বঙ্গ-নিউজ: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনশ আসনের মধ্যে শরিক দলগুলোকে বেশকিছু আসনে ছাড় দেয়ার পরিকল্পনা করছে আওয়ামী লীগ। তবে এটা চূড়ান্ত কিছু নয় জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, জিততে পারবে, এমন প্রার্থীই কেবল মনোনয়ন পাবেন।
শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক।
কাদের বলেন, ‘আমাদের জোটের জন্য ৬৫ থেকে ৭৫ সিট ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা আছে।’
‘এখানেও কথা আছে, এটা কোন বাইন্ডিং (বাধ্যবাধকতা) বিষয় না’- এমন মন্তব্য করে আরও বলেন, ‘ভালো প্রার্থী হলে আমরা একসেপ্ট করব। উইনেবল প্রার্থীকে আমরা মনোনয়ন দেব।’
‘এলায়েন্সের (জোট) যেকোনো দলেরই হোক আমরা তাদের একসেপ্ট করব, প্রার্থী উইনেবল (জয়ের মতো) হলে আমরা মনোনয়ন দেব।’
আগামী জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বরের শেষে-নিশ্চিত করেছে নির্বাচন কমিশন। আর এই নির্বাচন ২০১৪ সালের মতো হয় নাকি বিএনপি-জামায়াত জোটের অংশগ্রহণের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়-এ নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে।
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতারা সরাসরি জানাচ্ছেন, বিএনপি ভোটে এলে ২০০৮ সালের মতোই আবার মহাজোট হবে, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি এক হয়েই লড়াই করবে, আর বিএনপি আবার ভোট বর্জন করলে জাতীয় পার্টি আলাদা নির্বাচন করবে।
কাদের তার সংবাদ সম্মেলনে অবশ্য এই আসন ছাড়ের পরিকল্পনা জাতীয় পার্টিকে জোটে রেখে করা হয়েছে কি না, সেটা বলেননি।
নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের প্রস্তুতি বর্ণনা করে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ মাসেই আমাদের কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু করব। জোট নিয়েও আমরা পরোক্ষভাবে আলাপ আলোচনা করেছি। যারা আমাদের এত দিনের শরিক, তাদের বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। অনেকে আসতে চাচ্ছে। তাদের সঙ্গেও আমরা কথাবার্তা বলতে শুরু করেছি।’
‘আলোচনা চলছে, এ মাসের শেষ দিকে ফাইনাল সেপ (চূড়ান্ত রূপ) নেবে। বেশিদূর গেলে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত যেতে পারে।’
নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় নির্বাচনে একশ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমে ভোট নেয়ার প্রাথমিক পরিকল্পনা করেছে।
তবে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ইভিএম নিয়ে আপত্তি আছে। তাদের দাবি, এই যন্ত্র ভোট কারচুপির হাতিয়ার। আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় ফেরাতে নির্বাচন কমিশন এই যন্ত্র ব্যবহার করতে চায়।
বিএনপির এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে বিএনপির কেন ভয় সেটা আমরা বুঝে ফেলেছি। বিএনপির ভয় হচ্ছে ইভিএমে ভোট হলে বিএনপি আর কেন্দ্র দখলের পুরনো অভিযোগ আনতে পারবে না, ভোট জালিয়াতির কথা বলতে পারবে না, ভোট কারচুপির কথা বলতে পারবে না। বিএনপি আর পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার পুরোনো অভিযোগ আনতে পারবে না। এ কারণেই বিএনপি ইভিএম চায় না।’
ইভিএম চাওয়ার কারণ বর্ণনা করে কাদের বলেন, ‘এটা আমাদের নতুন কোনো দাবি নয়। সারা দুনিয়ায় আধুনিক স্বচ্ছ এবং স্বল্প সময়ে ভোট প্রদান গণনা এবং ফলাফল পাওয়া সম্ভব এই যন্ত্রে।’
‘এটা সর্বশেষ প্রযুক্তি, ভারতে এটা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। আম আদমির অরবিন্দ কেজরিওয়াল অভিযোগ করেছেন এখানে টেম্পারিংয়ের (কারচুপির) সুযোগ আছে। অনেক বিতর্ক, আলাপ-আলোচনার পর শেষ পর্যন্ত অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে ভারতের নির্বাচন কমিশন।’
এর আগে সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে দেশের সর্বশেষ অবস্থা এবং দলের সংগঠনের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। জেলা পর্যায়ে তৃণমূলে দলের অবস্থা কী, সেটি জানা-বোঝার চেষ্টা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, ট্রেনে করে উত্তরাঞ্চল সফরে যাওয়ার।
সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনি লড়াইয়ে সরকার বাধা দেবে না বলেও নিশ্চয়তা দেন কাদের। বিএনপির কাছে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষা করতে সংবিধানে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি, সাবমেরিন কেবলে সংযুক্ত না হওয়া এবং দুর্নীতিবাজদের দলের সদস্য হওয়া যাবে না মর্মে বিধান বাতিলের কারণও জানতে চান তিনি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, দীপু মণি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ৯:১৭:০২ ৪৫৩ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম