ঋত্বিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা ‘লাশ আমার’

Home Page » সাহিত্য » ঋত্বিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা ‘লাশ আমার’
বুধবার, ২০ জুন ২০১৮



লাশ আমার’

যাদবপুর ‘৮ -বি’ বাসস্ট্যান্ড এর সামনে,

রাস্তায় রক্তাক্ত আমার দেহ পড়ে থাকে।
দুমড়ে যাওয়া মাথা, তাজা রক্তে ভেসে যায়,
এক কর্পোরেট যুবক ভিড়ের মাঝে রাস্তা করে নেওয়ার চেষ্টায়।
যানজটে আটকে পড়া এক মাঝ বয়সী
বিরক্তিতে তরুণীকে পিঠে ঠেকিয়ে অপেক্ষা করে দু-চাকায়,
সাদা পোষাক পরা লোকটা, যানজট সামলাতে ব্যস্ত।
সাহেব, আটকে পড়া ভিড়ে, গাড়ির ভিতর থেকে আমার রক্তাক্ত মাছি ভন্ ভনে দেহ দেখে ঘৃণায় নাক লুকায় রুমালে।
ভিড়ের মাঝে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি মুখো,
চিৎকার করে ওঠে” হাসপাতালে নিয়ে যা, কে জানে এখনও হয়ত আছে?”
যাদবপুর ‘৮ -বি’ বাসস্ট্যান্ড এর সামনে রক্তাক্ত আমার দেহ পড়ে থাকে।
লাল বড়ো সিঁদুরের টিপ, লাল পাড়ের শাড়িতে
পরিচিত সাঁজে মা দু- হাত বাড়ায়।
এক উজ্জ্বল আলোর মাঝে বাবা এসে দাঁড়ায় একটু দূরে।
ইচ্ছে করে …….ইচ্ছে করে ছোট্ট শিশুর মতো পান করি স্তন মার কোলে।
দূর থেকে ভেসে আসে …….
বল……. হরি…….. হরি বোল…… বল….. হরি……. হরি বোল …….
পাড়ার মা -বৌ এঁরা চোখ বন্ধ করে, হাত জোড় করে প্রনাম করে।
শিশুরা ভয়ে ভয়ে মায়ের আঁচল ধরে।
আমায় গ্রাস করে এক ঐশ্বরিক, বিশাল …. অনন্ত ……মহাশূন্য।
নিজেকে মনে হয় ক্ষুদ্র নগন্য।
যাদবপুর ‘৮ -বি’ বাসস্ট্যান্ড এর সামনে,
মাছি ভন্ ..ভন্ করা আমার লাশ পড়ে থাকে।

ঋত্বিক বন্দ্যোপাধ্যায়

ঋত্বিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ২১-শে এপ্রিল ১৯৬১, কলকাতার সঙ্গীতমনস্ক বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে। বাবা স্বর্গীয় চিত্তপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায় বিখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পী ভীশ্বদেব চেট্টাপাধ্যায় এর প্রিয় ছাত্র। কাকা পীযূষপ্রসন্ন পণ্ডিত রবিশঙ্করের শিল্পশিক্ষায় দীপ্ত। ১৭ বছর বয়সে নিজেকে স্বাবলম্বী করা ও দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে সমর্পিত করার জন্য ভারতীয় বায়ুসেনায় যোগদান এবং ২১ বছর ধরে এই নিষ্ঠাপালন। ১৯৯৯ সালে বায়ুসেনা থেকে সেবানিবৃত্তির পর আই আই টি খড়্গপুরে যোগদান। ২০০৭ সালে রবীন্দ্রভারতীকে আপন করে নেওয়া এবং নিরাপত্তা সুরক্ষা অধিকারী হিসেবে যোগদান। বর্তমানে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ছাত্রকল্যাণ অধিকারী, Purchase Officer এবং Law Officer এর দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ। শিক্ষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের Security and Disaster Management পাঠ্যক্রমের কো-অর্ডিনেটর এর দায়িত্বপ্রাপ্ত। ২০১৬ -তে আমন্ত্রণমূলক বক্তৃতা প্রদান অক্সফোর্ড এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বাংলাদেশ সময়: ২:৪৫:৪৪   ১৭৩৯ বার পঠিত   #  #  #  #




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সাহিত্য’র আরও খবর


সাধক কবি রামপ্রসাদ সেন: স্বপন চক্রবর্তী
ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা “আমি তো গাঁয়ের মেয়ে ”
৫০ বছরের গৌরব নিয়ে জাবির বাংলা বিভাগ বিশাল ‘সুবর্ণ জয়ন্তী’ উৎসব আয়োজন করেছে
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা- ‘তোমার খোঁজে ‘
অতুলপ্রসাদ সেন: ৩য় (শেষ ) পর্ব-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন;পর্ব ২-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন-স্বপন চক্রবর্তী
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা ” যাবে দাদু ভাই ?”
বাদল দিনে- হাসান মিয়া
ইমাম শিকদারের কবিতা ‘ছোট্ট শিশু’

আর্কাইভ