আজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৩ তম জন্ম দিন

Home Page » এক্সক্লুসিভ » আজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৩ তম জন্ম দিন
রবিবার, ১৭ মার্চ ২০১৩



bangabandhu_sheikh_mujibur_rahman_with_his_mother.pngবঙ্গন্ধুর বাবঙ্গ-নিউজ ডটকম : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিন রোববার। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ার শেখ বাড়িতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।ল্যকাল টুঙ্গীপাড়া গ্রামেই কাটে। মধুমতি আর বাঘিয়ার নদীর তীরে এবং হাওড়-বাঁওড়ের মিলনে গড়ে ওঠা বাংলার অবারিত প্রাকৃতিক পরিবেশে টুঙ্গীপাড়া গ্রামটি অবস্থিত। স্বাধীনতা লাভের পর টুঙ্গীপাড়াকে পৃথক থানা ঘোষণা করা হয়।

টুঙ্গীপাড়া গ্রামেই শেখ মুজিবুর রহমান ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা, শস্য শ্যামলা রূপসী বাংলাকে দেখেছেন। শৈশব থেকে দেখেছেন তৎকালীন সমাজ জীবনে জমিদার, তালুকদার ও মহাজনদের অত্যাচার, শোষণ ও প্রজা পীড়ন। গ্রামের হিন্দু, মুসলমানদের সম্মিলিত সামাজিক আবহে তিনি দীক্ষা পান অসাম্প্রদায়িক চেতনার। আর পড়শি দরিদ্র মানুষের দুঃখ-কষ্ট তাঁকে সারাজীবন সাধারণ দুঃখী মানুষের প্রতি অগাধ ভালবাসায় সিক্ত করে তোলে। সমাজ ও পরিবেশ তাঁকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের সংগ্রাম করতে শিখিয়েছে। তাই পরবর্তী জীবনে তিনি কোনো শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ, মাথানত করেন নি।

চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাবা শেখ লুৎফর রহমান ও মা সায়রা খাতুনের তৃতীয় সন্তান। ৭ বছর বয়সে তিনি পার্শ্ববর্তী গিমাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তিনি মাদারীপুর ইসলামিয়া হাইস্কুল, গোপালগঞ্জ সরকারি পাইলট স্কুল ও পরে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে লেখাপড়া করেন। মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনার সময় তিনি দুরারোগ্য বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হলে কলকাতায় তাঁর চোখের অপারেশন হয়। এই সময়ে কয়েক বছর তাঁর পড়াশোনা বন্ধ থাকে।

১৯৪২ সালে তিনি ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চ শিক্ষার্থে কলকাতায় গিয়ে বিখ্যাত ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন এবং খ্যাতনামা বেকার হোস্টেলে আবাসন গ্রহণ করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি বিএ পাস করেন। এ সময় ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সংস্পর্শে আসেন হোসেন সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিমের মতো নেতাদের।

১৯৪৬ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় শান্তি স্থাপনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অসম সাহসী ভূমিকা পালন করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। যা তাকে পরবর্তী জীবনে হিংসা, বিদ্বেষের বিরুদ্ধে অহিংস, অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি আস্থাবান করে তুলেছিল। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে যে অসহযোগ আন্দোলন তিনি করেছিলেন তার শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেন আগেই।

১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর তিনি পূর্ব বাংলায় চলে আসেন এবং ঢাকাকে তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেন। ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে। এ সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আন্দোলনে সমর্থন দেন ও সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

ভ্রান্ত দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পূর্ব বাংলা সফরে এসে পাকিস্তানের সংবিধান রচনা ও উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে ঘোষণা দিলে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র সমাজ তথা বাঙালি জাতি গোষ্ঠী প্রতিবাদ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। শেখ মুজিবুর রহমানসহ ছাত্র নেতারা এ ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়ে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেন এবং বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করেন। সদ্য প্রতিষ্ঠিত তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানসহ পূর্ব বাংলার গণতান্ত্রিক ছাত্র ও রাজনৈতিক নেতারা এই আন্দোলনের পুরোভাগে ছিলেন।

পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসনামলে এক যুগেরও অধিককাল তিনি কারাগারে কাটিয়েছেন। দু’বার তিনি ফাঁসির কাষ্ঠে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন, কারাবরণ করেছেন ১৮ বার। সারাজীবন অসংখ্য মামলার মোকাবেলা করেছেন তিনি। কিন্তু কোনোদিন বাংলার মানুষের স্বাধিকার ও অধিকারের প্রশ্নে থমকে দাঁড়ান নি।

পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচনে স্বাধীনতার অভ্যুদয়ে তিনি বাঙালি জাতিকে মুক্তির মহামন্ত্রে উজ্জীবিত করে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে গেছেন স্বাধীনতা ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্যে। ‘৫২, ‘৫৪, ‘৬২, ‘৬৬ আর ‘৬৯-এর রক্তঝরা মহান গণঅভ্যুত্থানের পথ পেরিয়ে ‘৭০-এর ঐতিহাসিক নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় সবই বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামী ইতিহাসের একেকটি মাইলফলক। আর এই সংগ্রামের প্রেরণার উৎস ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তাঁর বজ্রকণ্ঠের ভাষণ বাঙালি জনগোষ্ঠীকে স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে শক্তি ও সাহস যোগায়।

স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয় লাভের পর পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে বঙ্গবন্ধু মুক্তি লাভ করে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বদেশ ভূমিতে ফিরে এসে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনায় আত্মনিয়োগ করেন। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশে তিনি মাত্র সাড়ে তিন বছর বেঁচে ছিলেন। মানবতার শত্রু, ঘৃণ্য ঘাতকের দল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যা করে।

বাংলাদেশ সময়: ১:২০:৫৭   ১৬০৬ বার পঠিত  




এক্সক্লুসিভ’র আরও খবর


এস এস সি পাশের হার কমছে বেড়েছে জিপিএ-৫
শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্রে সানি লিওনের ছবি!
শক্তিশালী প্রসেসরে নতুন স্মার্টফোন বাজারে আনছে মটোরোলা
ভারত ৩৬টি স্যাটেলাইট স্থাপন করল একসঙ্গে !!
স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস, পরে কথিত স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে পদযাত্রা
রাশিয়ার নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সাবমেরিন!
টিকিট দুর্নীতির প্রতিবাদে রনি, সহজ ডটকমকে ২ লাখ টাকা জরিমানা
ট্রাকচাপায় মেয়েসহ তারা তিনজন নিহত; রাস্তায় গর্ভস্থ শিশু ভুমিষ্ঠ
রোহিঙ্গা যুবক নুর বারেক আটক ,২০ লাখ টাকা উদ্ধার

আর্কাইভ