বঙ্গ- নিউজ ডটকমঃ একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত বিএনপির সাবেক নেতা সাবেক মন্ত্রী আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের ৩০তম সাক্ষী বাংলা একাডেমীর ভারপ্রাপ্ত প্রধান গ্রন্থাগারিক মো. মোবারক হোসেন এবং ৩১তম সাক্ষী একই প্রতিষ্ঠানের সহকারী গ্রন্থাগারিক এজাবউদ্দিন মিয়া সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা আলীমের বিরুদ্ধে জব্দ তালিকার যথাক্রমে ৪র্থ ও ৫ম সাক্ষী। বুধবার ৩২তম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।মঙ্গলবার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দুই সাক্ষীকে জেরা করেন আলীমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এএইচএম আহসানুল হক হেনা। বুধবার আলীমের বিরুদ্ধে ৩২তম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল।
আলীমের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষের আরও ২৯ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে ১৯তম সাক্ষী আবেদ হোসেনকে বৈরি ঘোষণা করে জেরা করেছেন প্রসিকিউশন।
ঘটনার সাক্ষী অন্য ২৫ জন হলেন, আব্দুল মোমেন, মোহাম্মদ সাইদুর রহমান, নুরুল ইসলাম, মোল্লা শামসুল আলম, আব্দুস সামাদ মণ্ডল, সোলায়মান আলী ফকির, গোলাম রসুল, বিউটি খানম, জাহিদুল ইসলাম, আবু সাইদ জোয়ার্দ্দার, দিলীপ কুমার চক্রবর্তী, লাইলী বেগম, ডা. কাজী এজাজ আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, মো. মোজাম্মেল হোসেন, এ কে এম মাহবুবর রহমান, আব্দুস সোবহান সর্দার, মোস্তাফিজুর রহমান, সরদার আব্দুল হাফিজ, আব্দুল হামিদ সাকিদার, এ এইচ এম মুতাসিম বিল্লাহ, মো. আব্দুল হাই, ভগীরথ চন্দ্র বর্মণ, অজিত মোহন্ত ও যোগেন চন্দ্র পাল।
আর জব্দ তালিকার অন্য ৩ সাক্ষী হলেন পিআইবির ক্যাটালগার রবিউল আনাম, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ডকুমেন্টেশন অফিসার আমেনা খাতুন ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের গবেষণা কর্মকর্তা কাম লাইব্রেরিয়ান একেএম মোমিনুল ইসলাম।
আসামিপক্ষ তাদের জেরা সম্পন্ন করেছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১১ জুন ৭ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ১৭টি অভিযোগে আলীমকে অভিযুক্ত করেন ট্রাইব্যুনাল-২।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, আব্দুল আলীম জয়পুরহাটের ডা. আবুল কাশেম হত্যা ও ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধার গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। এছাড়া জয়পুরহাটের করাইকাদিপুর এলাকার গণহত্যাসহ চকপাড়া, জুড়িপাড়া, পালপাড়া, সোনাপাড়া এলাকায় ৩৮ জনকে হত্যারও অভিযোগ রয়েছে আলীমের বিরুদ্ধে, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের।
গত বছরের ১৫ মার্চ আলীমের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেন প্রসিকিউশন। এতে একাত্তরে হত্যা, লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আলীমের বিরুদ্ধে তিন হাজার ৯০৯ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। ২৭ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-১ আলীমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আমলে নেন।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগে আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে ২৮টি অভিযোগ আনা হয়েছিল। এর মধ্যে ১৭টি আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল-২।
পরে ১৬ এপ্রিল আলীমের মামলাসহ তিনটি মামলা ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে ট্রাইব্যুনাল-২ এ স্থানান্তর করা হয়।
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১১ সালের ২৭ মার্চ জয়পুরহাটের বাড়ি থেকে আলীমকে গ্রেফতার করা হয়। ৩১ মার্চ তাকে ১ লাখ টাকায় মুচলেকা এবং ছেলে ফয়সাল আলীম ও আইনজীবী তাজুল ইসলামের জিম্মায় জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর বেশ কয়েক দফা এই জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৩৭:৫৭ ৪৪১ বার পঠিত