বঙ্গ-নিউজ: রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহত হওয়ার ঘটনায় বুধবার (২০ মার্চ) রাজধানীতে পথে পথে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী সাধারণ। ভোর থেকে সড়কে দুয়েকটি বাস চললেও সেই বাসগুলোতে উঠতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে।
বুধবার (২০ মার্চ) সকালে অফিসে যাওয়ার জন্য বেরিয়েও গণপরিবহন কম থাকায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক-বীমায় কর্মরত হাজার হাজার মানুষকে। দুয়েকটি বাস চললেও অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে সেগুলোতে উঠতে পারছেন না।
জানা গেছে, অনেকে রিকশা, অটোরিকশা, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে করে ভেঙে ভেঙে অফিসে যাচ্ছেন। কিন্তু চাহিদার তুলনায় এসব যানবাহন কম থাকায় বেশি ভাড়া দাবি করা হচ্ছে। তারপরও অফিস ও গন্তব্যে পৌঁছাতে রাজি হচ্ছেন নগরবাসীরা। কিন্তু যাত্রীর চেয়ে যানবাহন কম হওয়ায় হুড়োহুড়ি পড়ে যাচ্ছে।
ভোর থেকে মিরপুর-১, ১০ ও ১১, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া, পল্লবী ও কালশী সড়কে লাইসেন্সধারী গণপরিবহন দুয়েকটি চলছে। মগবাজার, মৌচাক, শান্তিনগর ও মালিবাগের সড়কগুলোতে গণপরিবহন কম দেখা গেছে। মহাখালী, গুলশান, বনানী, তেজগাঁও, নাবিস্কো, রামপুরা ও বাড্ডা এলাকার কোনো সড়কেও গণপরিবহন কম ছিল।
রাজধানীর প্রগতি সরণি সড়কে বেপরোয়া চালকের বাসচাপায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র নিহতের হওয়ার ঘটনায় সংগঠিত সড়ক অবরোধ মঙ্গলবারের মতো স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা।
তবে আবারও বুধবার সকাল ৮টা থেকে আবারও আন্দোলন শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে পুলিশ, ওই এলাকার কাউন্সিলর ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষে অনুরোধে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত কর বলে জানা গেছে। বিইউপি সহকারী রেজিস্ট্রার মাকসুদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেছে। আমরা তাদের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই।
এদিন শিক্ষার্থীরা অবরোধ উঠিয়ে নিলে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে প্রগতি সরণিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবারের মতো আন্দোলন স্থগিত করা হলেও বুধবার সকাল ৮টা থেকে আবারও আন্দোলন শুরু করা হয়। এছাড়াও একইসঙ্গে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ এলাকা থেকে আন্দোলনে শরিক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা গেট এলাকায় সুপ্রভাত বাসের চাপায় বিইউপির শিক্ষার্থী আবরার আহম্মেদ চৌধুরী নিহত হন। তিনি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফের বড় ছেলে।
এ ঘটনার পর ঘাতক সুপ্রভাত পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল, ঘাতক চালকের ফাঁসির দাবিসহ ৮ দফা দাবিতে নানা স্লোগান দিয়ে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সড়ক ছাড়বে না বলে জানায় তারা। এসময় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে প্রগতি সরণিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
মঙ্গলবার দুপুরে মিরপুর ক্যান্টনমেন্টে বিইউপি ক্যাম্পাসে জানাজা শেষে বনানী সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আবরারকে। ছেলের এমন মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তার বাবা-মা।
এদিকে ছেলেকে এভাবে হারানোর বিষয়টি কোনোভাবে মেনে নিতে পারছেন বাবা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফ আহাম্মেদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, আমার বাবা তো আর কোনোদিন আমার কাছে আসবে না। তার মুখে আর বাবা ডাক শুনতে পারব না। একটি ঘটনায় আমার জীবনের সব সফলতা ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল।
বাংলাদেশ সময়: ১০:২৭:২৬ ৫৭৭ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম