বঙ্গ-নিউজ: দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থী ঘরে ফিরে গেছে। কিন্তু এ সময়ে দেশকে অশান্ত করার জন্য, সারা দেশ থেকে তাদের (বিএনপির) ক্যাডারদেরকে এনে ঢাকা অচল কর্মসূচি বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছে সুপরিকল্পিতভাবে। ঢাকা অচল করে বাংলাদেশ অচল করার পরিকল্পনা তাদের ছিল এবং আছে।
মঙ্গলবার (৭ আগস্ট) বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে যখন শান্তিময় পরিবেশ বিরাজ করেছিল, ঠিক সেসময়ে ১/১১ কুশীলবরা আবার রাজনৈতিক অঙ্গনে নেমে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অশুভ খেলায় মেতে উঠেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে বিধ্বংসী রাজনীতি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আজকে অনেকই অনাবশ্যক কটু ভাষণ দিচ্ছে। কটু ভাষণ দিয়ে তাঁরা রাজনীতির দূষণ হয়ে আছে। রাজনীতিতে মতান্তর থাকবেই, কিন্তু সেই মতান্তরকে ছদ্মবেশী রাজনৈতিকরা বিধ্বংসী মনান্তরের সীমা অতিক্রমে নিয়ে যাচ্ছে। যা দেশের জাতি, গণতন্ত্র ও ভবিষ্যতের জন্য দুঃসংবাদ।
সেতুমন্ত্রী বলেন, যারা ক্ষমতার জন্য দেশকে ধ্বংস করার রাজনীতি করে তাদের সঙ্গে কি করে রাজনৈতিক সমঝোতা হবে, তা ভেবে পায় না। অন্দোলনে তাদের সফলতা দেখলাম না। এখন তারা শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক আন্দোলনের উপর ভর করেছে। সেটাও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হওয়ার পথে। আর কত ষড়যন্ত্র করবে, চক্রান্ত করবে? এখন ১/১১ কুশীলবদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নতুন করে কোন জাল বুনা যায় কিনা সেই গোপন চক্রান্ত তারা করছে। কোথায় কি হচ্ছে সেটা আমরা জানি। দেশে হচ্ছে, বিদেশে হচ্ছে। প্রথম প্রহরে, মধ্য প্রহরে, শেষ প্রহরেও হচ্ছে রাতের অন্ধকারে। সরকার কিছু জানে না, সেটা ভাবলে বোকার স্বর্গে বাস করছেন। সবকিছুই আমরা জানি। সবকিছুই আমাদের নলেজে আছে। কত ষড়যন্ত্র হয়েছে, শত বৈঠক হয়েছে ব্যবস্থা নিলে কারো জেলের বাহিরে থাকার কথা ছিলো না। কিন্তু আমরা ধৈর্য্য ধরছি।
দেশে গুন্ডাতন্ত্র চলছে গণফোরামের সভাপতি কামাল হোসেনের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, গুন্ডাতন্ত্র কাকে বলে তা সবিনয়ে কামাল হোসেনকে জিজ্ঞেস করতে চাই? চোখ উপড়ে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী আরাফাত বাপ্পীর, সেই আহত কর্মীকে হাইজ্যাক করলেন ঘৃণ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। আমাদের সেই রাজনৈতিক কর্মীর একটি চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। তাকে এখন চেন্নাই পাঠানোরে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী আজ তাকে দেখতে যাবেন এবং তাঁর সুচিকিৎসার ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আমাদের আহত কর্মীকে হাইজ্যাক করা হয়েছে। তা কোন কোন গণমাধ্যমে দেখলাম, এ সংবাদ শুধু দেশে নয়, কিছু কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সংস্থাও করছে। সব দোষ আওয়ামী লীগের, আমাদের ছাত্রলীগের । ছাত্রলীগের নতুন কমিটি হয়েছে। এখনও তাঁরা ভালো করে গুছিয়ে উঠতে পারেনি। এ এলাকায় ছাত্রলীগের (ধানমন্ডি) কোন কমিটি ছিলো না। যারা আহত হয়েছে তাদের বেশিরভাগই সাবেক ছাত্রনেতা, বিভিন্ন উপ-কমিটির সদস্যরা। তাদের মধ্যে ৪৬ জন আহত হয়েছে। আক্রান্ত হলাম আমরা কিন্তু এখন দেশে-বিদেশে সুপরিকল্পিতভাবে অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। আমাদেরকে আক্রমণকারী চিহিৃত করে দলের এবং ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে।
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, কানাডার আদালতে প্রমাণিত সন্ত্রাসী দল বিএনপি তাদের চিহিৃত সন্ত্রাসীদের জন্য যে কলঙ্ক অর্জন করেছিলো তা আজকে চাপিয়ে দিতে চেয়েছে আওয়ামী লীগের উপর, আমাদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর। আমরা এ ঘৃণ্য অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাই।
শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে জতিসংঘের বিবৃতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা জাতিসংঘে জানিয়েছি এগুলো অপপ্রচার।
সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী তানজীম আহমেদ সোহেল তাজের ফেসবুক স্ট্যাটাস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের রাজনীতির বাহিরে আছেন। এটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়।
তিনি বলেন, যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চান, এ জন্য তাঁরা টার্গেট করেন সাংবাদিকদের। কারণ সাংবাদিকদের টার্গেট করে ফায়দা তোলার চেষ্টা এ দেশে অনেকবার হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই এটা হয়। আমাদের দেশেও আমরা তা বারবার লক্ষ্য করেছি।
তিনি আরও বলেন, গতকাল আমি সাংবাদিকদের বলেছি, ছাত্রলীগের উপর অপবাদ আসছে। আপনারা আমাকে তালিকা দিন। কারা কারা এতে জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থাও আমরা নেব। শেখ হাসিনার সরকারে আমলে অন্যায় ও অপকর্ম করে কেউ রেহাই পায় না। ছাত্রলীগের কেউ যদি সাংবাদিক নির্যাতনে জড়িত থাকে তাহলে আমরা কোন অবস্থায় ছাড় দেব না। এটা আমাদের নীতি এবং সিদ্ধান্ত।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রমিজ উদ্দিন কলেজ সংলগ্ন রাস্তায় আন্ডারপাস দ্রুততার সাথে নির্মাণের জন্য সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিয়েছি। আগামী রবিবার প্রধানমন্ত্রী এ আন্ডারপাস নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করবেন। আজকের একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী আরও দুটি আন্ডারপাস নির্মাণের জন্য বলেছেন। এর একটি নির্মাণ হবে সংসদ ভবন থেকে ন্যাম ভবন পর্যন্ত। আরেকটি হলো বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন হতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত। এ দুটি আন্ডারপাস নির্মাণে তড়িৎ ব্যবস্থা নিতে সচিব ও প্রধান প্রকৌশলীকে দায়িত্ব দিয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ৯:৫০:২০ ৫৬৬ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম