বঙ্গ-নিউজ ডটকম: মাদক পাচারের সাথে ডিএইচএল জড়িত। প্রতিমাসে ডিএইচএলের মাধ্যমে কোটি টাকার হেরোইন, কোকেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঁচার করা হচ্ছে। আর এ কাজে একেক সময় একেক কৌশলে ব্যবহার করা হয়।ডিএইচএল-এ পণ্য পাঠানোর সময় পুরো প্যাকেট খুলে তা দেখে পুনরায় গ্রাহকের সামনে প্যাকেট করার নিয়ম থাকলেও মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্য থাকায় তা আর কোনো প্রকার পরীক্ষা ছাড়াই পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
আন্ডারওয়্যারের প্যাকেটের ভেতর বিশেষ কৌশলে মাদক বহনকারী নাইজেরিয়ার নাগরিক অনিকা গডসন বামালো(৩৪) র্যাবের হাতে আটক হওয়ার পর ডিএইচএল-এর মাধ্যমে একাধিকবার হেরোইনের চালান করার কথা স্বীকার করেছে।
বুধবার রাতে উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর রোডের ৭ নম্বর বাসা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে আটক করে র্যাব-১ এর গোয়েন্দা দল তাকে বিদেশি মদ-বিয়ার ও জাল নোটসহ আটক করে। আটকের পর তার আরো তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়।
আটকের পর র্যাবের জিঞ্জাসাবাদে অনিকা গডসন বামালো জানায়, তৈরি পোশাক ব্যবসার আড়ালে তারা কয়েকজন ভারত ও আফগানিস্তান থেকে হেরোইন, কোকেন নিয়ে এসে বিভিন্ন কৌশলে প্যাকেটজাত করে ডিএইচএল-এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে পাঠাতো।
তার দেয়া স্বীকারোক্তি মতে র্যাব ওইরাতে ডিএইচএল-এর তেজগাঁও লিংকরোড-এর শাখা থেকে চীনে পাঠানোর অপেক্ষায় থাকা বিশেষ কৌশলে হেরোইন লুকিয়ে রাখা ৪৩টি আন্ডারওয়্যারের প্যাকেট উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় র্যাব ডিএইচএল’র কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে. কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, ডিএইচএল-এ বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের চালান বিদেশে পাঁচার করা হয় এমন খবর র্যাবের গোয়েন্দাদের কাছে আগে থেকে জানা ছিল।
আর এ মাদক পাঁচারের সঙ্গে ডিএইচএল-এর উচ্চ পর্যায় থেকে তাদের বিভিন্ন শাখা অফিসের কর্মকর্তারা জড়িত বলে তিনি জানান।
তিনি আরো জানান, ডিএইচএল-এর মাদক পাঁচারে যারা জড়িত তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হবে।
র্যাবের অভিযানের পর থেকে ঢাকার বেশির ভাগ ডিএইচএল শাখা কর্মীদের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেছে কতৃপক্ষ। শুক্রবার ডিএইচএল-এর তেজগাঁও লিংক রোড শাখায় গেলে প্রথমে একজন নারীকে দেখা গেলেও পরে অফিসের ভেতরে ঢুকে সাংবাদিক পরিচয় দিলে বসার কথা বলে চলে যান তিনি।
এ সময় সেখানে গ্রুপফোরের নিরাপত্তা কর্মী সোলাইমান বলেন, কিছু জানার থাকলে গুলশান অফিসে যান।সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে উপর থেকে নিষেধ আছে, এখানে র্যাব এসেছিল, তাই কেউ কিছু বলবে না।
নিরাপত্তাকর্মীর কথা মতো গুলশান এভিনিউ ৭৬ এমসিসি টাওয়ারের ডিএইচএল’র প্রধান কার্যলয়ে গিয়ে দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। ডিএইচএল বাংলাদেশ অফিসের প্রধানের মোবাইল ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর সাভার ইপিজেড এলাকায় তৈরি পোশাকের নমুনা পাঠানোর নামে জুতার ভিতর বিশেষ কায়দায় লুকানো ২ শ পঞ্চাশ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল।
সেসময় হেরোইনসহ আটক হওয়া শামছুল আরেফির তুহিনসহ এরাম্যক্স নামে কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী সাদেকুল আলম, সোহাগও শ্রীবাস পোদ্দার নামে তিন কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মীকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে সাদেকুল আলম এক সময় ডিএইচএল-এ কাজ করতো।
ডিএইচএল-এ কর্মরত অবস্থায় সাদেকুল বিভিন্ন কৌশলে বিদেশে মাদক পাঁচার করতো বলে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে স্বীকার করে। তারা এখনও কারাগারে আটক আছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১:০১:২৬ ৪৪৪ বার পঠিত