৫৪ তম পর্ব–
ডেমাজানি শাখা ,বগুড়া -১৩।
এ সময় প্রধান কার্যালয় থেকে কেবলমাত্র কৃষিঋণ আদায় করার জন্য একজন করে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার পদ মর্যাদার কর্মকর্তা সারা দেশের বিভিন্ন শাখায় নিয়োজিত করা হয়। কৃষি ঋণের পরিমান যেহেতু ডেমাজানী শাখায় অনেক বেশী তাই এখানেও একজন এলেন। উনার নাম নজির আহমেদ। বাড়ী চট্টগ্রাম। অগ্রণী ব্যাংকের পূর্বসূরী হাবিব ব্যাংক আমলের কর্মকর্তা। সমস্যা হলো -উনি থাকবেন কোথায় । এলাকায় কোন আবাসিক হোস্টেল নাই। কি আর করা , আপাততঃ আমার বাড়ীতে উঠলেন। পরে আমাদের বাড়ীতে স্থায়ী হয়ে গেলেন । মাস কয়েক অর্থাৎ ডেমাজানি শাখায় অবস্থান কালীন পুরাটা সময় উনি আমাদের বাড়ীতেই থাকলেন। শুরু হলো আমার জীবনের অন্য অধ্যায়। বনে গেলাম বাঙালী কাবুলিওয়ালা। আমার রোজকার দ্বায়িত্ব হয়ে গেল হেড অফিসের স্যারকে মটর সাইকেলে নিয়ে ঋণ আদায়ে সারাদিন বা নিদেন পক্ষে আধাবেলা গ্রামে গ্রামে এবং রাতে হাটে হাটে যাওয়া। গ্রামে গ্রামে সাইকেল নিয়ে দিনে সাথে থাকতো সাধারনতঃ রন্জু একা তবে এলাকার হাটগুলোতে রফিক ও রন্জু দুজনেই । অন্য দুজন মাঠ সহকারী আমানুল্লাহ ও শহীদুলও মাঝে-মধ্যে আমাদের সাথে থাকতো , তবে অধিকাংশ সময় তারা নিজেরাই হেড অফিসের স্যারের পরিকল্পনায় আলাদা রুটিন করে আদায়ে বের হতো। রন্জুর কথাতো আগেই বলেছি । যা হোক ঋণ আদায়ের এ ক্রাশ প্রোগ্রমের কথা পরে এক স্থানে লিখবো। এবার ঋণ আদায় অধ্যায় আপাততঃ স্থগীত রেখে সে সময় শাখার এর্টণী আ্যাসিসট্যান্ট রফিকের অধ্যায় শুরু করতে চাই। অনেক বড়বড় রঙ্গ-রসের যোগানদার ছিল যে এই রফিক।
রফিক একই হাইস্কুলে আমার এক ক্লাস উপরে পড়তো। ওর ভাই শামসু আবার আমাদের সাথে পড়তো। এক ক্লাশ উপরে পড়লেও আমাদের সম্পর্ক ছিল বন্ধুর মত। আমরা একে অপরকে তুই তুই করে বলতাম। স্কুল জীবন থেকেই রফিক যেন -কেমন। তাদের বাসা ছিল স্কুলের একদম কাছে। যেদিন ঝমঝম করে বৃষ্টি নামছে অন্যদিকে স্কুলের ছুটির ঘন্টা বেজে গেছে সেদিন বিশেষ করে স্কুলের কাছের ছেলেরা বই খাতা রেখে ফুটবল নিয়ে বৃষ্টির মধ্যেই মাঠে নেমে পড়তো। মুহুর্তেই ছাত্ররা দুই দলে ভাগ হয়ে খেলা শুরু করে দিত। বৃষ্টির দিন ছাড়াও অন্যান্য সময়েও ফুটবল নিয়মিত আয়োজন ছিল। অন্যান্য সবার তুলনায় লম্বা চওড়া রফিককে সাধারনতঃ কেউ দলে নিতে চাইতোনা দুই কারনে-
প্রথমতঃ মাঠে নামার পর ও ভুলে যেত ওর গোল পোষ্ট কোনটি । প্রায়ই নিজের গোল পোষ্টে নিজেই গোল দেয়ার অপচেষ্টা চালাতো । এমনই ভুলো মন ছিল তার।
দ্বিতীয়তঃ- হয়তো ওর কাছে বা ওর ধারে কাছেও বল নেই অথচ ও মাঠে বিনা কারণে পিছলে পড়ে চিৎপটাং। খেলা বন্ধ। ওর সেবা করো এখন। অবশ্য কেউ দলে নিবে কি না নেবে তাতে বয়েই যেত রফিকের। স্বেচ্ছায় মাঠে নেমে যে কোন এক দলে ভিড়ে যেত। দেখতে তাল গাছের মত লম্বা। বলের পিছে না ঘুরে সারা মাঠময় খামাখা দাপিয়ে বেড়াতো। ঠপা ঠপ পড়ে যেত । কালে ভদ্রে পায়ে বল গেলে আপন পর ভেদাভেদ না করে গোল দিতে তৎপর হতো। ভুলোমন ছিল রফিকের একটা প্রধান বৈশিষ্ট্য ।
শুধু রফিককে অবশ্য দোষ দিয়ে লাভ নাই , সারা পৃথিবীর বিখ্যাত অনেক লোকেরও ভুলো মন ছিল। ভুলো মন নিয়ে অনেক গল্প আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত বোধ হয় আইনস্টাইনের একটি গল্প-
আইনস্টাইন একবার ট্রেনে চড়ে যাচ্ছিলেন। টিকেট চেকার এসে টিকেট দেখতে চাইলে আইনস্টাইন টিকেট খোঁজা শুরু করে দিলেন । কিন্তু কিছুতেই টিকেট খুঁজে পাচ্ছেন না, কোথায় যে টিকেট রেখেছেন।
টিকেট চেকার আইনস্টাইনকে চিনতে পেরে বললেন, “প্রবলেম নেই। আপনাকে আর কষ্ট করে খুঁজতে হবে না। আমি জানি ,আপনি নিশ্চয়ই টিকেট কেটেছেন।”
“না, না, খুঁজতে হবে”, আইনস্টাইন ব্যস্ত হয়ে বললেন, “ওটা না পেলে আমি জানব না যে আমি কোথায় যাচ্ছি।”
যা হোক,ডেমাজানি শাখায় যোগদান করে দেখি রফিক এখানে সিনিয়র ক্লার্ক তথা এর্টণী আ্যাসিসট্যান্ট পদ মর্যাদায় মহাসমারোহে অধিষ্ঠিত। লেজার পোষ্টিং দেয়, সাপ্লিমেন্টারী লেখে। সব চেয়ে বড় কথা সে জেনারেল লেজার (জি /এল ) লেখে। প্রত্যহ বিকেলে সে যখন জেনারেল লেজার লেখা শুরু করতো তখন শাখার সবার মধ্যে একরকম স্তব্ধতার সৃষ্টি হতো। সে বলতো ক্যাশবুক কাম জেনারেল লেজার ইজ এ হার্ড সাবজেক্ট। কেউ কথা বললে কিন্তু যোগে ভুল হতে পারে।
সেনানিবাস শাখার নান্টু নানার চেয়ে রফিক ছিল আরো একধাপ এগিয়ে । বিকেলে জেনারেল লেজার তথা জি এল বা ক্যাশবুক লেখার সময় হলে একটা রুমাল, একটা ব্রাশ, ইরেজার, সাদা কালি, ব্লটিং পেপার- এগুলি সামনে নিয়ে বসতো। কেউ যাতে কথা না বলে- তা বার বার সবাইকে স্বরণ করে দিত। তারপর মহা আয়োজনে জি এল তথা ক্যাশ বুক লেখা শুরু করতো। শাখায় কথা বেশী হলেই সে তর্জনী উঁচিয়ে তার বাম হাত একদম সোজা করে উপরে তুলে রাখতো , যাতে কেউ আর কথা না বলে। লিখতো আর মুছতো। মুছতো আর লিখতো। আর অহরহ বলতো ব্যাংকের মধ্যে এত হৈ চৈ হলে কি আর ক্যাশ বুক লেখা যায় ? অন্যরা বলতো, দেশে আপনি কি একই ক্যাশবুক লেখেন না আরো কেউ লিখে, নাকি ? অকাট্য এ যুক্তি শুনে সে আপাততঃ অবশ্য চুপ করতো। লেনদেনের সময় শেষ হলে শাখায় সাধারণতঃ কাস্টমার তেমন আসে না। সে অবসরে কাজ করতে করতেই ব্যাংকাররা কিছু গাল- গল্পে মেতে উঠে। আমিও তাদের কথায় মাঝে –মধ্যে সায় দিতাম। অন্যদিকে ত্যক্ত-বিরক্ত রফিক কিছুক্ষণ কিছুক্ষণ করে নিয়মিত বিরতি দিয়ে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠা অব্যাহত রাখতো। চাকুরী পেলেই যে সৈনিক জীবন ভাল লাগবে এমন না। ব্যাংকে চাকুরী করলেই যোগ বিয়োগ যে ভাল লাগবে তেমনও না। অবশ্য যার নেশা আর পেশা মিলে যায় সে সৌভাগ্যবান ।
এখন আর জি এল হাতে লিখতে হয় না। সে যুগে ক্যাশবুকের বিশাল লম্বালম্বি যোগ গুলো এবং পাশাপাশি যোগ-বিয়োগগুলো আসলেও কঠিন ছিল। তা ছাড়া ক্যাশ বুক না মিললে আবার সব ভাউচার –যোগ- বিয়োগ পুনঃচেক করতে হতো। বড়বড় যোগ বিয়োগ করতে হতো মুখে মুখে। মুখে রাজ্যের বিরক্তির ভাব ফুটিয়ে রফিক নিয়মতই তা করে যেত।
এই রফিক বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ একদিন বিয়ে করে বসলো । বিয়ের পর ব্যাংকে মাঝেমাঝে পারিবারিক জীবনের গল্পও করতো। ব্যাংকের ভিতরে একদিন গল্পোচ্ছলে জানাল, রেডিওতে যখন রবীন্দ্র সঙ্গীত হয় তখন ব্যাটারী খরচ না করে তা বন্ধ রাখাই তাদের বাড়ীর রেওয়াজ কিন্তু তার বৌ তখন রেডিওতো বন্ধ করেই না বরং রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনে। রফিকও অবশ্য গান পছন্দ করতো তবে সেটা শুধু সিনেমার গান। স্কুল জীবনে তার কন্ঠে শুনেছি -
আমি সাত সাগর পাড়ি দিয়ে কেন সৈকতে পড়ে আছি। মাহমুদুন্নবীর দরাজ গলা সে গাল ফুলিয়ে অনুকরণ করার চেষ্টা করতো। কিন্তু রবীন্দ্র সঙ্গীত শোনার মত যে একটা বিষয় এটা তার মাথায় কোন দিন আসে নাই।
রফিককে ২টি বিষয় আমি কখনই বোঝাতে পারি নাই। ও বলতো অফিস ৯টায় শুরু এ কথার অর্থ বাসা থেকে ৯টায় বের হতে হবে। সে নিয়ম করে এটা মানতো। কখনই ৯টার পর বাসা থেকে বের হতো না। অফিস অবশ্য কাছেই। সাইকেলে ১০/১৫ মিনিট লাগতো। সর্বদাই সে এ ১০/১৫ মিনিট লেট করেছে। আর প্রাইমারী স্কুলের টিচারদের ছুটি থাকলে সে ঐ দিন অফিসে আসতোনা। বলতো ওদের ছুটি আমাদের ছুটি নাই কেন? তার গ্রামে অনেক টিচার। সে তাদের ছুটির খবর পেত। এমনি অফিসে রওনা দিয়ে আসার পথে যদি শোনে আজ স্কুল বন্ধ তখনই সে ফিরে বাসায় চলে যেত। না আসলে সেদিন তার ছুটি মার্ক করা হতো। কিন্তু তার এ সাইকোলজীর অর্থ আমি ধরতে পারি নাই। হয়তো ও ভেবেছিল বড় হলে প্রাইমারী স্কুলের টিচার হবে। আর ছুটির দিন হয়তো খুব ভালবাসতো। এ ২টি মিলেই হয়তো এ টানা পোড়েন। আমি শাখায় যোগদানের আগে থেকেই সে এতে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছে। আমিও তার এ ভুল ভাঙ্গাতে পারি নাই। অবশ্য ব্যাংকের কাজে ও ব্যবসা উন্নয়নে সে সবসময় নিবেদিত প্রাণ ছিল। অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব পালনে তাকে কোন দিন বেজার হতে দেখি নাই ।
যেদিন প্রাইমারী স্কুলের টিচাদের বেতন হতো সেদিন নয়/দশ মাইল দুরে বগুড়া শহরে যেয়ে নগদ অর্থ নিয়ে আসতে হতো। অন্যান্য দিনেও প্রয়োজনে ক্যাশ আনতে হতো , তবে মাস্টারদের বেতনের দিনে তা অবধারিত ছিল। তখন ব্যাংকের এত গাড়ী ছিল না। প্রয়োজনীয় ক্যাশ আনা, অতিরিক্ত ক্যাশ জমা দেবার জন্য শহরের নির্দিষ্ট শাখায় বাসে/ট্রেনে, রিকশায় যেতে হতো। বয়স্ক গার্ডের হাতে ততোধিক বয়স্ক বন্দুক, অন্যহাতে তালাবদ্ধ ট্রাংক সাথে একজন কর্মকর্তা। এভাবেই চলতো ক্যাশ রেমিট্যান্স। মাঝে মাঝে সোলায়মানকে সাথে নিয়ে রফিককেই এ কাজ করতে হতো। সে বোধহয় এ কাজটা অপছন্দও করতো না । প্রাইমারী স্কুলের টিচাদের বেতন প্রদানের জন্য একদিন সকালে রফিক শহর থেকে ক্যাশ আনতে গেছে তো ফেরার আর নাম-গন্ধ নাই। শাখায় কোন ফোন নাই যে খবর নিব। অধৈর্য্য শিক্ষকবৃন্দের পদভার ভারী থেকে ভারীতর হতে চলেছে। অবশেষে শেষ বিকেলে রফিকের দেখা মিললো। বিষন্ন ও মলিন বদনে। সোজা এসে স্ট্রং রুমে ঢুকলো । আমাকে বারবার ষ্ট্রং রুমে যাবার জন্য ডাকছিল। আর আমি বার বার বলছিলাম আগে শিক্ষকদের চেক পেমেন্ট শুরু করার জন্য। না সে নাছোড় বান্দা। আমাকে ষ্ট্রং রুমে যেতেই হলো। সে যা বললো তাতে তো আমার আক্কেল গুড়ুম।
সেদিনও যথারীতি সকাল সকাল ক্যাশ আনতে গিয়েছিল রফিক। ফিডিং শাখার ক্যাশিয়ার নাকি বলেছিল ক্যাশ দিতে একটু দেরী হবে । হাতে সময় আছে বিধায় রফিক নিউমার্কেটে একটু ঘুরতে যায়। ক্যাশ প্রদানকারী থানা রোড শাখার পাশেই নিউ মার্কেট। নিউ মার্কেটের অলি -গলি ঘুরতে ঘুরতে এলাকার এক পুরাতন বন্ধুর সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। সেই পুরাতন বন্ধু আবার রফিকের বিয়ের ঘটকালী করেছিল। বিয়ে করে কেন জানিনা রফিক শ্বশুরবাড়ীর উপর বেজায় অসন্তষ্ট ছিল । ঘটককেও দোষারোপ করতে শুনেছি। এ ঘটকের সাথে দেখা হবার পর রফিক নাকি এক সময় বেমালুম ভুলে যায় যে সে ক্যাশ নিতে এসেছে এবং শাখায় প্রাইমারী শিক্ষকগণ বেতনের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। রফিকের একটা বৈশিষ্ট্য যে ছিল তার ভুলো মন , তাতো আগেই বলেছি। যা হোক ,জোহরের আযান শুনে রফিকের যখন হুঁস হয় তখন ঘড়ির কাঁটা একটা পেরিয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি