বঙ্গ-নিউজ: দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনসহ কোনো নির্বাচন যে সুষ্ঠু হয় না তার প্রমাণ এবারের নির্বাচন। নির্বাচনের নামে অর্থহীন এ তামাশার প্রয়োজন ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
আজ রবিবার (৩০ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে একথা বলেন তিনি।
এসময় সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম, দলীয় সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না। এবারের নির্বাচন সেটাই প্রমাণ করলো। ২২১টি আসনের প্রতিটি কেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্টদের মারধরের পর বের করে দেওয়া হয়েছে। অনেক জায়গায় পোলিং এজেন্টকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
আলাল বলেন, বহুল প্রতিক্ষীত ও বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচনে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি জাগরণ এসেছিল। কিন্তু যেদিন আমরা দেখলাম, সকল নির্বাচনী ইতিহাসের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের দিন সমস্ত হাসপাতাল, সমস্ত ডাক্তার ও সকল অ্যাম্বুলেন্সকে স্যান্ডবাই রাখার জন্য বলা হলো। সেদিনই আমরা ভেবেছিলাম, বোধ হয় নির্বাচনটা সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার সেটা আগেই জেনেছিলেন। জেনেই উনি ভোটারদেরকে সতর্ক করেছিলেন। ওনার সেই আশঙ্কাটাই এখন সত্য বলে প্রমাণ হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা যে কথাগুলো বার বার বলছিলাম। যেগুলোকে গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল। ব্যালট পেপারে আগেই সিল মারা হবে, কোথাও কোথাও আগেই ব্যালট বাক্স ভরে রাখা হবে। ভোটারদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মেরে পিটিয়ে কেন্দ্র থেকে দূরে রাখা হবে। সেই চিত্রই কিন্তু আমরা দেখছি এবং আমাদের সেই আশঙ্কাই সত্যি বলে প্রমাণ হলো।
তিনি আরো বলেন, আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে বিশেষ করে বলব, আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে ভুল করা হবে। অংশগ্রহণ না করলে বিএনপি পিছিয়ে যাবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হবে। তাই আমরা পরিপূর্ণ উদ্যমে অংশগ্রহণ করে বাধাগ্রস্ত হয়ে দেখালাম, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না।
ইসিকে দেওয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. নজরুল ইসলাম খানের লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘দেড়শতাধিক আসনে প্রশাসনের সহায়তায় নৌকা মার্কায় সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়েছে। ধানের শীষের এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। অনেক ভোটকেন্দ্রে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের নির্বাচনি ক্যাম্প স্থাপন করতে দেওয়া হচ্ছে না। এজেন্টরা ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে পারছে না। নৌকা প্রতীকের এজেন্টরা তাদের (বিএনপির এজেন্ট) কাছ থেকে ব্যালট পেপার জোর করে কেড়ে নিচ্ছে। নৌকা প্রতীকে সিল মারছে আওয়ামী লীগের এজেন্টরা। ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দিচ্ছে। কোনও কোনও ভোটকেন্দ্রে শারীরিক নির্যাতন করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন বা পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে এখন পর্যন্ত (দুপুর ২টা পর্যন্ত) যা জানতে পেরেছি, তাতে ২২১ আসনে অনিয়মের একই চিত্র। মাত্রার হের-ফের থাকতে পারে। তবে সারাদেশে সার্বিক চিত্র এমনই।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোট তো প্রায় শেষ হয়েই গেছে। ভোটে না থাকার তো কোনো যৌক্তিকতা নেই। থাকতেই হবে।
এমন পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত আপনারা কী করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত কী করব, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:০৫:৪০ ৪২৮ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম