বঙ্গ-নিউজ: চট্টগ্রামে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমান ছিনতাইয়ে চেষ্টাকারী পলাশের মৃত্যুর পর থেকেই গুঞ্জন উঠে ঢাকাই সিনেমার গ্লামারাস নায়িকা সিমলা ছিলেন পলাশ আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রেম থেকে বিয়ে, এরপর পলাশের মানসিক সমস্যা দেখিয়ে সেই বিয়েও ভেঙ্গে যায়। আর সেই ব্যর্থতার আঘাত থেকেই বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টার মতো ঘটনাও ঘটান পলাশ। তবে মাদ্রাসা পড়ুয়া পলাশ সিমলাকে বিয়ে করার আগেই জড়িয়ে পড়েন মাদক ব্যবসায়। মাদকাসক্ত জীবন তাকে পরিবার এবং সিমলা থেকেও বিছিন্ন করে দেয়।
সিমলা বর্তমানে ভারতের মুম্বইয়ে রয়েছেন বলে জানাগেছে। সেখানে তিনি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করছেন এমনটাই জানিয়েছেন সিমলা নিজেই।
মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যম কর্মীকে অডিও বার্তায় এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সিমলা। সিমলা জানিয়েছেন দেশের বাইরে থাকার কারণসহ বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারী নিহত পলাশের সাথে বিয়ে এবং তালাকের বিষয়ে:-
কেমন আছেন? ঘুম ঘুম চোখে সিমলা বললেন আছি, সবই তো জানেন। যাই হোক, কয়েক মাস ধরে মুম্বই রয়েছি। সিনেমার শুটিং নিয়ে খুবই ব্যস্ত। ছবির কাজ প্রায় শেষ বলতে পারেন। এখন শুধু পোস্টার ও ফটোসেশনের কিছু কাজ বাকি রয়েছে। মা ছিলেন সঙ্গে। ক’দিন আগে মা ঢাকায় চলে গেছেন। কি করে পলাশের সঙ্গে জানাজানি? আগে চিনতাম না।
২০১৭ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর একজন পরিচালকের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মাহাদির সঙ্গে কথা হয়। প্রথম আলাপেই ওর প্রতি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ি। কয়েক মাস কথা চলে। দেখা-সাক্ষাৎও হয়। এক সকালে সিদ্ধান্ত নেই মাহাদি ওরফে পলাশকে বিয়ে করবো। পলাশের বাবা-মা রাজি ছিলেন না, পরে জেনেছি। তাদের ভাষায়, ওতো এক বাউন্ডেলে। কখন কি বলে? মিথ্যা বলে বলে মানুষকে আকৃষ্ট করে। কখনো গার্মেন্ট ব্যবসায়ী। কখনো বিলেত প্রবাসী। কখনো আইটি বিশেষজ্ঞ। ফেসবুক আইডিতে চমকপ্রদ যতসব তথ্য। এসব দেখেই কি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন? বলতে পারেন তাই।
কিন্তু আমি জানতাম না ও এর আগে আরেকটা বিয়ে করেছে। ওর কোনো কথাই মিল নেই। মিথ্যুক যাকে বলে। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত কেন নিলেন? কি করার ছিল বলুন? ওর গ্রামের বাড়িতে যখন গেলাম তখনই বুঝতে পেরেছি আমার সর্বনাশ হয়ে গেছে। ওর বাবা-মা সাদাসিধে মানুষ। গ্রামের লোকজনের মুখে এমন সব কথা শুনলাম- যা আমাকে কষ্ট দেয়। তবুও সংসার করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারলাম না। অনেক কিছুই আছে। এখন সব কিছু বলবো না। তবে এটুকু বলছি, সে বিবাহিত এবং একটি সন্তান রয়েছে জানার পর আর স্থির থাকতে পারি নি। গত বছরের ৬ই নভেম্বর বনানীর একটি কাজী অফিসে গিয়ে তালাকনামায় সই করি। জানিয়ে দেই, গুডবাই পলাশ। এরপর ভারতে চলে আসি।
এখনো আছি। সিনেমা নিয়ে ডুবে আছি বলতে পারেন। সিমলা বললেন, পলাশকে নানাভাবে দেখেছি। কিন্তু কখনো অস্ত্র হাতে দেখি নি। বিমান ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত হয়েছে দেখে শুধু ভেবেছি। এত বড় সর্বনাশ করলো দেশের। এটা দুঃখজনক, লজ্জাজনক। কেউ যদি আমার কাছে পলাশ সম্পর্কে আরো তথ্য জানতে চান আমি বলবো। অবশ্যই বলবো। আমার কাছে দেশ বড়। পলাশের সঙ্গে সর্বশেষ কবে কথা হয়েছিল? কোরবানির ঈদের দু’সপ্তাহ আগে। তেমন কোনো কথা হয়নি। তখন শুধু বলেছিল দেশের বাইরে যাবে। কেন যাবে, কোথায় যাবে- তা বলেনি।
অন্য এক টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সিমলা বলেন, ওর সঙ্গে সংসার করা হয়নি। ফোনেই বেশির ভাগ আলাপ-আলোচনা হতো। সে সব সময় বলতো বিদেশে রয়েছে। একদিন ওর পাসপোর্ট দেখে তাজ্জব হয়ে গেলাম। পাসপোর্টে কোনো ভিসা নেই। বলতো ব্যারিস্টারি পড়ে। এরও কোনো প্রমাণ মেলে নি।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে ঢাকার সোনারগাঁওয়ের স্থানীয় তাহেরপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেন পলাশ। পরে সোনারগাঁ ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হলেও প্রথম বর্ষের পর আর পড়াশোনা করেননি। গত সাত বছর আগে বিদেশ থেকে স্থায়ীভাবে দেশে চলে আসেন পলাশের বাবা। এলাকায় তিনি একটি মুদি দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খী’ উড়োজাহাজ ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিল। এরপর চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশের ওই ফ্লাইটটি ১৩৪ যাত্রী ও ১৪ ক্রু নিয়ে জরুরি অবতরণ করে। পরে কমান্ডো অভিযানে সন্দেহভাজন বিমান ‘ছিনতাই চেষ্টাকারী’ নিহত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২:১৮:৫৭ ৫৩২ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম