সাইফুল ইসলাম শাকিল, ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তার দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে সাবেক উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ্’র রাজনৈতিক সচিব এনামুল হক অপুকে আটক করা হয়েছে। ফরিদপুরের ভাঙ্গায় রবিবার সকালে উপ-সহকারী প্রকৌশলী (জনস্বাস্থ্য) সমরজীত ঘরামীর কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান রাজা, এনামুল হক অপু, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও অফিসের সহকারীদের সম্মুখে বাক-বিতন্ডার অপ্রীতিকর এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানাগেছে। এবিষয়ে সমরজীত ঘরামী বলেন, প্রশাষণিক কর্মকর্তা হয়ে অপ্রীতিকর আচরণ তাদের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত। টিউবঅয়েল প্রদানের জন্য কোন অর্থ গ্রহণ করেছেন কি না? প্রশ্নের জবাবে সমরজীত ঘরামী বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। এ প্রসঙ্গে আকরামুজ্জামান রাজা বলেন, “আনুমানিক প্রায় চার মাস পূর্বে নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর মোশাররফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এনায়েত হোসেন ও মহিলা লীগ নেত্রী রাজিয়া সুলতানার নিকট থেকে আর্সেনিক মুক্ত ডিপ টিউবঅয়েল দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনৈতিকভাবে ঘুষ নেয় সমরজীত ঘরামী। কিন্তু, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সময়মত টিউবঅয়েল না দিয়ে আজ-কাল বলে ঘোরাতে থাকে। এবিষয়টি যখন আমি ও অপু জানতে পারি তখন তাদেরকে নিয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী সমরজীত ঘরামীর কার্যালয়ে যেয়ে তার নিকট এসম্পর্কে জানতে চাইলে, তিনি এবিষয়ে কথা বলবেন না বলে জানান। উচ্চস্বরে তিনি বলেন এবিষয়ে জানতে তার বরাবর লিখিত ভাবে আবেদন করে তারপর জানতে হবে। ঘুষের টাকা ফেরৎ চাইতেই তিনি অফিস থেকে বের হতে বললে আমাদের সাথে বাক-বিতন্ডা হয়। উপজেলা প্রশাষণের অন্যান্নরা এসময় এগিয়ে আসলে সকলের উপস্থিতিতে আমাদের নিকট ভুল স্বীকার করেন সমরজীত ঘরামী। কিন্তু, পরে জানতে পারি তিনি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরা এঘটনার তিব্র নিন্দা ও দৃঢ় প্রতিবাদ জানাচ্ছি।” সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর মোশাররফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এনায়েত হোসেন ও মহিলা লীগ নেত্রী রাজিয়া সুলতানা, আকরামুজ্জামান রাজার বক্তব্যের সাথে সহমত ও সত্যতা প্রকাশ করেন এবং তারা তিনজনেই ৭৫ হাজার টাকা দিয়েছেন বলেও জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুক্তাদিরুল আহমেদ ছুটিতে থাকায় এবিষয়ে অতিরিক্ত দায়ীত্বে থাকা পূরবী গোলদার (ইউএনও সদরপুর) বলেন, যেকোন সরকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করাটাই শ্রেয়। অপরাধী যেন যথেষ্ট শাস্তি পায় এই জন্য আমরা যথাযথ সচেষ্ট থাকব। সমরজীত ঘরামীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে আইনানুগ ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য (ফরিদপুর-৪) ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর অন্যতম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ্ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্রের শিকার। আমি জানছি কিছু অফিসার দূর্ণীতি করে। রাজনৈতিক ভাবেই আমরা মোকাবেলা করব। যদি কেউ হয়রাণী করে আমাদের আওয়ামী লীগকে, তাহলে সারা ভাঙ্গাকে অচল করে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে। এসম্পর্কে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী সাইদুর রহমান বলেন, উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা সমরজীত ঘরামীর দায়ের করা মামলায় দুইজনের মধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩৪:২১ ১০৬১ বার পঠিত #উপ-সহকারী প্রকৌশলীর মামলায় আটক-১ ভাঙ্গায় ষড়যন্ত্রের শিক