সৈয়দ রায়হান বিপ্লব পীরগঞ্জ (রংপুর) সংবাদদাতাঃ- রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার কুমরসই দ্বি-মূখী দাখিল মাদ্রাসাটিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকার কারণে পড়ালেখার পরিবেশ দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতার কারণে মৌলিক শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে প্রতিবছর আশানুরুপ ফলাফল লাভ না করায় বাতিল করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানের নবায়ন। সরেজমিনে দেখাযায়, পীরগঞ্জের মদনখালি ইউনিয়নের কাদিরাবাদ এলাকায় ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কুমরসই দ্বি-মূখী দাখিল মাদ্রাসা। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি পড়ালেখার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ২০১৪ সালে নবায়ন বাতিল করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার অবহেলায় দিন দিন প্রতিষ্ঠানটি হারিয়ে বসেছে তার আদি ঐতিহ্য ও সাফল্য। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে ইফতেদায়ী বিভাগে তিনজন ও দুইজন মহিলা শিক্ষিকা সহ মোট ১৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মরত রয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে ১৯২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাঠদান কক্ষ ঘুরে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি মিলেছে প্রতিবেদকের চোখে। কোন কোন পাঠদান কক্ষে শিক্ষার্থী নেই বললেই চলে, আবার কোন পাঠদান কক্ষ একবারেই খালি। প্রতিষ্ঠানের একাধীক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- নানাবিধ সমস্যার কারণে প্রতিষ্ঠানে আসছে না শিক্ষার্থী। কেউ ভুগছেন নাকি জ্বরে কিংবা কেউ কোন কারণ ছাড়াই প্রতিষ্ঠানে না এসে বাড়িতে থাকেন। প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী নিয়ে আসার জন্য নেই কোন ব্যবস্থা কিংবা গ্রহণ করেনি কোন ধরণের পদক্ষেপ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর অভিযোগ, বর্তমানে শিক্ষকরা বেতন পাওয়া নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু, পড়ালেখা করানোর জন্য তাদের যেন কোন মাথা ব্যথা নেই কারণ “পড়াউক আর না পড়াউক মাস শেষে বেতন তারা পাবেই”। তিনি আরো বলেন, পরীক্ষায় অংকের মধ্যে সবচাইতে বেশি ফেল করেছে। এছাড়া শিক্ষক নিয়োগ বাবদ টাকা নেওয়ার অভিযোগও করেন তিনি। প্রতিষ্ঠানের গণিতের শিক্ষক এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তিনি বলেন, বর্তমানে সৃজনশীল পদ্ধতিতে গণিত পরীক্ষা হওয়ার কারণে শিক্ষার্থী পাশ করতে পারেনি। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানে সবচাইতে দূর্বল শিক্ষার্থী হওয়ার কারণে এই সমস্যা হয়েছে। এছাড়াও মাদ্রাসায় ভালো শিক্ষার্থীরা পড়তে আসে না বলেও মন্তব্য করেছেন গণিতের শিক্ষক। উপযুক্ত পাঠদান না করানোর কারণে, গত বছর ১৩ জন দাখিল পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছেন মাত্র পাঁচ জন। আর এসব নানাবিধ সমস্যার কারণেই প্রতিষ্ঠানের নবায়ন বাতিল হয়েছে বলে দাবী করছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান। প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ সুলতান মাহমুদ বলেন, গত কয়েক বছর ধরে প্রতিষ্ঠানের ফলাফল ভালো হয় না। যার ফলে প্রতিষ্ঠানের নবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও শিক্ষক সংকট থাকার কারণে আমাদের পাঠদানের বিঘ্ন ঘটেছে। আমরা চারজন শিক্ষকের চাহিদা দিয়েছি কিন্তু, গত কয়েক বছর পর এ বছর দুইজন শিক্ষক আমাদের দিয়েছে সরকার। আরোও আমাদের শিক্ষক সংকট রয়েছে। যদি সেগুলো পূরণ হয় তাহলে আমরা প্রতিষ্ঠানের পড়ালেখার পরিবেশ ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারবো। শিক্ষক নিয়োগ বাবদ টাকা নেওয়ার কথা জানতে চাইলে তিনি অভিযোগের কথা অস্বীকার করেন। শঙ্কা করা হচ্ছে, এবিষয়ে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের পাশাপাশি মেধাশূন্য হতে পারে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের। এ জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করছেন এলাকাবাসী।
বাংলাদেশ সময়: ২০:০৮:৩৮ ৬২৩ বার পঠিত #পীরগঞ্জে উপযুক্ত ফলাফল লাভ না করায় প্রতিষ্ঠানের নবায়ন ব