মো:ফয়সাল আজাদ, বঙ্গনিউজ ডট কম: দেশের অর্থনৈতিক পরিন্ডল বীমা শিল্প একটি আলোচিত খাত। জীবন বীমা সেক্টরে মেয়াদী সঞ্চয় জাতীয় পুজি জোরদারে সহায়ক ভ’মিকা রাখছে। ধারাবাহিকভাবে বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাক্তি, পরিবার, আর্থিক ও সম্পদের ঝুকি নিরাপত্তামূলক কাজে নিয়োজিত। অর্থনীতি বিদদের ভাষায় জীবনবীম কার্যক্রমের সঞ্চয়ে ব্যবস্থাপনা যে কোন ব্যাংকের তুলনায় অনেক শক্তিশালী। বর্তমানে ৬২টি বীমা কোম্পানীর মাধ্যমে বার্ষিক প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা প্রিমিয়াম সংগৃহিত এবং প্রায় ১০ লক্ষ লোকের কর্ম সংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
বীমা শিল্পকে নিয়ন্ত্রন করার জন্য সাবেক বীমা নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর বিলুপ্তিতে ১৯৩৮ সালের আইন সংশোধন করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রন কর্তৃপক্ষ ওউজঅ গঠিত হয়। উল্লেখিত সংস্থায় একজন চেয়ারম্যান ও চার জন সদস্য নিয়ে প্রায় এক বছর অধিক সময় অতিবাহিত হওয়ার পর ও বীমা শিল্পে আঙ্গিক কোন পরিবর্তন হয়নি। উক্ত সংস্থার প্রধান কাজ ছিল বীমা শিল্পের উন্নয়ন করা অথচ এ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রনের প্রবিধান বা প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে প্রতিনিয়ত ব্যবসা প্রতিবন্ধকতা ও ষড়যন্ত্র চলছে বলে বীমা মহলে অভিযোগ উঠেছে। আইডিআরএ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বীমা শিল্পে ব্যবাসায়িক অবস্থা দিন দিন নিম্মগামী হচ্ছে। বিশেষত সাধারণ বীমা প্রতিষ্ঠানে কমিশন কমিয়ে এবং সকল লেনদেন চেকের মাধ্যমে করার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করলে ৪৩টি জেনারেল ইন্সুরেন্স কোম্পানির ব্যবাসয়িক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হতে থাকে। একাধিক কোম্পানির এমডির সাথে আলোচনা করে জানা যায় কমিশন লেনদেন একাউন্ট পেই চেকের মাধ্যমে করা অত্যন্ত ভালো পদ্ধতি কিন্তু ব্যবসা সংগ্রহের ক্ষেত্রে জটিলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। একদিকে অসহযোগিতায় ব্যবসা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। এদিকে কোম্পানি থেকে অসত প্রতিযোগিতা বাড়ছে এবং গ্রাহকরাও বীমা ফাকি দেওয়ার কৌশল খুজছে। কিছু কিছু কোম্পানি ঘোষিত কমিশন দিয়ে ব্যবসা সংগ্রহ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। যাহা ইতিমধ্যে আইডিআরএ পরিদর্শক টিমের রিপোর্টের ভিত্তিতে বেশ কিছু কোম্পানিকে জরিমানা করা হয়।
আইডিআরএ গঠিত হওয়ার পর বীমা শিল্পে আশার সঞ্চার হয়েছিল, অথচ সংস্থার বিদ্যমান একরোখা ও চোখ রাঙ্গানো দৃষ্টিভঙ্গিতে মাঠ কর্মী থেকে শুরু করে কোম্পানীর পরিচালকগন পর্যন্ত নানা বিষয়ে বিব্রত রয়েছে। যে কারণে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রন কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নেয়ার পরে বগুড়ায় সমন্বয় সভায় সংস্থার চেয়ারম্যান মাঠ কর্মীদের রোষানলে পড়েন। বিশেষ করে সম্প্রতি আইডিআরএ কার্যক্রমে বীমা কোম্পানী গুলোর দন্দ চরম আকার ধারণ করছে। সংস্থার চেয়ারম্যানের বিরূদ্ধে প্রতারনা ও নারী নির্যাতনসহ বহুবিদ অভিযোগ এনে দেশের বিভিন্ন থানায় এ পর্যন্ত ১১টি মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১২ আগস্ট মেঘনা ইন্সুরেন্স এর শেয়ার হোল্ডার ফিরোজ জামানের উচ্চ আদালতের রীট আবেদনের প্রক্ষেতিে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দীকী হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রূল জারি করেন। জরূরিভাবে আইডিআরএ চেয়ারম্যান শেফাক আহমদকে তার নিয়োগের সকল নথিপত্র নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এমত পরিস্থিতিতে আইডিআরএ চেয়ারম্যানের ব্যাক্তিগত মামলা ও জামিন নেওয়া কিংবা একান্ত ঝামেলাতে ব্যস্ত থাকায় প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যহত হচ্ছে এবং বীমা অঙ্গনে নিয়ন্ত্রনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বীমা শিল্পে অস্থিরতা, আতংকমূলক ও অনিশ্চয়তা দিকে ঠেলে না দিয়ে, বাস্তবতা নিরিখে ক্রমশ নিয়মাতান্ত্রিক ভাবে পরিবর্তন আনতে পারলে এ শিল্পের উন্নতি হবে বলে বিশেজ্ঞদের ধারনা। এক্ষেত্রে সংস্থার ভবিষ্যত নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা গুঞ্জন ও ৬২টি বীমা প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনা এবং উর্ধতন কর্তৃপক্ষ হাইপার টেনশনে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান। বিশেষ করে জীবন বীম কর্মীশুন্যতায় প্রতিষ্ঠানগুলি জরগ্রস্ত ও হুমকির মুখে রয়েছে। বীমা নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থার চেয়াম্যান একজন প্রতিথযশা বীমা ব্যক্তিত্ব, তিনি আক্রোশমূলক পদক্ষেপ না নিয়ে, তার প্রজ্ঞা, দক্ষতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং হতে থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:২৯:১৭ ৬১৫ বার পঠিত