বঙ্গ-নিউজল দীর্ঘ চার বছর পর বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)।
বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দেওয়া ওই হত্যাকাণ্ডে ১২ জনের সম্পৃক্ততার তথ্য পেলেও তাদের মধ্যে পাঁচজনের নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় এবং একজনের মৃত্যু হওয়ায় অভিযোগপত্রে আসামি করা হচ্ছে মোট ছয়জনকে।
জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের কথিত নেতা সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক এবং ‘উগ্রপন্থি ব্লগার’ সাফিউর রহমান ফারাবীও রয়েছেন এই ছয়জনের মধ্যে।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়ার আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হয়।
“এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্র অনুমোদনের জন্য আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর আবেদন করেছেন। প্রজ্ঞাপনপ্রাপ্তি সাপেক্ষে পূর্ণাঙ্গ কেইস ডেকেট আদালতে পাঠানো হবে।”
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে এই স্থানেই খুন হন অভিজিৎ রায়
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে নিয়ে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে জঙ্গি কায়দায় হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অভিজিৎ রায়। চাপাতির আঘাতে আঙুল হারান তার স্ত্রী।পদার্থবিদ অধ্যাপক অজয় রায়ের ছেলে অভিজিৎ থাকতেন যুক্তরাষ্ট্রে। বিজ্ঞানের নানা বিষয় নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি মুক্তমনা ব্লগ সাইট পরিচালনা করতেন তিনি। জঙ্গিদের হুমকির মুখেও তিনি বইমেলায় অংশ নিতে দেশে এসেছিলেন।
ঘটনার পর শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন অধ্যাপক অজয় রায়। দীর্ঘ দিনেও ছেলের হত্যার বিচার না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে আসছিলেন তিনি।
ঢাকার মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারী অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৫ মার্চ পর্যন্ত সময় দিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে।
আসামি যারা
যে ছয়জনকে অভিজিৎ হত্যার অভিযোগপত্রে আসামি করা হচ্ছে তারা হলেন-
১. বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর বলে কথিত সৈয়দ জিয়াউল হক, যার সাংগঠনিক নাম সাগর ওরফে ইশতিয়াক ওরফে বড় ভাই
২. মো. মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার
৩. মো. আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব
৪. মো. আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম ওরফে সাজ্জাদ ওরফে শামস
৫. আকরাম হোসেন ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে হাসিবুল ওরফে আব্দুল্লাহ
৬. সাফিউর রহমান ফারাবী
চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হককে ধরিয়ে দিলে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা রয়েছে
চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হককে ধরিয়ে দিলে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা রয়েছে
‘উগ্রপন্থি ব্লগার’ সাফিউর রহমান ফারাবী সিলেটের অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলারও আসামি
এই ছয় জনের মধ্যে জিয়াউল হক ও আকরাম হোসেন ওরফে আবির পলাতক। বাকি চারজন কারাগারে রয়েছেন।
আসামিদের মধ্যে ফারাবী ছাড়া বাকি সবাই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের জঙ্গি বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল বলেন, “জবানবন্দি, প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্লেষণে পাশাপাশি গোয়েন্দা তথ্য মিলিয়ে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, এই ঘটনাটির মাস্টারমাইন্ড হচ্ছেন সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত, পলাতক মেজর জিয়া।”
তিনি বলেন, কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের তদন্তে এ মামলায় মোট ১১ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর বাইরে সাফিউর রহমান ফারাবী গ্রেপ্তার হয়েছিলেন র্যাবের হাতে।
“ফারাবী ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে অভিজিৎ রায়কে হত্যার প্ররোচনা দিয়েছিলেন। এ কারণে প্ররোচনাদাতা হিসেবে তাকে এ মামলায় আসামি দেখানো হচ্ছে।”
গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান এবং আবু সিদ্দিক সোহেল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মনিরুল বলেন, “তারা তাদের নিজেদের দায়িত্ব এবং অন্য কারা এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন, কীভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে, সবকিছুই জবানবন্দিতে বর্ণনা করেছেন।”
বাংলাদেশ সময়: ১৬:২৮:৫৮ ৮৪২ বার পঠিত #bangla news #bd news #bongo-news #bongo-news.com #hot news #news 24 #online news #thikadar #অভিজিৎ #বঙ্গ-নিউজ #বঙ্গ-নিউজ ডটকম #বাংলা নিউজ