বঙ্গ-নিউজঃ এশিয়া কাপের ইনিংসটাকেই এগিয়ে রাখতে চান ইমরুল। ছবি: প্রথম আলো
এশিয়া কাপের ইনিংসটাকেই এগিয়ে রাখতে চান ইমরুল। দশ বছরের ক্যারিয়ারে ওয়ানডেতে এর আগে দুটি সেঞ্চুরি করেছিলেন ইমরুল কায়েস। কিন্তু দুবারই সেঞ্চুরির আনন্দটা শেষ পর্যন্ত দলের আনন্দ হয়ে উঠতে পারেনি। বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত দুটি ম্যাচেই হেরে গিয়েছিল। গতকালই প্রথম সেঞ্চুরির সঙ্গে জয়ও উদ্যাপন করতে পারলেন ইমরুল।
শুধু কী তাই? বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিকও কাল হয়ে গেছেন তিনি। এমন সেঞ্চুরিকে ক্যারিয়ারের সেরা তকমা তো এমনিই দিয়ে দেওয়ার কথা ইমরুলের। অথচ এই ১৪৪ রানের ইনিংসের চেয়েও সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অপরাজিত ৭২ রানের ইনিংসটাকেই এগিয়ে রাখতে চাইলেন ইমরুল, ‘এই ইনিংসটাকে আমার ক্যারিয়ারের একটা ভালো ইনিংস হিসেবেই রাখব। তবে আফগানিস্তানের সঙ্গে ওই ইনিংসটা বিশেষ কিছু। কারণ, এশিয়া কাপের মতো টুর্নামেন্টে আমি হঠাৎ গিয়ে খেলেছি। ওটা আমার জন্য অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিংও ছিল। ওই ইনিংস থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছিও। সেগুলো আজকের ইনিংসে কাজে লেগেছে। আজকের ইনিংসকে হয়তো আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে রাখব। তবে এগিয়ে রাখব আফগানিস্তানের ইনিংসটাকেই।’
ইমরুল কালকের ম্যাচে দুবার কেবল বিপর্যয়ই সামলাননি, দলের সংগ্রহটাকে নিয়ে গেছেন নিজের প্রত্যাশারও বাইরে। ইনিংসের শেষের দিকে ইমরুলের ব্যাটকে হয়তো খোলা তলোয়ার মনে হয়েছে, তবে শুরুতে রান করা খুব সহজ ছিল না বলে কাল ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন এই ওপেনার, ‘শুরু থেকে কিন্তু নিজের মতো খেলতে পারছিলাম না৷ আমি সে কারণে সময় নিচ্ছিলাম। আবার যখন মনে হচ্ছিল এবার শট খেলব, তখনই উইকেট যাচ্ছিল। তখন চিন্তা করলাম, একেবারে শেষ পর্যন্ত থাকব, রান যা হওয়ার হবে। শেষের দিকটায় আমি যেদিকে খেলতে চাচ্ছিলাম, ওভাবেই খেলতে পেরেছি।’
ইমরুল কায়েসকে ধরে নেওয়াই হয় দুর্ভাগা ক্রিকেটার হিসেবে। নইলে সর্বশেষ ২৫ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরিসহ ৪৫ এর ওপরে গড়ে রান করা ইমরুলকে কেন প্রতিবার দলে জায়গা করে নিতে সংগ্রাম করতে হয়! ইমরুল কি নিজেও নিজেকে দুর্ভাগা ভাবেন? কালকের ইনিংসটির পর গলা চড়িয়ে দলে নিজের জায়গাটা দাবি করতে পারেন না? ইমরুল তাঁর শান্ত-নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বললেন, ‘আমি যখনই জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাই, নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। দলের কাজে লাগে এমন কিছু করার চেষ্টা করি। আমি বিশ্বাস করি, পরিশ্রম করলে তার ফল মিলবেই ৷ দলে জায়গা নিয়ে ভাবা আমার কাজ না। আমি আসলে এ জন্য মুশফিককে অনুসরণ করি। ও যে পরিশ্রমটা করে, সেটাই ওকে আজকের মুশফিকুর রহিম হিসেবে তৈরি করেছে। আমি তাই আমার কাজটাই করে যাই। আমি বিশ্বাস করি, আমি লম্বা সময় খেলার জন্য এসেছি। যখন বুঝব জাতীয় দলে আমাকে আর প্রয়োজন নেই, সেদিন নিজেই বিদায় বলে দেব।’
বিশ্বকাপে তামিমের ওপেনিং সঙ্গী খোঁজার যে প্রক্রিয়া চলছে, তাতে এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাসের খোঁজও মেলে তাঁর কথায়। দলকে জেতানো এমন ইনিংসের পর সেটা নিশ্চয়ই বাড়াবাড়ি নয়।
ইমরুল যখন দল জিতিয়ে নিজের আত্মবিশ্বাসের কথা বলতে ব্যস্ত, ঠিক তার আগে হ্যামিল্টন মাসাকাদজা এসে শুনিয়ে গেছেন অন্য আরেক আত্মবিশ্বাসের গল্প। সিরিজ শুরুর আগে নিজেদের ফেবারিট বলেছিলেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। প্রথম ম্যাচে এমন হারের পরও কী তাঁর একই মত? মাসাকাদজার উত্তর, ‘অবশ্যই! আমরা ভালো খেলেছি। আজ (কাল) কয়েকটা জায়গায় আমাদের পরিকল্পনামতো আমরা খেলতে পারিনি। সেগুলো ঠিকঠাক হলে, ম্যাচের ফলও অন্য রকম হতে পারত।’
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৫০:০২ ৬৩৬ বার পঠিত #এশিয়া কাপের ইনিংসটাকেই এগিয়ে রাখতে চান ইমরুল