মাফরূহা বেগমের ৪টি কবিতা

Home Page » সাহিত্য » মাফরূহা বেগমের ৪টি কবিতা
শনিবার, ২৮ জুলাই ২০১৮



 তোমার জন্যে কবিতা

১।  ফিরে চাও কাকে
ফিরে চাও কাকে,
এখন কে যাবে তোমার সাথে?
একা একা চলেছ তো বেশ
ছন্দহীনা,তালহীনা মাত্রাহীনা।
মনে পড়ে সেদিন সন্ধায়
কেমন ঝলসে উঠেছিলে তুমি?
তোমার মুখ, তোমার চোখ
অভিমানে নাকি আক্রোশে,
কে জানে।
যে তোমার ভাবলেশহীনা মুখে চেয়ে কেটে গেছে কতদিন,
এক অবোধ যুবকের।
একা একা হেসেছে,কেঁদেছে
বহুদিন।
ফিরেও চাওনি তুমি।
বলোনিত কিছু।
তবুও চলেছিল নীরব প্রস্ততি
তোমাকে পাবার।
সহসা কে জানে কেন
ভেঙ্গে ফেললে সেই
না বলা চাওয়ার শপথ।
অভিমানে,অবহেলায়।
আজ একা একা দিশাহীন পথে
ফিরে পেতে চাও কাকে,তাকে?
যেখানে দুটি সমান্তরাল পথ
মোড় নিয়েছে দুটি ভিন্ন দিকে,
চাইলেও
আর যেখানে সমন্ময় সম্ভব নয়,
সেখানে,তাকে?
এখন ফিরে চাও কাকে?

২। ওয়ালম্যাট

অনতিদূরেই নীলাভ পাহাড়
দৃশ্যমান
সারিবদ্ধ ছোট বড় অসমান।
ঘুমায় নীলাকাশে হেলান দিয়ে
অপরূপ রূপের সমারোহ নিয়ে।
পেজা তুলাসম সাদা মেঘেরা ভাসে,
নিটোল নিভাজ দূরের নীলাকাশে।
সংলগ্ন ভূমিতে থাকা পাইন গাছে,
সবুজ পাতারা নিষ্চুপ হয়ে আছে।
কাছাকাছি এক স্বচ্ছ জলাশয়ে,
আকাশ পাহাড় দুইই পড়েছে নূয়ে।
ছড়িয়ে ছিটিয়ে পাথর নূড়ির রাশ,
আগাছা আর অপাক্তেয় কিছু ঘাস।
কাছাকাছি এক নাম না জানা গাছে,
বিরহী এক পাখি একাকি
বসে আছে।
দেখে মনে হয় এখন দ্বিপ্রহরে,
প্রকৃতি মগ্ন আপন খেয়াল ঘোরে।
এই ছবিখানি বাস্তব রূপ নিয়ে
রয়েছে আমার মুগ্ধ দৃষ্টি ছুয়ে

৩। আইড়ি ডহর

কে জানে শুকনো বিলটার নাম
কেনবা আইড়ি ডহর,
অজ পাড়াগায়ের।
শুনেছি ওখানে একদা একটা
নদী ছিল।
বিপূল গর্জনে বয়ে যেত নদীটি।
একদিন মরে,শুকিয়ে বিল হয়ে যায়।
বিল শুকিয়ে হয়ে যায় পতিত মাঠ।
কৃষকেরা শস্যের চাষ করে করেছিল উর্বর।
পাশ দিয়ে কাটা হয়েছিল ক্যানাল।
এখন সেখানে গড়ে উঠেছে ঈদগাহ,নূতন কবরস্থান।
যেখানে আমার দূরের স্বজনেরা
ঘুমায় চিরনিদ্রায়।
যেখানে পাতা ঝরে,পাতা ওড়ে
দখিনা বাতাসে।
একটা মৃত নদীর বুকে এখন
গা শির শির করা নীরবতা।
কে, জানে কেনবা এমন নামকরন হয়েছিল সূদুর অতীতে।
সেকি মানুষের তৈরী সব অতীতের গল্প?
নাকি আছে তারও পিছনের গল্প, গল্পের গল্প?
সে এক অজানা রহস্য

৪। তোমার জন্যে কবিতা

তুমি তো দেখেছিলেনা কোন ফাদ,কোন অদৃশ্য কালোহাত,
তোমাকে জড়িয়েছিল ওতপ্রোত,
পষ্চাতে পেতে ওত।
চলেছিলে মহাসুখে
আপনার মনে নিষ্চিন্তে,নিরূদ্বেগে।
জানোনিত ছিল কোথায়
নিষ্চিত পতনের ভয়।
যে পতন দিয়েছে শুধু অপমান,
হরন করেছে আজন্মের সন্চিত
সন্মান।
হয়তো জানোনি সবখানে আছে
বিভীষিকা ঘাতকের মত পিছে পিছে।
সদাই অনুসরন করে,
সদাই তাড়িত করে ফেরে,
করে নানা ছল,
কেড়ে নিতে এক খন্ড আকাশ নির্মল।
বহুদিনের সযত্নে লালিত যশ,মূহুর্ত লাগেনা হতে অপযশ।
লাগেনা সময়
ঢেলে দিতে কালিমার কালো
যেখানে আছে যত আলো।
জগতে আছে যত ভালো কিছু
কদর্য্য হিংসা চলে তার পিছু পিছু।নরাধম পিশাচের মত,
এনে দিতে গ্লানি শত শত।
চলে নীরবে নিভৃতে,
অনুসরন করে ফেরে সদা জয়ী হতে।
ভালো বলে যদি কিছু থাকে কারো কাছে
তাইই হারানোর ভয় আছে।
যেখানে নেই, কোন কিছু নেই
সেখানে ভয়ও নেই কিছু,
কোন কিছুতেই।

বাংলাদেশ সময়: ১২:২৪:৪৮   ৬৯২ বার পঠিত   #  #




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সাহিত্য’র আরও খবর


সাধক কবি রামপ্রসাদ সেন: স্বপন চক্রবর্তী
ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা “আমি তো গাঁয়ের মেয়ে ”
৫০ বছরের গৌরব নিয়ে জাবির বাংলা বিভাগ বিশাল ‘সুবর্ণ জয়ন্তী’ উৎসব আয়োজন করেছে
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা- ‘তোমার খোঁজে ‘
অতুলপ্রসাদ সেন: ৩য় (শেষ ) পর্ব-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন;পর্ব ২-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন-স্বপন চক্রবর্তী
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা ” যাবে দাদু ভাই ?”
বাদল দিনে- হাসান মিয়া
ইমাম শিকদারের কবিতা ‘ছোট্ট শিশু’

আর্কাইভ