বঙ্গ-নিউজ: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতো বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) পুলিশের সঙ্গে বিশেষ সভায় বসছে নির্বাচন কমিশন(ইসি)।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের আলাপকালে এমন তথ্য জানান ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নারী ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নির্বিঘ্ন করা, রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের নিরাপত্তা, নির্বাচনী সামগ্রীর হেফাজত করা, নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নিরাপত্তায় পুলিশ পাহারা দেয়া, নির্বাচনের আগে, ভোটের দিন ও ভোট পরবর্তী সময়ের সার্বিক পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখার বিষয়গুলো নিয়েও বিশেষ সভায় নির্দেশনা থাকবে।
হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, বৃহস্পতিবার আমরা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসছি। সভা থেকে নির্বাচনের আগে-পরে ও ভোটের দিনের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু রাখতে ১২ দফা নির্দেশনা দেয়া হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বাসভবন ও অফিস কার্যালয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা।
তিনি বলেন, বিশেষ সভা থেকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে- নির্বাচনপূর্ব শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে করনীয় নির্ধারণ, নির্বাচনী আইনের বিধান প্রতিপালনের পরিবেশ তৈরি করা, নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করা, যাতে সকল প্রার্থী প্রচার-প্রচারণায় সমান সুযোগ সৃষ্টি। এছাড়া নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা প্রতিপালনে নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেটরা যাতে নির্বিঘ্নে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারেন- সেজন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োগ করা হবে।
ইসি সচিব বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যায়। বৈধ অস্ত্রের অপব্যবহারও বেড়ে যায়। এমনকি কিছু গোষ্ঠী বা আন্ডারগ্রাউন্ডের সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এগুলো রোধে পুলিশের করনীয় ঠিক করা হবে। এ সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার মাত্রা যাতে না বাড়ে সে বিষয়টিতেও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেয়া হবে।
সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অপর ৪ কমিশনার উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া এই সভায় পুলিশের আইজি, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সকল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, উপমহাপুলিশ পরিদর্শক ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) উপস্থিত থাকবেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, সীমান্তবর্তী ও দুর্গম এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ নজর থাকবে। জঙ্গি চক্র যাতে মাথা চাড়া দিয়ে না উঠতে পারে- এ বিষয়গুলোতেও আলাদা নির্দেশনা থাকবে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তফসিল ঘোষনার পর বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার বিষয়ে ইসিতে অভিযোগগুলো কি খতিয়ে দেখা হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, আমরা সবই কমিশনের নজরে আনছি। বিএনপি আজ যে চিঠি দিয়েছে সেটি নিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার কমিশন সভায় আলোচনা হবে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে জানানো হবে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের নতুন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার বা হয়রানি না করার নির্দেশ দেবেন কিনা প্রশ্নে সচিব বলেন, এ ধরনের কিছু নির্দেশনা দেয়া হবে।
ধর্মীয় সভা আয়োজনে বাধ্যবাধকতা আরোপের বিষয়ে সচিব বলেন, ধর্মীয় সভা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়নি। আবেদন পাওয়া সাপেক্ষে রিটার্নিং অফিসার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সভার অনুমোদন দিতে পারে। তবে ধর্মীয় সভায় কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য রাখা যাবে না। এ ধরনের সভায় ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকবে।
ফেসবুক মনিটরিং করার বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে ২৬ নভেম্বর ইসি সকল মোবাইল অপারেটর ও বিটিআরসি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসা হবে। গুজব রোধ করে ভোটের দিনের পরিবেশ ঠিক রাখার বিষয়টি টেকনিক্যাল। ফলে এসব রোধে আমরা কি চাই আর তা কিভাবে করা সম্ভব- তা নিয়েই আমরা ওই দিন প্রাথমিক আলাপ করবো। তবে ভোটের দিন ফেসবুক বন্ধের আপাতত কোনো পরিকল্পনা ইসির নেই।
উন্নয়ন প্রকল্পে নতুন করে বরাদ্দ না করার বিষয়ে সরকারকে চিঠি পাঠানো হয়েছে উল্লেখ করে সচিব বলেন, পুরনো প্রকল্পে অর্থ ছাড় করায় বাধা না থাকলেও নতুন কোনো প্রকল্প গ্রহণ, অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ করা যাবে না।
কেউ কোনো ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করতে পারবেন না। এমনকি প্রধানমন্ত্রীও এ ধরনের কাজ করতে পারবেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:২৬:৪৮ ৩৮৩ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম