বঙ্গ-নিউজ: সাইবার হামলার আশঙ্কায় দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলোতে যেকোনো সময় হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে নির্দেশনায় দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা. বাড়াতে বলা হয়েছে।
বাণিজিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো এই সার্কুলারে বলা হয়, সমপ্রতি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং গণমাধ্যমে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সাইবার অপরাধীরা পেমেন্ট সিস্টেমস হ্যাক করে দেশের ভেতরে এবং দেশের বাইরে থেকে এ অর্থ হাতিয়ে নেয়। উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশও এ ধরনের সাইবার সিকিউরিটি এবং হ্যাকিং সংক্রান্ত নিরাপত্তা হুমকিতে রয়েছে।
এমতাবস্থায়, সম্ভাব্য সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যাংকের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থার নিরাপত্তা বাড়াতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্ক বার্তায় বলা হয়, সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে নিবিড় তদারকি নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে। বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবারও বড় ধরনের সাইবার হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রয়োজনীয় সাইবার সিকিউরিটি টিম না থাকায় তথ্য চুরির ঘটনা বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে দেরি হচ্ছে বলা হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমানকে লেখা এক চিঠিতে এই আশঙ্কার কথা তুলে ধরেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। গত ৯ই আগস্ট তিনি এই চিঠিটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠিয়েছেন।
মোস্তাফা জব্বারের লেখা চিঠিতে বলা হয়, সরকারি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) সাইবার নিরাপত্তা টিম গঠন করেছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাইবার নিরাপত্তা বাড়ানোর লক্ষ্যে সাইবার সেন্সর স্থাপন করা হয়েছে। ওই সেন্সর হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী পরিলক্ষিত হয় যে, ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ কম্পিউটারে সাইবার অপরাধীরা ম্যালওয়্যার স্থাপন করেছে, যা ব্যবহারকারীর অগোচরে ব্যবহারকারীর পরিচয় ও পাসওয়ার্ড কাজাখস্তান, রোমানিয়া, জাপান ও চীনে চিহ্নিত সাইবার অপরাধীদের কাছে সংবেদনশীল তথ্য অনবরত প্রদান করছে। চিঠিতে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে।
চিঠিতে সতর্ক করে বলা হয়, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে এ বিষয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে চিঠিতে জানানো হয়।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, এটা নতুন কিছু নয়। মাঝে-মধ্যেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে এ ধরনের সতর্ক করে দেয়া হয়। যেহেতু বিভিন্ন দেশে ব্যাংকিং ব্যবস্থা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের খবর প্রকাশিত হয়েছে, সে কারণে আমাদের ব্যাংকগুলোকে সতর্ক থাকার জন্যই এ সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
এদিকে এর আগে ২০১৬ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (নিউ ইয়র্ক ফেড) রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার ও ফিলিপাইনে যাওয়া ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার ফেরত আনা সম্ভব হয় কয়েক মাসের মধ্যেই। বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার ফেরত পাওয়া এখনো অনিশ্চিত।
বাংলাদেশ সময়: ৮:৫১:৫৯ ৪৬৮ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম