বঙ্গ-নিউজঃ ৫৪৩ আসনবিশিষ্ট ভারতীয় লোকসভার (সংসদের নিম্নকক্ষ) প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণের পূর্বক্ষণে প্রকাশিত জনমত জরিপে দেখা যায়, রাহুল গান্ধীর কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট ইউপিএ তেজি হয়েছে বেশ। তা সত্ত্বেও নরেন্দ্র মোদির বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট আসনশক্তির দিক থেকে এখনো এগিয়ে রয়েছে। টাইমস নাউ-ভিএমআর পরিচালিত এ জরিপ বলছে, ২০১৪ সালের তুলনায় এবার ইউপিএর আসন বাড়বে এবং এনডিএর কমবে।
এদিকে, পরিসংখ্যান মূল্যায়নকারীরা মনে করেন, এবারের লোকসভা নির্বাচনে নারীদের তাৎপর্যময় ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বশেষ জনমত জরিপে দেখা গেছে, গতবারের তুলনায় ইউপিএ এবার ৮৯টি আসন বেশি পাবে; তাদের আসন সংখ্যা হবে ১৪৯। এনডিএর আসন ৫৭টি কমে যাবে, তাদের আসন হবে ২৭৯টি। ২০১৪-এর লোকসভা নির্বাচনে তারা জিতেছিল ৩৩৬টি আসন। এ বছর সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ২৭৩ আসনের চাইতে ৬টি আসন বেশি পেতে পারে। জরিপে বলা হয় : পশ্চিমবঙ্গে লোকসভায় ৪২টি আসনের মধ্যে মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেস জিতবে ৩১টি, বিজেপি ৯টি ও কংগ্রেস ২টি। বামপন্থীরা কোনো আসন নয়। ‘উত্তর প্রদেশে বিজেপির লোকসান বিরাট হচ্ছে না’- জরিপে এটা দেখা যাচ্ছে। এ রাজ্যে তাদের আসন আগের চেয়ে ২৩টি কমবে বটে, তবু জিতবে ৫০টিতে। অখিলেশ-মায়াবতী-অজিত জোট পাবে ২৭টি আসন এবং ৩টি পাবে কংগ্রেস। ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য মহারাষ্ট্র। এখানে লোকসভার আসন ৪৮টি। এবার কংগ্রেস-এনসিপি জোটের শক্তি সামান্য বাড়বে। এর ফলে তারা পাবে ১০টি আসন। বিজেপি-শিবসেনা জোট পাবে ৩৮টি আসন। কেরালায় ওয়েনাড় আসনে প্রার্থী হয়েছেন রাহুল গান্ধী। এ রাজ্যে লোকসভার আসন ২০টি। এখানে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ইউপিএ জিতবে ১৭টি আসন। বিজেপি পেতে পারে ১টি আসন। যদি পায় তবে কেরালায় এই প্রথম তারা মাটিতে পা রাখবে।
নারীরা ফ্যাক্টর : ভোটের বাজারে বিপুল নারীশক্তিকে উপেক্ষা করার ঝুঁকি নিচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলই। নারী ভোটারদের কথা মাথায় রেখে শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি আঞ্চলিক দলগুলোও এবারের নির্বাচনে একাধিক নারীকে প্রার্থী করেছে। যার মধ্যে সবার ওপরে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ৪২ আসনের মধ্যে ১৭ নারী প্রার্থী দিয়েছে (৪০.৫ শতাংশ), বিজেডি ৭/১৯ (৩৬.৮ শতাংশ), সপা ৫/২৯ (১৭.২ শতাংশ), কংগ্রেস ৪৭/৩৪৪ (১৩.৭ শতাংশ) ও বিজেপি ৪৫/৩৭৪ (১২ শতাংশ)। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতীয় রাজনীতির গতিশীলতা যেভাবে দৃষ্টান্তমূলক পরিবর্তন রেখেছে, তাতে মনে করা হচ্ছে নারী ভোটাররা এবারের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পুরুষ ভোটারের শতকরা হার ছিল ৬৭.০৯ শতাংশ, যা নারী ভোটার থেকে মাত্র ১.৭৯ শতাংশ বেশি। এই সময়ে নারী ভোটার ছিল ৬৫.৩০ শতাংশ। তবে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশের ১৫টি রাজ্য আছে যেখানে পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি। যার মধ্যে লাক্ষাদ্বীপ, দাদরা ও নগর হাভেলি, পডুচেরি, দমন দিউ, মণিপুর, গোয়া, অরুণাচল, উড়িষ্যা, চ ীগড়, তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব, মেঘালয়, হিমাচল, উত্তরাখ , বিহার অন্যতম। এসব রাজ্য মিলিয়ে রয়েছে ১৩৫টি লোকসভার আসন (২৫ শতাংশ)। আবার আটটির বেশি রাজ্য আছে যেখানে পুরুষের তুলনায় নারী ভোট বেশি পড়েছিল বা সমান-সমান ছিল। এর মধ্যে রয়েছে পডুচেরি, কেরালা, গোয়া, মণিপুর, দমন দিউ, মেঘালয়, লাক্ষাদ্বীপ ও তামিলনাড়ু। এ আট রাজ্য মিলিয়ে মোট আসন সংখ্যা ৬৮টি, যা সংসদের মোট আসনের ১২.৫ শতাংশ। প্রতি বছর নারী ভোটারের সংখ্যা বৃদ্ধিতে একটা বিষয় পরিষ্কার যে, আগামী দিনে বিশেষ করে দেশের রাজনীতিতে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এ ক্ষেত্রে নারী সুরক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, তাদের কর্মসংস্থান বা নারীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত কোনো অপরাধের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার মতো বিষয়গুলোও দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ফলে দেশে পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে নারীদেরও তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে আরও বেশি সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত।
মোদির নির্বাচনী বহরে হামলায় নিহত ৫ : ভারতের ছত্তিশগড়ে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নির্বাচনী প্রচারের গাড়িবহরে ‘মাওবাদীদের হামলায়’ দলটির বিধায়ক ভীমা মানদাভিসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এনডিটিভি জানায়, জাতীয় নির্বাচনের মাত্র দুই দিন আগে গতকাল বিকালে ছত্তিশগড়ের দানতেওয়াড়া এলাকায় এ হামলা হয়। নির্বাচনী প্রচার শেষে ভীমার গাড়িবহর ওই এলাকা দিয়ে ফিরছিল।
বাংলাদেশ সময়: ৪:৫০:১০ ৫৫৭ বার পঠিত