থানা রোড শাখায় যেয়ে দেখে গার্ড সোলায়মান বসেই আছে কিন্তু ক্যাশ কাউন্টার বন্ধ হয়ে গেছে। তখন লেনদেনের সময়সীমা ১টা পর্যন্ত ছিল। ক্যাশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সে শাখার ব্যবস্থাপকের কড়া নির্দেশ ছিল ১টার পর কোন শাখা আর ক্যাশ পাবে না। ম্যানেজার সাহেব ছিলেন আবার জামালপুরের। স্থানীয় হলে না হয় একে ওকে ধরে মন গলাতে পারতো। রফিক অনেক চেষ্টা করে শেষমেষ বিফল মনোরথ হয়ে ফিরে এসেছে।
সবই শুনলাম, সবই বুঝলাম। কিন্তু শিক্ষকদের সামলাবে কে? রফিক বললো আমিই দেখছি। এক রাশ হতাশা , দুঃখ ও লজ্জা নিয়ে ষ্ট্রং রুমের এক কোণায় একটা চেয়ারে আমি বসে পড়লাম। ও দিকে লোকাল হিরো রফিক মাস্টারদের সামলাচ্ছে। বলছে পাবেন। হৈ চৈ হচ্ছে , নানা মন্তব্য ভেসে আসছে। ম্যানেজার কই ,ম্যানেজার কই মর্মে মিছিলের মত রব উঠছে। আমি দু’কান হাতের তালু দিয়ে চেপে ধরে রাখলাম। তবু শুনতে পেলাম তবুও কানে আসলো জামাল সাহেব মিনতি করে বারবার বলছে আগামীকাল অবশ্যই বেতনের টাকা পাবেন। আস্তে আস্তে শোরগোলের তীব্রতা কমতে থাকলো। উপায়ান্তর না দেখে এক সময় শিক্ষকগণ ব্যাংক থেকে চলেও গেলেন। পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলো।
আমি দ্বিতীয় কর্মকর্তা জামাল সাহেব কে ষ্ট্রং রুমের নিভৃতে ডাকলাম। বললাম রফিকের নামে ব্যাখা তলব করা দরকার। জামাল সাহেব কই আমার কথার সমর্থন দিবে উল্টা রফিকের পক্ষে ওকালতি শুরু করলো। তার যুক্তি থানা রোড শাখা তো তাকে প্রথমে ক্যাশ দিতে পারে নাই। তার পরে একটু না হয় দেরীই হয়েছে তাই বলে এত কড়াকড়ি করবে ? তার কথাতে আমিও নরম হলাম । নিয়ম-কানুন তো মানুষের সুবিধার জন্য। অহেতুক এত কড়াকড়ি করলে অন্যকে যে সাফার করতে হবে এটা তো থানা রোডের ম্যানেজার সাহেবের বোঝার কথা । এর আগেও থানা রোডের এরুপ হয়রানী করার কথা আমারও কানে এসেছে। আর রফিক একটু ভোলা-ভালা বটে তবে মিথ্যা কথা তো বলে না। সে আমাদেরকে মিথ্যা কথা বলে ম্যানেজ করতে পারতো – তা অবশ্য সে কখনই করতো না। সিদ্ধান্ত নিলাম জোনাল হেড স্যারের কাছে থানা রোড শাখার এরুপ অমানবিক কড়াকড়ির বিষয়ে নালিশ দিব।
তবে আজ যখন আড়াই যুগ আগের এ ঘটনাটি স্মরণ করছি, তখন সব কিছু ছাপিয়ে মনে হচ্ছে সেযুগে যদি মোবাইল ফোন থাকতো তা হলে শুধু সেদিনের ঘটনাটা নয় এ রকম হাজার প্রকার বিড়ম্বনা থেকে আমরা তখন রক্ষা পেতে পারতাম। (ক্রমশঃ)
বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৫:৫৮ ৭০৩ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম