ছাত্র নেতা থেকে উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » ছাত্র নেতা থেকে উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম
রবিবার, ৬ জানুয়ারী ২০১৯



ফাইল ছবি

বঙ্গ-নিউজঃ  এনামুল হক শামীম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন ত্যাগী, জনপ্রিয় ও পরিশ্রমী শীর্ষ নেতা। তৃনমূল পর্যায় থেকে শুরু করে দলের শীর্ষস্থান পর্যন্ত তার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নাতীত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা ও বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাঙ্ক্ষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার সংগ্রামে উনি দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

এ কে এম এনামুল হক শামীম ১৯৬৫ সালে শরিয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার পাইকবাড়িতে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আলহাজ্ব মোহাম্মদ আবুল হাশেম মিয়া ও মাতা বেগম আশরাফুন্নেসা। পেশাগত জীবনে তার বাবা ছিলেন একজন প্রকৌশলী।

শামীমের দাদা আলহাজ্ব রওশন আলী ছিলেন একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং নানা আব্দুল জলিল মুন্সী ছিলেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। বলা যায় ছোটবেলা থেকেই রাজনৈতিক আবহে বড় হয়েছেন তিনি।

স্কুলজীবনেই ছাত্ররাজনীতির হাতেখড়ি হয় এনামুল হক শামীমের। প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিবেশ সত্ত্বেও জাতির পিতার আদর্শ বুকে নিয়ে যোগ দেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগে।

১৯৭৯ সালে নোয়াখালীর এমএ উচ্চবিদ্যালয়ে পাঠরত অবস্থায় উনি স্কুল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পাশ করার পর উচ্চশিক্ষা লাভের ব্রত নিয়ে ভর্তি হন ঐতিহ্যবাহী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে আরো নিবিড়ভাবে জড়িয়ে পড়েন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে তিনি ছিলেন তুমুল জনপ্রিয়। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের বিপুল ভোটে ১৯৮৯ সালে শামীম জাকসুর ভিপি নির্বাচিত হন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির পাশাপাশি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়েও তার ছিলো সদর্প বিচরণ। ১৯৯০ সালে তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। সততা, আন্তরিকতা, কঠোর পরিশ্রম ও জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিশ্বস্ততার পরম পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে ধীরে ধীরে উঠে আসেন ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে। ১৯৯২ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ-সভাপতি এবং ১৯৯৪ সালে উনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

শেখ হাসিনা সারাদেশের ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে ছাত্রলীগের পতাকাতলে নিয়ে আসার যে গুরু দায়িত্ব তার উপর অর্পণ করেন তা অত্যন্ত সফলতার সাথে তিনি পালন করেন। শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির বার্তা নিয়ে তিনি ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। মূলত উনার নেতৃত্বের গুণেই তার মেয়াদকালে ৭৫ পরবর্তী সময়ে প্রথমবারের মত সারাদেশে ছড়িয়ে পরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জয় জয়কার। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ইতিহাসে এনামুল হক শামীমের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে সবসময়।

’৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং ’৯৬ এর খালেদাবিরোধী ‘জনতার মঞ্চ’ এর অন্যতম সংগঠক ছিলেন এনামুল হক শামীম।

২০০১-২০০৬ সালে তৎকালীন বিএনপি-জামাত জোট সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে সারাদেশের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংগঠিত করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। যার ফলে তার উপর নেমে আসে অত্যাচারের খড়গহস্ত। শতাধিক মামলার আসামী করা হয়ে তাকে, একাধিকবার কারাবরণ করেন তিনি।

২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে মৃত্যুর লড়াই থেকে ফিরে আসেন তিনি। গায়ে শতাধিক গ্রেনেডের স্প্লিন্টার প্রথমে রাজধানীর শিকদার মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ভারতের এপোলো হসপিটালে পাঠানো হয়। এখনো শরীরে গ্রেনেডের আঘাতের চিহ্ন ও স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন এনামুল হক শামীম।

১/১১ এর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সংস্কারপন্থীরা যখন শেখ হাসিনার সমালোচনা ও বিরোধিতা করা শুরু করেন এবং ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা বাস্তবায়ন করে দলে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় মত্ত হন তখন তাদের এই হীন অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম প্রকাশ্য বিরোধিতা করেন শামীম। শেখ হাসিনাকে যখন গ্রেফতার করা হয় তখন আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতা নিশ্চুপ থাকলেও শামীম সমমনাদের সাথে নিয়ে সারাদেশের ছাত্রসমাজ ও আওয়ামী অন্তঃপ্রান মানুষদের ঐক্যবদ্ধ করে নেত্রীর মুক্তির জন্য রাজপথে প্রবল আন্দোলন গড়ে তোলেন।

একেএম এনামুল হক শামীম ২০০২ থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অবজারভার মেমবার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারীতে প্রথমবারের মতো এবং ২০১২ সালের ডিসেম্বরের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য মনোনীত হন।

একেএম এনামুল হক শামীম একজন আজন্ম সংগ্রামী মানুষ। প্রচারবিমুখ এই নেতা প্রচারের আলো থেকে সচেতনভাবে দূরে থেকে সর্বদা শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতিটি নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে হয়ে উঠেছেন বিশ্বস্ত সহচর। শেখ হাসিনার প্রতি বিশ্বস্ততার সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির জাতীয় পর্যায়ে উঠে এসেছেন তিনি।

একনজরে একেএম এনামুল হক শামীমের রাজনৈতিক জীবনঃ

১৯৭৯ : এ এম উচ্চবিদ্যালয় স্কুল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক
১৯৮৪ : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক
১৯৮৬ : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক
১৯৮৮ : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি
১৯৮৯ : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদ (জাকসু)’র ভিপি
১৯৯০ : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য
১৯৯২ : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি
১৯৯৪ : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি
১৯৯৮ : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য
২০০২ : বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির অবজারভার মেম্বার
২০১২ : ফেব্রুয়ারি : বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য (১ম বার)
২০১২ : ডিসেম্বর : বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য (২য় বার)
২০১৬ : অক্টোবর : বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক।

বাংলাদেশ সময়: ১৯:১০:৪৬   ১৮৮৭ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আজকের সকল পত্রিকা’র আরও খবর


নেতাকর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন হাজী মোহাম্মদ হারিজ খান
সেরে উঠলেন ক্যানসার রোগীরা
আশুলিয়ায় খুশবু রেস্তোরাঁ উদ্বোধন
ধর্মপাশায় ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে শিক্ষকদের কর্মসূচী
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা ও কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি পণ্য সরবরাহ
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা ও কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি পণ্য সরবরাহ
বিশ্বব্যাপী প্রবাসীদের প্রতি দায়িত্ব পালনে কূটনীতিকদের আন্তরিক হতে হবে: শেখ হাসিনা
শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় ইদুর নিধন
শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় ইদুর নিধন

আর্কাইভ