বঙ্গ-নিউজ: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাগারের ভেতরে বিশেষ আদালত বসিয়ে বিচারের সমালোচনা করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, কারাগারে আদালত স্থানান্তর সংবিধানের লঙ্ঘন। মূলত খালেদা জিয়াকে নির্যাতন করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অবিলম্বে মির্জা ফখরুল এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান।
মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আবদুল মঈন খানসহ আরও অনেকে।
এর আগে, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানির জন্য কারাগারের ভেতরে বিশেষ আদালত বসানোর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘নিরাপত্তার কারণে’ এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, বকশীবাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার ও সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসংলগ্ন মাঠে নির্মিত এলাকাটি জনাকীর্ণ থাকে। সে জন্য নিরাপত্তাজনিত কারণে বিশেষ জজ আদালত-৫ নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এর প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হলো।
বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন বিশেষ মামলা নং ১৮/২০১৭ এর বিচার কার্যক্রম পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের কক্ষ নং ৭ এর অস্থায়ী আদালতে অনুষ্ঠিত হইবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল জানান, বুধবার পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে এই মামলার শুনানি হবে।
এ আইনজীবী জানান, খালেদা জিয়ার মামলাটা গত ফেব্রুয়ারি থেকে ছয় মাস হয়ে গেল কোনো কার্যক্রম করতে পারছি না। জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় খালেদা জিয়া উপস্থিত হচ্ছেন না। এ কারণে আমরা বলেছি, খালেদা জিয়া যেখানে আছেন সেখানেই আদালত বসানো প্রয়োজন। আমরা বলার পর আজ গেজেট প্রকাশ করার সম্ভাবনা আছে। গেজেট সাপেক্ষে বুধবার কারাগারে আদালতের কার্যক্রম বসবে।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, কারাগারের ভেতর বিচার অনুষ্ঠিত হলে তা হবে আইনের পরিপন্থী। এটা হতে পারে না।
খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী আবদুর রেজাক খান বলেন, কারাগার কখনো প্রকাশ্য আদালত বলে বিবেচিত হতে পারে না। সংবিধান অনুযায়ী বিচার হতে হবে প্রকাশ্য আদালতে।
বিএনপির সিনিয়র এ আইনজীবী বলেন, তার জানা মতে বাংলাদেশে সামরিক আইনে কারাগারের ভেতর কর্নেল তাহেরের বিচার হয়েছিল। আর পাকিস্তান আমলে একজন রাজনীতিকের মামলার বিচার কারাগারের ভেতরের আদালতে হয়েছে।
উল্লেখ্য, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জামিন দিয়েছিলেন আদালত।
গত ৭ আগস্ট মামলাটির যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় তাকে আদালতে হাজির করেনি কারা কর্তৃপক্ষ।
ওই সময় খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত জামিন বহাল রাখেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এরপর থেকে খালেদা জিয়া পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১:০১:৪৭ ৪৪৫ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম