বঙ্গ-নিউজ: সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ১০ শিক্ষার্থী কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরের দিকে এসব শিক্ষার্থী মুক্তি পান বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার জায়েদুর রহমনি।
জামিনে মুক্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফারুক হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইসলাম (এমবিএ) শেষ বর্ষের ছাত্র রাশেদ খান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মশিউর রহমান, আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তারিকুল ইসলাম, দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র সাইদুর রহমান, ইসলামি স্টাডিজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আতিকুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাসুদ সরদার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোহেল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জসিম উদ্দিন ও গাজীপুর ভাওয়াল কলেজের শিক্ষার্থী শাখাওয়াত হোসেন।
আইনজীবী জায়েদুর রহমান বলেন, সকালে সাত জনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ায়, দুপুরে পুনরায় জামিনের জন্য আবেদন করা হয়। আদালত তা মঞ্জুর করেন।
তিনি বলেন, কোটা আন্দোলন চলাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বাসা ভাঙচুর, পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা ও আইসিটি আইনে দায়ের করা তিন মামলায় তাদের জামিন আবেদন করা হয়।
এর মধ্যে শাহবাগ থানার আইসিটি আইনে ও ভিসির বাসা ভাঙচুরের মামলায় রাশেদের জামিন আবেদন করা হয়। অন্যদিকে ভিসির বাসা ভাঙচুরের মামলায় জামিনের আবেদন করা হয় সুহেল, মশিউর ও জসিমের।
এছাড়া পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা দেয়ার ঘটনায় করা মামলায় জামিনের আবেদন করা হয় ফারুক ও তরিকুলের। এ ছাড়াও ভাঙচুর ও আইসিটি আইনের মামলায় জামিনের আবেদন করা হয় রাতুলের।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে বর্তমানে ৫৬ শতাংশ কোটা আছে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, ১০ শতাংশ করে নারী ও জেলা কোটা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা পাঁচ শতাংশ এবং এক শতাংশ আছে প্রতিবন্ধী কোটা। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা সন্তানদেরকেও দেয়। এরপর জামায়াত-শিবির অনুসারীরা এই কোটা বাতিলের দাবিতে নানা সময় আন্দোলন করে ব্যর্থ হয়েছে। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া আন্দোলনে কোনো বিশেষ কোটার নাম উল্লেখ না করে সব মিলিয়ে কোটা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানানো হয়।
গত ৮ এপ্রিল কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে দায়িত্বরত পুলিশকে মারধর, কর্তব্যে বাধা, পুলিশের ওয়াকিটকি ছিনতাই ও ভিসির বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার অভিযোগে ১০ এপ্রিল শাহবাগ থানায় চারটি মামলা হয়। এর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে।
আর ভিসির বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সিকিউরিটি অফিসার এসএম কামরুল আহসান বাদী হয়ে আরও একটি মামলা করেন। তবে চার মামলায় আসামিদের নাম ও সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়াও কোটা নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটা মামলা করে।
রাশেদ খানকে তথ্য-প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। এছাড়া বাকি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে কর্তব্য পালনে বাধা দেয়া, সরকারি কাজে বাধা দেয়া, নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
এদিকে মুক্তি পেয়েই সরকারকে দেয়া আল্টিমেটামের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বাংলদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান।
কারাগার থেকে মুক্তির পর রাশেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাঁচ দফার আলোকে কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপনসহ আমাদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে দাবি না মানা হলে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
বাংলাদেশ সময়: ৯:৩৬:৫১ ৫৬৩ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম