের দিয়ে নদী খননের কাজ পরিচালনা করছে। তবে ভেকু দিয়ে বালু উত্তোলনের কথা থাকলেও ভেকুর পরিবর্তে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত হচ্ছে স্যালো মেশিন (আত্বঘাতী), যা অবৈধ। অবৈধ প্রক্রিয়ায় বালু উত্তোলনের জন্য বেশ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে অত্র এলাকাবাসী। দরখাস্তে বিগত সময়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বালু উত্তোলন বন্ধ করার পরেও পুনরায় বালু উত্তোলন করছে মর্মে উল্লেখ করা হয়। এবিষয়ে ফরিদপুরের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্য বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্বে থাকা প্রজেক্ট অফিসার লেফটেন্যন্ট মহিউদ্দিনকে মুঠোফোনে অবগত করে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগের ভিত্তিতে ইউএনও, ডিসির কথা উল্লেখ করে বলেন যদি তারা (ইউএনও, ডিসি) কোন বন্ধের আদেশ দেয় তাহলে তিনি বন্ধ করবেন বলে জানান। এবিষয়ে পানী উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভাঙ্গা) এ.কে.এম জহিরুল হক বলেন, জুলাই ১৬ থেকে ডিসেম্বর ১৯ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নদী খনন কাজের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য একশত ৭৫ কোটি টাকা বাজেটে চুক্তিবদ্ধ হয় নৌবাহিনী। ১২২ কিলোমিটার বিস্তৃত মরা কুমার নদী খননের জন্য কে এম কলেজের সম্মুখভাগ থেকে গোপালগঞ্জ মুখে মোট ১৯ কিলোমিটারের মধ্যে তলদেশে ২৫ মিটার ব্যাপ্তীতে বৈধ মেশিন দিয়ে খননের পরিবর্তে ছোট ঠিকাদারদের ব্যবহৃত আত্বঘাতী মেশিন অবৈধ। কারণ, আত্বঘাতী মেশিনের মাধ্যমে নদীর পাড় সহ বসতী হুমকীর সম্মুখে পড়তে পারে। যা আমরা কোনভাবেই সমর্থন করিনা। পরবর্তীতে ইউএনও, প্রজেক্ট অফিসার লেফটেন্যন্ট মহিউদ্দিন, এসিল্যান্ড সবাই মিলে একহয়ে কাজের অবস্থান বুঝে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দরখাস্তের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়ীত্ব) পূরবী গোলদার বলেন, এবিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দরখাস্তের অনুলিপি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, সহকারী কমিশনার (ভূমি), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ফরিদপুর ও ভাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, কয়েকদিন পূর্বে মমিন কাজীর অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের ব্যবসায়ের জন্য বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। উপজেলা বাসীর দাবী সকল প্রকার মেশিন জব্দ করে অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনাহোক।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩৭:২৮ ১৬৬১ বার পঠিত #অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ভাঙ্গায় ইউএনও বরাবর এলাকাব